সৌম্যর সেঞ্চুরি করার রহস্য জানালেন প্রধান নির্বাচক
দীর্ঘদিন রান খরায় ভুগছেন সৌম্য সরকার। এবারের প্রিমিয়ার লিগের তো পুরোটাই। গত ১০ ম্যাচে তার ইনিংসগুলো দেখলেই বোঝা যায় কতটা নিষ্প্রভ সৌম্যর ব্যাট। ০, ১৭, ২, ১, ১৪, ১০, ১২, ২৯, ৪৩, ৩৬ = গত ১০ ইনিংসে সৌম্য সরকারের রান হচ্ছে এগুলো।
এর মধ্যে সর্বোচ্চ ইনিংস হচ্ছে ৪৩ রানের। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আবাহনীর হয়ে মোহামেডানের বিপক্ষে ৪৩ রানের সর্বোচ্চ ইনিংসটি খেলেছিলেন সৌম্য। তার আগে ৩৬ রানের ইনিংসটি খেলেছিলেন প্রাইম ব্যাংকের হয়ে।
এরপর ধারাবাহিকভাবেই সৌম্য সরকারের পারফরম্যান্স ছিল তলানীর দিকে। ব্যাট হাতে রানই পাচ্ছিলেন না তিনি। বিশ্বকাপের দল ঘোষণার আগে তাকে নিয়েই সবচেয়ে বেশি চিন্তায় ছিলেন নির্বাচকরা। তাকে দলে রাখবেন কি রাখবেন না- সে সিদ্ধান্ত নিতেই গলদঘর্ম হতে হয়েছে নির্বাচকদের।
অবশেষে একদম জায়গামত কথা বললো এ বাঁ-হাতি ওপেনারের ব্যাট। লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বিপক্ষে মহা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে আজ খেলেছেন নিজের মত। একদম আস্থা ও আত্মশ্বিাস ভরা ইনিংসটিতে একটি ব্যতিক্রম ছিল। যা ঠিক স্ট্রাইকরেট দেখে বোঝা কঠিন। চোখে না দেখে বিচার ও মূল্যায়ন করা কঠিন। আজ সৌম্যর স্ট্রাইকরেট ১৩৪.১৭।
এটা দেখে মনে হতেই পারে সৌম্য বুঝি নিজের মত ইচ্ছেমত আক্রমণাত্মক শটস খেলেছেন। শুভাশিষ, শহীদ, তাসকিন আর নাবিল সামাদকে বুঝি মুড়ি-মুড়কির মত উড়িয়ে মেরেছেন। হ্যাঁ চার (১৫ টি) ও ছক্কার (দুটি) ফুলঝুড়ি ছিল। তবে সেটা উত্তাল উইলোবাজিতে নয়। তেড়ে-ফুঁড়ে এদিক-ওদিক উড়িয়ে মেরে নয়। যতটা সম্ভব বলের গতি-প্রকৃতি দেখে ও বুঝে।
নিজের নাগালের ভিতরে পাওয়া বলগুলোকে বাতাসে ভাসিয়ে তুলে মারার বদলে ডান পা সামনে নিয়ে যতটা সম্ভব সোজা ব্যাটে খেলেছেন সৌম্য। গুড ও ফুললেন্থ বলকে অনসাইডে তুলে মারার বদলে মিড অফ ও কভার-এক্সট্রা কভারের পাশ দিয়ে চালিয়েছেন বেশি।
মোটকথা, ক্রস ব্যাটে খেলার প্রবণতা ছিল খুব কম। তারচেয়ে বড় কথা, উড়িয়ে মেরে খেলার চেষ্টা করেননি। উত্তাল উইলোবাজি করার ইচ্ছেটাই ছিল কম। আর শুরুতে অফ স্ট্যাম্পের আশপাশের বলও খেলেছেন খুব সতর্ক ও সাবধানে।
প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু এবং প্রধান কোচ স্টিভ রোডস ওই ইনিংস দেখেছেন পাখির চোখে। তার চোখে, মুখে ও কন্ঠে সন্তুষ্টির ছাপ। তাৎক্ষণিকভাবে জাগো নিউজের সাথে আলাপে নান্নু জানালেন সৌম্যর রানে ফেরার রহস্য।
তিনি বলেন, ‘সৌম্য সামনের পায়ে গিয়ে একটু ক্রস খেলতো। যে বলটা সোজা ব্যাটে মিড অফে খেলা যায়, সেটা সে টেনে অন সাইডে মারার চেষ্টা করতো। এবার এ কারণেই সে লিগে অনেকগুলো ম্যাচে আউট হয়েছে। কোচ স্টিভ রোডস আর আমরা- সকাল থেকে অপেক্ষায় ছিলাম, আজ সৌম্য কোন টেকনিকে খেলে। শুধু রান করেছে বলে বলছি না, আজকে সে অনসাইডে ক্রস ব্যাটে খেলার চেষ্টা করেছে কম। বেশির ভাগ বল বোলারের ডান বা পাশ দিয়ে সোজা ব্যাটে টাচ করেছে। যে কারণে রান পেয়েছে বলে আমার বিশ্বাস।’
এআরবি/আইএইচএস/এমএস