বামহাতি-ডানহাতি কম্বিনেশনের জন্যই বাদ পড়লেন ইমরুল!
কয়েকদিন আগেই আগাম বিশ্বকাপ দলের একটা ধারণা দিয়েছিলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। সেখান থেকে ১৫ জনের মোটামুটি একটা ধারণা দেয়া হয়েছিল। যেখানে ছিল না ওপেনার ইমরুল কায়েসের নাম। শেষ পর্যন্ত আজ প্রধান নির্বাচক কর্তৃক ঘোষিত বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দলেও দেখা গেলো পাপনের দেয়া সেই ধারণারই প্রতিচ্ছবি। অর্থ্যাৎ, ইমরুল কায়েসকে বাদ দিয়েই ঘোষণা করা হলো বিশ্বকাপ দল।
পাপনের ধারণা দেয়া সেই দলে যখন ইমরুল কায়েসের নাম ছিল না, তখন থেকেই এ নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা। তামিম ইকবালের সঙ্গী হিসেবে ওপেনিংয়ে এখনও কোনো ভালো ব্যাটসম্যানের সন্ধান পায়নি বাংলাদেশ। সময়ের তুলনামূলক সেরা জনকেই সুযোগ দেয়া হয় প্রতিটি সিরিজে।
তবুও, তামিমের সঙ্গে ইমরুল কায়েসের রসায়নটা বেশ ভালো। এই জুটি জমেও বেশ। অনেক ম্যাচেই দু’জনের ভালো জুটি গড়ে তোলার নজির রয়েছে। ইমরুলের একার ক্ষেত্রে ম্যাচ বের করে আনার অনেক নজির আছে। ২০১১, ২০১৫ বিশ্বকাপ এবং ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে ছিলেন ইমরুল কায়েস। অথচ, এবার এসে বিশ্বকাপের দল থেকে কি না বাদ পড়লেন তিনি।
বিশ্বকাপের দল তৈরি প্রসঙ্গে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু বলেন, ‘যেহেতু ইংল্যান্ডে বিশ্বকাপ হচ্ছে, তাই আমরা অভিজ্ঞতাটাকে একটু বেশি মুল্যায়ন করেছি। এখানের কন্ডিশনটাও আমাদের এখানকার থেকে আলাদা। এক বছর আগে আমরা সেখানে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলে এসেছিলাম। তো সেই অভিজ্ঞতার কথা বিবেচনা করে আমাদের স্কোয়াড সাজানো হয়েছে।’
প্রধান নির্বাচক যখন বললেন অভিজ্ঞতার কথা বিবেচনা করে দল সাজানো হয়েছে, তখন দেখা যাচ্ছে অভিজ্ঞ ইমরুল কায়েসকে বাদ দিয়েই অনভিজ্ঞ মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত কিংবা অফ ফর্মে থাকা সৌম্য সরকারকে দিয়ে দল তৈরি করা হয়েছে।
কেন ইমরুল নেই? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের ব্যাখ্যা প্রধান নির্বাচক যা বললেন, ফর্ম কিংবা ফিটনেস নয়, ইমরুলকে নেয়া হয়নি ডানহাতি-বামহাতি কম্বিনেশন ঠিক রাখার জন্যই। প্রধান নির্বাচকের ব্যাখ্যা, ‘যেহেতু ওপেনিংয়ে তামিমের জায়গা পাকা। তাই তার সঙ্গী হিসেবে একজন ডানহাতিকেই নিতে চায় টিম ম্যানেজমেন্ট।’
মিনহাজুল আবেদীন নান্নু বলেন, ‘আমাদের ২০ জনের যে পুল আছে সেটার মধ্যে সে আছে। টিম ম্যানেজমেন্ট টপ অর্ডারে ডানহাতি এবং বামহাতি ব্যাটসম্যানের একটা কম্বিনেশন চাচ্ছিলেন। সেই বিবেচনা করেই ওকে (ইমরুলকে) অফ করে রাখা হয়েছে।’
দীর্ঘদিন দলকে সার্ভিস দিয়ে আসার পর ডানহাতি-বামহাতি কম্বিনেশনের খোঁড়া যুক্তি তুলে ধরে ইমরুল কায়েসকে বাদ দেয়াটাই এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় তুমুল সমালোচনার ঝড় তুলে দিয়েছে। বিশেষ করে জাতীয় দলের হয়ে যখন লিটন দাস টানা ব্যর্থ এবং সৌম্য সরকার যখন পুরো অফ ফর্মে, তখন অভিজ্ঞ ইমরুল কায়েসের ওপর নির্বাচকরা আস্থা রাখতে পারতো- এমনটাই যুক্তি সবার।
এমনকি আয়ারল্যান্ডের ত্রিদেশীয় সিরিজের জন্যও অতিরিক্ত হিসেবে ইমরুলকে নেয়া হয়নি। সেই দলে নেয়া হলেও বোঝা যেতো, শেষ মুহূর্তেও হয়তো বিশ্বকাপের দলে সুযোগ পেতে পারেন ইমরুল। কিন্তু সেটা না হওয়ায় এখন সব সম্ভাবনাই শেষ।
আইএইচএস/এমএস