সবুজ সংকেত পেলেন মোসাদ্দেক!
আয়ারল্যান্ড সফরের জন্য যে ১৭ জনের দল করার কথা, তাতে মোসাদ্দেক হোসেনের থাকা মোটামুটি নিশ্চিতই ছিল। তবে দেখার বিষয় ছিল, বিশ্বকাপের ১৫ জনের দলে তার জায়গা হয় কিনা। মাঝে চোখের সমস্যা ছিল, ফিরে এসে সেভাবে পারফর্ম করতে পারেননি। মোসাদ্দেকের বিশ্বকাপে যাওয়া নিয়ে তাই বড় ধরণের সংশয়ই তৈরি হয়েছিল। সমালোচনাও বাড়ছিল ধীরে ধীরে।
তবে এবারের লিগে সমালোচকদের সমুচিত জবাব দিয়ে দিয়েছেন মোসাদ্দেক। ধারাবাহিকভাবে প্রায় প্রতি ম্যাচেই পারফর্ম করেছেন। সর্বশেষ সংযোজন বুধবার শেখ জামালের বিপক্ষে সেঞ্চুরি।
আবাহনী তখন ভীষণ বিপদে। ১৪ রানে নেই ৪ উইকেট। সেখান থেকে শুরু করে ইনিংসের শেষ পর্যন্ত একাই লড়ে গেছেন মোসাদ্দেক। দলকে এনে দিয়েছেন ৯ উইকেটে ২১১ রানের মান বাঁচানো পুঁজি। ১৩৯ বল মোকাবেলায় ৬ বাউন্ডারি আর ৩ ছক্কায় তিনি অপরাজিত থাকেন ১০১ রানে।
মোসাদ্দেকের এই লড়াই না হলে আবাহনী কতটুকু যেতে পারতো বলা মুশকিল। ১৪ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর পঞ্চম উইকেটে মোহাম্মদ মিঠুনকে নিয়ে ৬০ রানের জুটি গড়েছিলেন মোসাদ্দেক। কিন্তু মিঠুনও আউট হয়ে যান ৩৩ করে। ৮ রানে সাজঘরের পথ ধরেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।
এরপর মাশরাফি বিন মর্তুজাকে সঙ্গে নিয়ে সপ্তম উইকেটে ৫০ আর আবদুল্লাহ আল মামুনকে নিয়ে অষ্টম উইকেটে ৫৭ রানের আরও দুটি জুটি গড়েন মোসাদ্দেক। অধিনায়ক হিসেবে যতটা করা দরকার ঠিক ততটাই দায়িত্ব নিয়ে খেলেন।
বিপদের মুখে দাঁড়িয়ে এমন লড়াই। আসলেই তো নজরে আসার মতো। নির্বাচকদের নজরে সেটা বেশ ভালোভাবেই আসবে। শুধু এই ইনিংস নয়, এবারের প্রিমিয়ার লিগে প্রায় প্রতি ম্যাচে মোসাদ্দেকের পারফরম্যান্স আলাদাভাবেই ভাবাবে নির্বাচকদের।
গত ম্যাচেও লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বিপক্ষে আবাহনী যখন ১২২ রানে গুটিয়ে গেল, মোসাদ্দেকের উইলো থেকে বেরিয়ে এসেছিল হার না মানা ৪০ রানের ইনিংস। এর আগের আট ইনিংসে চারটিতেই ফিফটি। সবমিলিয়ে ৫৩.৫০ গড়ে টুর্নামেন্টের নবম সর্বোচ্চ ৪২৮ রান করেছেন তিনি। বল হাতে উইকেটও পেয়েছেন ৭টি।
বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আবাহনীকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে এমন পারফরম্যান্স করার পর বিশ্বকাপের দলে মোসাদ্দেকের জায়গা নিশ্চিত হয়ে গেছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু জাগোনিউজকে জানিয়েছেন এ তথ্য।
বিশ্বকাপে ছয়-সাত নম্বর পজিশনের জন্য যেমন পারফরম্যান খুঁজছিলেন নির্বাচকরা, চলতি ডিপিএলে ব্যাটে-বলে ঠিক তেমনই করেছেন মোসাদ্দেক। দায়িত্বশীল ব্যাটিং ও কার্যকরী বোলিংয়ের মিশেলে বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিতই বলা চলে মোসাদ্দেকের।
আজ সকালে জাগোনিউজের সঙ্গে মুঠোফোন আলাপে নান্নু বলেন, ‘হ্যাঁ! মোসাদ্দেকের বিশ্বকাপে খেলা প্রায় নিশ্চিত ধরে নিতে পারেন। আমরা যেমন চাচ্ছিলাম, ডিপিএলে ঠিক তেমনই পারফরম্যান্স করেছে মোসাদ্দেক। এখনো পর্যন্ত তার ব্যাপারে সবাই ইতিবাচক। বিশ্বকাপ দল ঘোষণার আগে আলোচনা করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
এদিকে মোসাদ্দেকের ব্যাপারে নির্বাচকদের সবুজ সংকেত মিললেও, দুই তারকা ক্রিকেটার সৌম্য সরকার এবং তাসকিন আহমেদের ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত নয় বিসিবি। জাগো নিউজকে প্রধান নির্বাচক বলেই ফেলেছেন, ‘লিটন আর সৌম্য কারোরই ফর্ম তেমন ভালো না। লিটন তবু একটি বড় ইনিংস খেলেছে। আর দুটি ম্যাচে তিরিশের আশাপাশে পৌঁছেছে। সৌম্য তো কিছুই করতে পারেনি।’
এআরবি/এসএএস/জেআইএম