আফতাবের কল্পনায়ও ছিল না, এত ভালো খেলবেন তারা
আবাহনীর সামনে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ কি করে সেটাই ছিল সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে। মোহামেডান, প্রাইম ব্যাংক, শেখ জামাল- এসব দলকে হারানোর পর রূপগঞ্জের লিজেন্ডসরা আবাহনীকে হারাতে পারবে কি না সেটাই ছিল দেখার বিষয়।
মিরপুরের শেরে বাংলায় সবার আগ্রহকে পূর্ণতা দিয়েছে আফতাব আহমেদের শিষ্যরা। লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের হাতে মাত্র ১২২ রানেই অলআউট হয়ে যায় ঢাকা লিগে দুর্দমনীয় গতিতে এগিয়ে চলা আবাহনী। ফল স্বরূপ হেসে-খেলে অনায়াসে জয় লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ এবং আবাহনীকে পেছনে ফেলে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে তারা।
যে গতিতে এগিয়ে চলছে রূপগঞ্জের দলটি, তাতে লিগ শেষে তাদের হাতে যদি শিরোপা উঠে যায়, তাতে অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না। অথচ, এবারই প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করছেন জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার আফতাব আহমদ। প্রথমবার এসেই অসাধারণ সাফল্যকে সঙ্গী করে নিয়েছেন তিনি।
এ সাফল্যের পেছনের রহস্য কি? জানতে চাওয়া হলো রূপগঞ্জের প্রধান কোচের কাছে। বিনয়ী আফতাবের নিজের মুখ থেকেই শুনুন জবাব, ‘আসলে আমি দুই বছর মোহামেডানের সহকারি কোচের দায়িত্বে ছিলাম। এবার রূপগঞ্জের কাছ থেকে প্রথম প্রধান কোচের দায়িত্ব পাই। কারণ, আমি কোচিংকে ক্যারিয়ার হিসেবে গড়তে চাই। এখন কোচিংয়ে উন্নতি ঘটাতে হলে একটা দলের প্রধান প্রশিক্ষক হতে হবে। ভাল প্লাটফর্ম লাগবে। আমি তাই রূপগঞ্জের প্রস্তাবটা সানন্দে গ্রহণ করি। তারপর প্লেয়ার্স ড্রাফটে প্রথমবার টেবিলে বসে দল সাজানোর কাজেও অংশ নেই। চেষ্টা করেছি বিভিন্ন পজিসনে ভাল প্লেয়ার নিতে। ব্যাকআপ পারফরমারও রেখেছি কিছু।’
কিন্তু দল তো খুব একটা আহামরি হয়নি। দল বদলের পর আপনার নিজের দলকে কোন অবস্থানে মনে হচ্ছিল? জানতে চাইলে আফতাব বলেন, ‘হ্যাঁ, আহামরি দল হয়নি। আমার চোখে রূপগঞ্জ ছিল চার নম্বর দল। আবার কেউ কেউ পাঁচ-ছয় নম্বর দলও বলেছিলেন।’
সেই দল মাঠে এত ভাল খেলে ১০ ম্যাচের ৯টিতে জিতলো কিভাবে? প্রথম লিগে সবার ওপরেও উঠে আসলো, আপনি কি এতটা ভেবেছিলেন?
আফতাবের সহজ সরল স্বীকারোক্তি, ‘না, না। প্রশ্নই আসে না। আমি কল্পনাও করিনি আমরা এত ভাল খেলবো এবং টপে উঠে আসবো।’
এ সাফল্যে আপনার ভূমিকা কি? আপনার কাজটি আসলে কি ছিল এখানে? আফতাবের জবাব, ‘আমি আহামরি কিছু করিনি। যা করার ক্রিকেটাররাই করেছে। তারা মাঠে ভাল পারফরম করেছে বলেই না দল শীর্ষে। তবে আমি দায়িত্ব পেয়ে প্রথম থেকেই চিন্তা-ভাবনা করে আগানোর চেষ্টা করেছি। কারো ওপরে কোন বাড়তি কিছু চাপানোর চেষ্টা করিনি। চেয়েছি সবার সাথে মেলবন্ধন। মাঠে যেন পুরো দলকে একটা পরিবার মনে হয়। সবাই একাট্রা হয়ে দলের জন্য খেলে। আমার মনে হয় এখন পর্যন্ত ছেলেরা তা করেও দেখিয়েছে।’
নিজেদের টিম পারফরম্যান্সের কথা উল্লেখ করে আফতাব বলেন, ‘আমাদের টিম পারফরমেন্স ভাল। একটা ডিসিপ্লিন্ড দল হিসেবে মাঠে পারফরম করছে। আমার মতে কেউ আহামরি ও খুব ভাল পারফরম না করলেও গড়পড়তা এবং কার্যকর পারফরমেন্স হচ্ছে। মানে প্রায় খেলাতেই সবাই কিছু না কিছু করছে। দলে সবার অবদান থাকছে। সেটাই আসলে সাফল্যের মূল।’
জিতলেও সন্তুষ্ট নন আফতাব। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই টসটা তো ভাইটাল হয়েছেই। তারপরও আমাদের অ্যাপ্লিকেশন ওয়াজ নট আপ টু স্ট্যাণ্ডার্ড। আবাহনী যে রকম ব্যাটিং সাইড, সে হিসেবে আরও ভালো হওয়ার উচিত ছিল। আমরা হয়তো আজ ২৮০ করতে পারতাম। ২২০-২৩০ হলেও ফাইট করা যেত। সবচেয়ে বড় ডিসগ্রেস হল, আমরা এই ব্যাটিং লাইন আপ নিয়ে ৫০ ওভার ব্যাট করতে না পারা। আজ আমরা ২৪০ করেও হারতে পারতাম, ক্রিকেট খেলায় হারতেই পারি। কিন্তু ৫০ ওভার ব্যাট করতে পারিনি, এটা আমাদের জন্য বড় বিষয়।’
এআরবি/আইএইচএস/জেআইএম