অবসর ভাবনা থেকে স্বপ্নের বিশ্বকাপ দলে
ইনজুরির সঙ্গে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে আর পারছিলেন না নিউজিল্যান্ডের পেস বোলিং অলরাউন্ডার জিমি নিশাম। একের পর এক ইনজুরিতে অতিষ্ঠ হয়ে প্রায় দেড় বছর আগে ভেবেছিলেন ক্রিকেট খেলাই ছেড়ে দেবেন। ভালোবাসাটাও হারিয়ে ফেলেছিলেন ক্রিকেটের প্রতি।
ভাগ্যিস তখন ক্রিকেট ছাড়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছিলেন ২৮ বছর বয়সী এ অলরাউন্ডার। কেননা অসহ্যকর সে সময় পেরিয়ে দেড় বছর পর সেই নিশাম এখন জায়গা পেয়েছেন নিউজিল্যান্ডের বিশ্বকাপ স্কোয়াডে। স্বপ্নপূরণ হতে চলেছে অকল্যান্ডের এ ক্রিকেটারের।
২০১৫ সালে ঘরের মাঠে হওয়া বিশ্বকাপে অল্পের জন্য সুযোগ পাননি নিশাম। তাকে পেছনে ফেলে শেষ মুহূর্তে স্কোয়াডে ঢুকে যান অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার গ্র্যান্ট এলিয়ট। তবে বিশ্বকাপের পর টানা দুই বছর নিউজিল্যান্ড দলের নিয়মিত সদস্য ছিলেন নিশাম।
কিন্তু ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির পর বাদ পরে যান ইনজুরির কারণে। তবু দলে ফিরতে দৃঢ় প্রত্যয়ী ছিলেন নিশাম, কঠোর পরিশ্রম করছিলেন দলে নিজের জায়গা ফিরে পেতে। কিন্তু এক্ষেত্রে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় ইনজুরি। বারবার ইনজুরির আঘাতে ফর্মটাও ধরে রাখতে ব্যর্থ হন তিনি। ফলে জাতীয় দলেও হয়ে পড়েন অনিয়মিত।
ঠিক তখনই তার মাথায় আসে ক্রিকেট ছেড়ে দেয়ার ভাবনা। নিউজিল্যান্ডের প্লেয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান নির্বাহী হিথ মিলসের সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনাও করেন নিশাম। এ ব্যাপারে সংবাদ মাধ্যমে নিশাম বলেন, ‘আমার অবসরের বিষয়টি একদম শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চলে গিয়েছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি হিথ মিলসের সঙ্গে আলোচনায় বসি। তাকে জানাই যে আমি আর খেলাটা চালিয়ে নিতে চাচ্ছি না। এখন আমি তার প্রতি অনেক বেশি কৃতজ্ঞ। কারণ সে-ই আমাকে বুঝিয়েছে তখন প্রয়োজনে বিরতি নিয়ে, পরে আবার নতুন উদ্যমে শুরু করতে। সেখান থেকেই মূলত আমি ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে আগাই। ওয়েলিংটন টেস্টের মধ্য দিয়ে দলে ফিরি এবং এখন জায়গা পেলাম বিশ্বকাপের স্কোয়াডে।’
এসময় অবসরের ভাবনা মাথায় আসার কারণ জানিয়ে নিশাম বলেন, ‘আমি নিজের ওপর অনেক বেশি চাপ নিয়ে ফেলছিলাম। যখন গত মৌসুমের শুরুতেই দল থেকে বাদ পড়লাম, তখন সফল হওয়ার জন্য খুব বেশি চাপ প্রয়োগ করছিলাম নিজের ওপর। যার শুরুটা করতে চেয়েছিলাম ঘরোয়া ক্রিকেটের মধ্য দিয়েই।’
‘তবে যখন কোনোকিছু নিচের দিকে যেতে থাকে তখন আপনি ব্যাট হাতে রান পাবেন না, বল হাতে উইকেট পাবেন এবং পরিশ্রমের মাত্রা বাড়িয় দিয়েও কোনো ফায়দা পাবেন না। তখন একটা সময় আসবে যখন মনে হবে আর পারবেন না। আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি যে তখন ছোট একটা বিরতি নেয়ায় আমার কাজ সহজ হয়েছে। যার পর থেকে আমি এখন এই পর্যায়ে’- আরও বলেন নিশাম।
২০১৫ সালের বিশ্বকাপের স্কোয়াডে নিশামের প্রতিদ্বন্দ্বী যেমন ছিলেন পেস বোলিং অলরাউন্ডার গ্র্যান্ট এলিয়ট। এবারের স্কোয়াডেও তার সঙ্গে লড়াই চলছিলো আরেক পেস বোলিং অলরাউন্ডার কোরি অ্যান্ডারসনের। তবে শেষমেশ নিশামের প্রতিই আস্থা রেখেছে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড। তাই তো অবসরের ভাবনা থেকে সরে আসা নিশাম এবার প্রথমবারের মত খেলতে নামবেন ক্রিকেটের বিশ্ব আসরে।
নিউজিল্যান্ডের বিশ্বকাপ স্কোয়াড
কেন উইলিয়ামসন (অধিনায়ক), মার্টিন গাপটিল, হেনরি নিকোলস, রস টেলর, টম লাথাম, কলিন মুনরো, টম ব্লান্ডেল, জিমি নিশাম, কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম, মিচেল স্যান্টনার, ইশ সোধি, টিম সাউদি, ম্যাট হেনরি, লকি ফার্গুসন, ট্রেন্ট বোল্ট।
এসএএস/এমকেএইচ