‘বিশ্বকাপ’ অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে মোসাদ্দেককে
জাতীয় দলের উদীয়মান তারকা। ঘরোয়া ক্রিকেটে দুর্দান্ত পারফর্ম করেই তবে জাতীয় দলে ডাক পেয়েছিলেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। মাঝে কিছু পারিবারিক ঝামেলার কারণে, কিছুটা ব্যাকফুটে চলে যেতে হয়েছে তাকে। তার ওপর ছিল চোখের ইনজুরি। সব মিলিয়ে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের মত উদীয়মান ক্রিকেটারের একটা খারাপ সময়ই বয়ে গেলো বলতে হয়।
সেই মোসাদ্দেক আবারও লাইমলাইটে। সৌজন্যে অবশ্যই ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ। যে দলে মাশরাফির মত ক্রিকেটার রয়েছেন, সেই আবাহনী লিমিটেডকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতই। শুধু নেতৃত্ব দেয়াই নয়, দুর্দান্ত পারফর্ম করে আবাহনীকে সামনে থেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার গুরু দায়িত্বও পালন করছেন তিনি।
এরই মধ্যে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা নিয়ে বিভিন্ন আলোচনায় উঠে এসেছে মোসাদ্দেকের নাম। এমনকি কিছুদিন আগে সাংবাদিকদের সামনে উপস্থিত হয়ে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও মোসাদ্দেকের সম্ভাবনার কথা বলে গেলেন। নির্বাচক কিংবা বিসিবির কোনো কোনো কর্মকর্তার মুখেও শোনা যাচ্ছে, বিশ্বকাপের দলে মোসাদ্দেকের থাকার সম্ভাবনা।
বিষয়গুলো যখন মোসাদ্দেকের কানে যায়, তখন সেটা তার জন্য হয়ে যাচ্ছে অনেক বড় অনুপ্রেরণাদায়ক। সে কথাই আজ তিনি জানালেন সাংবাদিকদের কাছে। প্রাইম দোলেশ্বরের বিপক্ষে মহা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে কথা বলতে গিয়ে মোসাদ্দেক মুখোমুখি হলেন বিশ্বকাপ সম্পর্কিত প্রশ্নের।
সেখানে তাকে বলা হয়, ‘আপনি দলে নাই অনেকদিন, তবুও অধিনায়ক, বিসিবি প্রধানরা বিশ্বকাপের জন্য আপনার কথা বলছে। বিষয়টা কিভাবে দেখছেন?
মোসাদ্দেক বলেন, ‘এটা আসলে আমার জন্য অনুপ্রেরণাদায়ক, এখন একটা আভাস পাচ্ছি। তখনই সত্যি হবে, যখন এটা পুরোপুরি ঘোষণা করা হবে। ঘোষণা যতক্ষণ না হচ্ছে... (ততক্ষণ আশায় থাকি)। ঘোষণা হলেও আমার কাজ হচ্ছে পারফর্ম করা। আমি প্রিমিয়ার লিগ খেলছি, আমার কাজ হচ্ছে পারফর্ম করে যাওয়া। বাকিটা আল্লাহ ভরসা। আমি নিজেও জানি না কি হবে। তবে এটা খুবই অনুপ্রেরণার বিষয়, উনাদের নজরে আমি আছি। আগেও বলেছিলাম, অন্যদের থেকে আমরা পারফর্ম করলে একটু এগিয়ে থাকব।’
মোসাদ্দেককে এমন একটা পজিশনে খেলতে হয়, যখন তার সামনে ম্যাচ ফিনিশিংয়ের বিষয়টাই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। নিজেকে ফিনিশার ভাবতে, বা ফিনিশার মোসাদ্দেক সম্পর্কে তিনি নিজে কি বলবেন?
মোসাদ্দেকের জবাব, ‘আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যত ম্যাচ খেলেছি, সবসময়ই এই দায়িত্বই পালন করতে হয়েছে। হয়তো কিছু সময় হয়েছে, আবার কিছু সময় হয়নি। আমিও খুব ভালো করে জানি, আমার কাজটা ফিনিশিংয়ের দিকে। আমি এই জিনিসটা যত দ্রুত ধরতে পারব, আমার জন্য ততই লাভ। প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচেও সেটা চেষ্টা করছি।’
বোলিংয়েও বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন মোসাদ্দেক। মাঝে মাঝে বেশ কার্যকরি বোলিংও করেন দলের প্রয়োজনে। তার কাছে এ সম্পর্কে জানতে চাইলে মোসাদ্দেক বলেন, ‘আমি আসলে যেখানেই খেলছি, সেখানেই বোলিংয়ে আমার টুকটাক কন্ট্রিবিউশন আছে। এর আগে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে আমি একটা ম্যাচে তিন উইকেট পেয়েছিলাম। ওই ম্যাচটায় টার্নিং পয়েন্ট ছিল সেটি। আমি যখন বোলিং করি, চেষ্টা করি ইকনমিটা ঠিক রাখার। আমি জানি একটা ম্যাচে হয়তো আমাকে ৫-৬ ওভার বোলিং করা লাগতে পারে। এ কারণে বোলিংয়ের সময় নিজেকে একজন বোলার হিসেবেই চিন্তা করি।’
প্রিমিয়ার লিগে আবাহনী কি চ্যাম্পিয়ন হতে পারবে? কি মনে হয় অধিনায়ক মোসাদ্দেকের? তিনি বলেন, ‘চ্যাম্পিয়নশিপের দৌড়ের কথা যদি বলেন, তাহলে এখানে প্রাইম ব্যাংকও আছে। প্রাইম ব্যাংক একটা ম্যাচ হয়তো হেরে গেছে, সবার থেকে হয়তো আমরা একটা ম্যাচ বেশি জিতেছি। আমার কাছে মনে হয়, দল হিসেবে কে চ্যাম্পিয়ন হতে পারে বা না পারে, সেটা চিন্তা না করে প্রতি ম্যাচ জেতার জন্য চিন্তা করি, তাহলে আমাদের জন্য কাজ সহজ হয়ে যাবে।’
বিশ্বকাপের দল নির্বাচনে ঢাকা লিগ কোনো ভুমিকাই রাখবে না বলে মন্তব্য করেছেন মাশরাফি। এ বিষয়টা নিয়ে মোসাদ্দেকের বক্তব্য জানতে চাইলে কুটনৈতিক ভঙ্গিতেই এড়িয়ে যান তিনি, ‘আসলে এখানে স্কিলের প্রস্তুতির চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনস্তাত্ত্বিক প্রস্তুতি। আমি যদি মানসিকভাবে ঠিক থাকি..., আমার মোটামুটি একটা ধারনা আছে সেখানে কন্ডিশন কি রকম হবে। আমি ওটার ওপর ফোকাস করেই এখানে কিছু প্র্যাকটিসের চেষ্টা করছি।’
আইএইচএস/পিআর