২৫ মার্চ : অপির ইতিহাস, বাংলাদেশের মাইলফলক
ততদিনে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৩ বছর কাটিয়ে ফেলেছে বাংলাদেশ, খেলে ফেলেছে ২৯টি আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ম্যাচ। পাওয়া হয়েছে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ জয়ের স্বাদও। তবু ছিলো একটি অপূর্ণতা। কোনো ব্যাটসম্যান যে পেরুতে পারেননি তিন অঙ্কের ঘর, করতে পারেননি সেঞ্চুরি। এ অপ্রাপ্তি মিটেছিল আজ থেকে ঠিক ২০ বছর আগে।
সে ঘটনার পরেও অতিবাহিত হয়ে যায় আরো ৭ বছর। বাংলাদেশ দল ১৮টি দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলে পেয়ে গিয়েছে প্রথম সিরিজের জয়ের স্বাদ। কিন্তু কোনো দলকে হোয়াইটওয়াশ করা হয়নি টাইগারদের। এই অপ্রাপ্তিটিও মিটেছিল আজ থেকে ঠিক ১৩ বছর আগে।
১৯৯৯ সালের ২৫ মার্চ তারিখে বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম সেঞ্চুরি হাঁকান মেহরাব হোসেন অপি। এর সাত বছর পর ২০০৬ সালে কেনিয়াকে ৪-০ ব্যবধানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো কোনো দলকে হোয়াইটওয়াশ করার স্বাদ পায় টাইগাররা।
বিশ বছর আগে অপির ইতিহাস
সে বছর ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের আগে কেনিয়া ও জিম্বাবুয়েকে নিয়ে মেরিল ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আয়োজন করে বাংলাদেশ। সে টুর্নামেন্টের সবগুলো ম্যাচে হারলেও শেষ ম্যাচে ইতিহাস গড়েন মেহরাব হোসেন অপি।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচে টসে জিতে আগে ব্যাট করে বাংলাদেশ। উদ্বোধনী জুটিতে ১৭০ রান যোগ করেন দুই ওপেনার শাহরিয়ার হোসেন বিদ্যুৎ এবং মেহরাব অপি। যা এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম উইকেটের সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ড।
বিদ্যুৎ ৬৮ রান করে সাজঘরে ফিরে গেলেও দেশের ইতিহাসের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান হওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করেননি অপি। প্রায় তিন ঘণ্টা ও চল্লিশ ওভারের বেশি উইকেটে থেকে ১১৬ বলে ১০১ রান করেন তিনি। ৯ চারের সঙ্গে ২ ছক্কার মারে সাজান ইনিংস। বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম ওয়ানডে তথা আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরির রেকর্ডই এটি।
তেরো বছর আগে হোয়াইটওয়াশের প্রথম স্বাদ
চার ম্যাচ সিরিজের প্রথম তিনটি জিতে আগেই সিরিজ নিশ্চিত করেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। চতুর্থ ম্যাচটি ছিলো ঢাকার অদূরে ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলি স্টেডিয়ামে। সে মাঠের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ ছিলো এটি। আর নিজের প্রথম ম্যাচেই বাংলাদেশের ইতিহাসের অংশ হয়ে গিয়েছে ফতুল্লার মাঠটি।
সিরিজের শেষ ম্যাচে আগে ব্যাট করে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৩২ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় কেনিয়া। অধিনায়ক স্টিভ টিকোলো খেলেন ৮১ রানের ইনিংস। প্রায় আড়াইশ ছুঁইছুঁই সংগ্রহ পাওয়ায় কেনিয়ানদের মনে ছিল সান্ত্বনার জয় পাওয়ার আশা।
সে লক্ষ্যে বাংলাদেশের ইনিংসের ৬২ রানের মধ্যেই ৩ ব্যাটসম্যানকে সাজঘরে পাঠিয়ে দেয় কেনিয়া। চতুর্থ উইকেটে জুটি বাঁধেন ওপেনার রাজিন সালেহ এবং অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমন। দুজন মিলে বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গড়েন ১৭৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি। ৫১ বল হাতে রেখেই ৭ উইকেটের সহজ জয় পায় বাংলাদেশ।
নিজের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম ও একমাত্র সেঞ্চুরি করেন রাজিন সালেহ। অপরাজিত থাকেন ১১৩ বলে ১০৮ রান করে। অধিনায়ক বাশারের ব্যাট থেকে আসে ৮৮ বলে ৬৪ রানের ইনিংস। দুজনের ১৭৫ রানের জুটিটি এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশের পক্ষে চতুর্থ উইকেটের সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ড।
এসএএস/এমকেএইচ