লিটনের আক্ষেপ : আরেকটু ভালো খেলা যেতো
নেইল ওয়াগনার। বেসিন রিজার্ভে তাকে নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক বোলিংয়ে এনেছিলেন ৫ নম্বর বোলার হিসেবে। ততক্ষণে তামিম আর সাদমান মিলে ৭৫ রানের জুটিও গড়ে ফেলেছেন। কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম শুরুর আঘাতটা হানেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের ওপর।
সূচনাটা গ্র্যান্ডহোম করলেও ধারাবাহিকতা টেনে নিয়ে যান নেইল ওয়াগনার। শুধু টেনে নিয়ে যাওয়াই নয়, বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের সামনে রীতিমত আতঙ্ক হিসেবে আবির্ভূত হন তিনি। ৭৪ রান করা তামিম ইকবাল থেকে শুরু করে বাংলাদেশের টপ অর্ডার ভেঙে চুরমার করে দেন তিনি।
তামিম, মুমিনুল, মিঠুন এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদেরমত গুরুত্বপূর্ণ চারটি উইকেট জমা পড়ে ওয়াগনারের পকেটে। মাত্র ১৩ ওভার বল করে ৪ মেডেন এবং ২৮ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন ওয়াগনার। তাকে সামালাতে না পারার কারণেই মূলতঃ ওপেনিং জুটিতে ৭৫ ওঠার পরও বাংলাদেশ শেষ হয়ে যায় ২১১ রানে।
দিন শেষে মিডিয়ার সামনে কথা বলতে আসে চিরাচরিত রূপেই আফসোস করতে শোনা গেলো বাংলাদেশ দলের উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান লিটন কুমার দাস। যিনি নিজে ছিলেন দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। ৪৯ বলে ৩৩ রান করে আউট হন তিনি। লিটন আউট হওয়ার পরই ব্যাটিংয়ের বাকি অংশ হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে।
দিন শেষে মিডিয়াকে লিটন দাস বলেন, ‘আরেকটু ভালো করা যেত। ব্যাটসম্যানরা আরেকটু মনোযোগ দিয়ে খেললে আরেকটু ভালো হতো। শুরুটা খুব ভালো ছিল। যেমন শুরু ছিল আরেকটু ভালো করা যেত। ব্যাটসম্যানেরা আরেকটু মনোযোগ খেললে হয়তো বা আরেকটু ভালো হতো।’
বৃষ্টির কারণে প্রথম দুইদিন খেলাই হয়নি। উইকেট ছিল ঢাকা। এর মধ্যে খেলা শুরু হলে সেখানে ব্যাট করা যতটা কঠিন মনে হয়েছে আসলে ততটা ছিল না? লিটন উদাহরণ টানলেন তামিমের ইনিংসের, ‘কন্ডিশন তো একটু বোলারদের পক্ষেই ছিল। এমন সবুজ উইকেটে এমন আবহাওয়ার মধ্যে বোলাররা একটু সাহায্য পাবেই; কিন্তু ব্যাট করার সময় মনোযোগটা বেশি থাকলে সফল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। যেমন তামিম ভাই অনেকক্ষণ মনোযোগ নিয়ে খেলেছেন।’
ওয়াগনারের শট বলেই ভুগতে হয়েছে বেশি বাংলাদেশকে। সেই বলগুলো একটু রয়ে-সয়ে খেললেই এত বড় সমস্যার মধ্যে পড়তে হতো না। লিটন বলেন, ‘আমরা জানতাম যে, এখানে শট বল হবেই। এবং সত্যি কথা, এখানে আমরা সেই শট বল নিয়ে কিছুই করতে পারিনি।’
কিভাবে ওয়াগনারকে মোকাবেলা করা যেতো? লিটন পরামর্শ দিচ্ছেন, ‘তাকে মোকাবেলা করার একমাত্র পন্থা হচ্ছে, আমাদের সমস্ত মনযোগ দিয়ে তাকে মোকাবেলা করা। আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকার দরকার ছিল, তার ডেলিভারিগুলোতে যথাসম্ভব ছেড়ে দেয়া। তাহলে হয়তো তার বিপক্ষে আমরা আরও সফল হতে পারতাম।’
ব্যাটিং ভালো না হলেও দিন শেষে বোলাররা দুই উইকেট নিয়েছে কিউইদের। লিটন সেখানেই ভালো দিক দেখছেন। তিনি বলেন, ‘দিনের শেষে যেটা বলব দুটো উইকেট নিয়েছি, এটাও একটা ভালো দিক। এখনো আবহাওয়া অনেক সাহায্য করছে, উইকেটও সাহায্য করছে (বোলারদের)।’
ওয়েলিংটনের ভারী বাতাস লিটনের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা। তিনি বলেন, ‘আমি তো কখনো এমন আবহাওয়ার মধ্যে খেলিনি। অনেক চ্যালেঞ্জিং ছিল। কঠিন ছিল। আমার মনে হয় অনেক খেলোয়াড়ের জন্যই কঠিন ছিল।’
ওয়েলিংটনের বেসিন রিজার্ভের উইকেটে ব্যাটিংয়েল অভিজ্ঞতা নিয়ে লিটন বলেন, ‘উইকেট দুই পক্ষের (ব্যাটসম্যান ও বোলার) জন্যই সমান ছিল। বলব না যে শুধু বোলারদেরই সাহায্য করেছে। মনোযোগ দিয়ে ব্যাট করলে সফল হওয়ার সুযোগ থাকত। এবং এটি কালও থাকবে পরশু-ও থাকবে।’
আইএইচএস/পিআর