পাকিস্তান নিয়ে ভারতের দাবি মেনে নিলো না আইসিসি
অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাহলে বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ খেলতে নামতে হচ্ছে ভারতকে? পাকিস্তানের সঙ্গে কোনোরকম সম্পর্ক না রাখার জন্য আইসিসিকে অনুরোধ জানিয়েছিল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। কিন্তু সেই অনুরোধ কিংবা দাবি কোনোটাই রাখলেন না আইসিসি চেয়ারম্যান শশাঙ্ক মনোহর। যিনি কি না সাবেক বিসিসিআই প্রেসিডেন্টও।
বিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে আইসিসিকে জানানো হয়েছিল, ‘যে দেশে সন্ত্রাসের লালন হয়, সে দেশের সঙ্গে সম্পর্ক রাখাটা সমস্যার।’ বিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে আইসিসির কাছে লেখা সেই চিঠিতে সরাসরি পাকিস্তানের নাম লেখা হয়নি। কিন্তু আকারে-ইঙ্গিতে জানিয়ে দেয়া হয়েছে, তারা পাকিস্তানের কথাই বলতে চাচ্ছে।
ইএসপিএন-ক্রিকইনফো জানিয়েছে, আইসিসির বৈঠকে শনিবার সংস্থাটির চেয়ারম্যান শশাঙ্ক মনোহর জানিয়ে দেন, ভারতের আবেদন মানা সম্ভব নয়। কারণ, তারা যে দাবি জানিয়েছে, সে ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার আইসিসির নেই। কিংবা এ ধরনের কোনো দাবি মানার সঠিক সংগঠন আইসিসি নয়।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কাশ্মীরের পুলওয়ামায় এক আত্মঘাতি সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হয়েছেন ভারতের আধা-সামরিক বাহিনী সিআরপিএফের ৪৫ জনেরও বেশি জওয়ান। এরপরই পাকিস্তানের সঙ্গে সব ধরনের ক্রিকেট এবং ক্রীড়া সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবি ওঠে ভারতজুড়ে। শুধু তাই নয়, আগামী বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটিও বয়কট করার আহ্বান জানানো হয় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআইয়ের কাছে।
কিন্তু নিজেরা সেই ম্যাচ বয়কটের সিদ্ধান্ত না নিয়ে উল্টো আইসিসিকে চিঠি লিখে বিসিসিআই তাদের মতামত জানায় এবং একই সঙ্গে পাকিস্তানের মতো সন্ত্রাসের জন্ম দেওয়া দেশের বিরুদ্ধে সব রকম সম্পর্ক ছিন্ন করার অনুরোধ জানায়।
জানা গেছে, আইসিসির এই মিটিংয়ে বিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে সচিব অমিতাভ চৌধুরী ছিলেন। তিনি চিঠির প্রসঙ্গ তোলেননি মিটিংয়ে; কিন্তু শশাঙ্ক মনোহর নিজেই সেই প্রসঙ্গ তোলেন এবং বোর্ডকে ভারতের চিঠি সম্পর্কে অবহিত করেন। এর সঙ্গে এও জীনিয়ে দেন, ‘আইসিসির আসল লক্ষ্য ক্রিকেট।’
গত মাসে বিসিসিআইয়ের ক্রিকেট অব অ্যাডমিনেস্ট্রেশন কর্মকর্তা বিনোদ রাই জানিয়েছিলেন, ক্রীড়া জগতের পাকিস্তানকে একঘরে করে দেওয়া উচিৎ বলে দাবি তোলেন তারা। ঠিক যেভাবে দক্ষিণ আফ্রিকাকে একসময় ক্রিকেট থেকে নির্বাসিত করা হয়েছিল বর্ণবৈষম্যকে প্রভাবিত করার অভিযোগে।
আইসিসির মিটিংয়ে সব প্রতিযোগী দেশকে নিরাপত্তার বিষয়ে নিশ্চয়তা দেওয়া হয়। তার আগেই পর্যাপ্ত নিরাপত্তার দাবিও তুলেছিল ভারত। আইসিসির প্রধান নির্বাহী ডেভিড রিচার্ডসন বলেন, ‘ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে আইসিসি বিশ্বকাপের নিরাপত্তা বিষয়ক পরিকল্পনাও তৈরি করেছে। আমরা স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে মিলে সে ব্যাপারে কাজ করছি। যাতে খেলোয়াড়, কর্মকর্তা এবং সমর্থকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।’
আইএইচএস/পিআর