ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

স্মৃতির আয়নায় প্রথম প্রিমিয়ার টি-টোয়েন্টি লিগ

আরিফুর রহমান বাবু | প্রকাশিত: ০৬:১৪ পিএম, ০২ মার্চ ২০১৯

সত্যি সময়ে কত কিছুই না বদলায়! সময়ের প্রবাহতায় কত ঘটনা যায় হারিয়ে। আবার কিছু কিছু ঘটনা জাগরুক থাকে স্মৃতির আয়নায়। জীবন সংগ্রামে নিরন্তর সংগ্রামী মানুষের পক্ষে অতীতের সব ঘটনা মনে রাখা কঠিন। বেশির ভাগ ঘটনা তাই ভুলে যাওয়া হয়, এক সময়ের উজ্জ্বল স্মৃতিও।

কালের আবর্তে হারিয়ে যায়। তাই তো জাতীয় কবি, বিদ্রোহী কবি, সাম্যর কবি, মানবতার কবি কাজী নজরুল ইসলাম লিখেছেন, ‘অতীতও দিনের স্মৃতি, কেউ ভোলে না কেউ ভোলে।’

এটা তার রচিত কালজয়ী এক গানের প্রথম পংক্তি। খেলা প্রেমী বিশেষ করে ক্রিকেট অনুরাগীদেরও ঠিক তেমন হয়। এক সময়ের দেখা, জানা ও শোনা ঘটনাও এক সময় গিয়ে স্মৃতির আড়ালে ঢাকা পড়ে যায়।
এই যে এবার দীর্ঘ দিন পর ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটে টি-টোয়েন্টি লিগ হচ্ছে, তার প্রথম আসরের কথা কজনার মনে আছে?
খুব বেশি দিন আগে ঘটনা নয় কিন্তু। এখনো ১৩ বছর পুরো হয়নি। সবে একযুগ পেরিয়েছে। ২০০৬ সালের শেষ দিকে সম্ভবত ডিসেম্বরের কথা।

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে নতুন সংযোজন ঘটেছিল টি-টোয়েন্টি লিগ। ঠিক এবার যেমন ৫০ ওভারের প্রিমিয়ার লিগের আগে টি-টোয়েন্টি লিগ হচ্ছে, ২০০৬ সালেও ঠিক তেমনিভাবে বছর শুরুই হয়েছিল এই টি-টোয়েন্টি লিগ দিয়ে।
এক যুগ পর আবার ৫০ ওভারের প্রিমিয়ার লিগের আগে ২০ ওভারের টুর্নামেন্ট। মাঝে অনেকদিন হয়নি। তাই  খুব স্বাভাবিকভাবে ২০ ওভারের প্রথম আসরের স্মৃতি গেছে হারিয়ে।

বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে সে অর্থে সাজানো গোছানো আর্কাইভ নেই। অতীত রেকর্ড, পরিসংখ্যান, খুঁটিনাটি ও আনুষাঙ্গিক তথ্য-উপাত্ত্ব ও পরিসংখ্যান খুঁজে পাওয়া কঠিন।

জাতীয় দল, জাতীয় লিগ ও বিসিএল তথা ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেট এবং লিস্ট ‘এ’ আসরের যাবতীয় তথ্য ও পরিসংখ্যান ক্রিকইনফো, ক্রিকবাজসহ ক্রিকেটকেন্দ্রীক ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়। কিন্তু এর বাইরে বিশেষ করে যখন বাংলাদেশের একদিনের সীমিত ওভারের ক্রিকেটে লিস্ট এ‘র মর্যাদা ছিল না এবং দীর্ঘ পরিসরের খেলাগুলো প্রথম শ্রেণির আসরের মর্যাদা পায়নি, তখনকার তথ্য-উপাত্ত ও রেকর্ড জানা ও বের করা খুব কঠিন। 

অতীত দিনের পেপার কাটিং কিংবা কোন কোন ম্যাগাজিনের বিশেষ লিখনী আর স্মৃতি হাতড়ে খুঁজে বের করা ছাড়া এক যুগ আগে ঢাকাই ক্রিকেটের হাল চাল জানার কোনই উপায় নেই।

তাই দিনকে দিন সে সব আসরের তথ্য-পরিসংখ্যান ঢাকা পড়ে যাচ্ছে। যারা দেখেছেন, তাদের কারো কারো হয়ত আবছা মনে আছে বা থাকে। কিন্তু নতুন প্রজন্মর প্রায় একদমই অজানা সে সব আসরের কথা বার্তা।

এ প্রতিবেদনে যে আসরটির কথা বলা হচ্ছে, সেই ২০০৬ সালে প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিস্ট এ‘র স্ট্যাটাস পায়নি। তাই ঐ আসরের তথ্য-উপাত্ত ও পরিসংখ্যান ক্রিকইনফো এবং অন্যান্য ক্রিকেট ওয়েবসাইটে মিলবে না।

প্রথম তথ্য হলো, ২০০৬ সালে যে প্রথম প্রিমিয়ার টি-টোয়েন্টি লিগ হয়েছিল, তাতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ঐতিহ্যবাহী ঢাকা মোহামেডান। যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতীয় দল ২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে বিশ্বকাপে মহাপরাক্রমশালী ভারতকে হারিয়ে সেরা আটে পৌঁছে গিয়ে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিল, এখন যিনি জাতীয় দলের অন্যতম নির্বাচক-সেই হাবিবুল বাশার ছিলেন প্রথম টি-টোয়েন্টি লিগে মোহামেডান ক্যাপ্টেন।

ফাইনালে ওল্ডডিএইচএসকে ২৪ রানে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল সাদা কালো জার্সিধারীরা। বাংলাদেশের ক্রিকেটের সফল সেনাপতি ১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফি বিজয়ী টিম বাংলাদেশের অধিনায়ক ও  বর্তামানে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ও ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান সে আসরের রানার্সআপ ওল্ডডিওএইচএস অধিনায়ক।  

জাগো নিউজের পাঠক, শুভানুধ্যায়ী তথা ক্রিকেট অনুরাগী, ভক্ত ও সমর্থকদের জন্য সেই ফাইনালের স্কোরকার্ডও উপস্থাপন করা হলো...

প্রথম প্রিমিয়ার টি-টোয়েন্টি লিগ ফাইনালের স্কোর কার্ড

টস : হাবিবুল বাশার সুমন (মোহামেডান)

মোহামেডান ইনিংস     

                                                রান      বল     ৪    ৬

ইমতিয়াজ তান্না রান আউট                 ৮২       ৫০     ৮    ৪

জুনায়েদ সিদ্দিকী ক ও ব রাজ্জাক         ৬১       ৩৪      ৮    ২

আফাতাব  নট আউট                        ২৫       ২০       ১     ১

ফয়সাল ডিকেন্স রান আউট ( আকরাম)  ৩        ৮        ০     ০

তাপস বৈশ্য ক রাজিব ব রাজ্জাক          ৪         ৬      ০      ০

হাবিবুল বাশার ক নাদিফ ব রাজ্জাক       ০         ১        ০      ০

সাগির হোসেন পাভেল নট আউট           ১         ১        ০      ০

অতিরিক্ত ( লেবা ৩ , ওয়াইড ৫) ৮

মোট  (২০ ওভারে ৫ উইকেটে)  ১৮৪

ব্যাট করেননি হাসিবুল শান্ত , মঞ্জরুল ইসলাম মঞ্জু , আরাফাত সানি , রেজাউল ইসলাম ।

উইকেট পতন :  ১/১৩৪ ( ১২.৩ ওভার জুনায়েদ ), ২/১৬২ ( ১৫.৪ ওভার , ইমতিয়াজ তান্না ) , ৩/১৬৮. ১৭.১ ওভার (ফয়সাল ডিকেন্স ) ৪/১৮০ ( ১৯.১ ওভার , তাপস বৈশ্য) , ৫/১৮১ ( হাবিবুল বাশার , ১৯.৫ ওভার )।

বোলিং : শাহাদাত হোসেন রাজিব ৪-০-২৬-০ , নাজমুল হোসেন ২-০-২৫- ০ , খালেদ মাহমুদ সুজন ৪- ০ -৪৪-০ , আব্দুর  রাজ্জাক ৪- ০-২৭- ৩ , মেহরাব জুনিয়র ৪- ০-৩৪- ০ , ডলার মাহমুদ ২-০- ২৫- ০। 

ওল্ডডিএইচএস ইনিংস 
                                                           রান      বল     ৪    ৬

তামিম ইকবাল ক ফয়সাল ডিকেন্স ব আরাফাত   ৪৬     ৩৬    ৭     ১

মেহরাব জুনিয়র বোল্ড আরাফাত                    ৩৩     ৩৩    ৩    ০

নাদিফ চৌধুরী ব বাশার ব আরাফাত                 ২৩     ১০      ১       ২

রাজ্জাক  বোল্ড আফতাব                              ১৮     ১৩      ১       ১  

আকরাম খান এলবিডব্লিউ ব আফতাব                ৬       ৬      ০      ০

খালেদ মাহমুদ সুজন রান আউট (মঞ্জু )         ১৫      ১৩       ০      ০

ডলার মাহমুদ নট আউট                                 ৫       ৮       ০      ০

এহসানুল সিজান নট আউট                              ১        ১       ০      ০

অতিরিক্ত ( লে বা ২ , ওয়াইড ১১ )                     ১৩

মোট ( ২০ ওভারে ৬ উইকেটে )                      ১৬০

উইকেট পতন :  ১/৮৫, ৯.৬ ওভার , তামিম ) , ২/ ১১৫ , মেহরাব জুনিয়র , ১৩.১ ওভার ) /৩ ১১৬ , নাদিফ , ১৩.৩ ওভার ) ৪/১২৪ (আকরাম , ১৪.৫ ওভার ) , ৫/১৪৪ ( রাজ্জাক , ১৭.১ ওভার ) , ৬/ ১৫৭ ( খালেদ মাহমুদ সুজন ১৯.৩ ওভার )।

ব্যাট করেননি :  শাহাদাত হোসেন রাজি, নাজমুল ইসলাম ও শাহিন।

বোলিং :  মঞ্জুরুল ইসলাম ৪- ০-২৫-০ , তাপস বৈশ্য ৪-০-৩৩- ০ , হাসিবুল হোসেন শান্ত ২-০- ২৫- ০ ,

রেজাউল ৪- ০-৩২-০ , আরাফাত সানি  ৪- ০ -৩২- ৩, আফতাব ২- ০- ১১- ২।

ফল :   মোহামেডান ২৪ রানে জয়ী।

ম্যান অফ দ্যা ফাইনাল :  ইমতিয়াজ তান্না ( মোহামেডান )

এআরবি/এমএমআর/এমকেএইচ

আরও পড়ুন