ম্যাক্সওয়েলের রেকর্ড সেঞ্চুরিতে ঘরের মাঠে হোয়াইটওয়াশ ভারত
প্রথম ইনিংসে ঝড় তুললেন বিরাট কোহলি, সঙ্গ দিলেন মাহেন্দ্র সিং ধোনি, ভারত পেল ১৯০ রানের বিশাল সংগ্রহ। এই রান তাড়া করে জিততে ভালোর চেয়ে বেশি কিছুই করতে হতো অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানদের। শুধু ভালো বললে কম হবে, অবিশ্বাস্য ব্যাটিংয়ে রেকর্ডগড়া সেঞ্চুরি করেই দলকে জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছেন অসি তারকা গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।
কোহলির ৩৮ বলে ৭২ এবং ধোনির ২৩ বলে ৪০ রানের ইনিংসে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৯০ রান করে ভারত। জবাবে ৪ ওভারের মধ্যেই সাজঘরে ফেরে দুই অসি টপঅঅর্ডার ব্যাটসম্যান। তবু ম্যাক্সওয়েলের ৫৫ বলে ১১৩ রানের অপরাজিত ইনিংসে ৪ উইকেট হারিয়ে দুই বল আগেই জয় পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
এর আগে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতে ম্যাচের শেষ বলে ৩ উইকেটের জয় পেয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। বেঙ্গালুরুতে সিরিজের শেষ ম্যাচটি জিতে ভারতীয় ক্রিকেট দলকে প্রথমবারের মতো হোয়াইটওয়াশের স্বাদ দিল অসিরা। সবমিলিয়ে নিজেদের মাঠে মাত্র চতুর্থ সিরিজ হার এটি ভারতের।
বিশাখাপত্তমে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় প্রথম ম্যাচ হেরেছিল ভারত। বেঙ্গালুরুতে নিজেদের ভুল শুধরে নেন লোকেশ রাহুল, কোহলি, ধোনিরা। এক প্রান্তে শিখর ধাওয়ান ধীরেসুস্থে খেললেও অপরপ্রান্তে ঝড় বইয়ে দেন রাহুল। প্রথম পাওয়ারপ্লেতে বিনা উইকেটে ৫৩ রান পায় টসে হেরে ব্যাট করতে নামা ভারত।
কিন্তু অতিরিক্ত আক্রমণাত্মক হয়ে নিজের উইকেট হারান রাহুল। অষ্টম ওভারের প্রথম বলে আউট হওয়ার আগে ৩ চার ও ৪ ছক্কার মারে ২৩ বলে ৪৭ করেন তিনি। ছোটখাটো মড়ক লাগে ভারতের ইনিংসে। ৭ ওভারে বিনা উইকেটে ৬১ থেকে ১০.৫ ওভারে ৩ উইকেটে ৭৪ রানের দলে পরিণত হয় স্বাগতিকরা।
সেখান থেকে দলকে উদ্ধার করেন কোহলি এবং ধোনি। দুজন মিলে ৫০ বলে যোগ করেন ১০০ রান। ৩টি করে চার-ছক্কার মারে ২৩ বলে ৪০ করে আউট হন ধোনি। দীনেশ কার্তিক নেমে ৩ বলে করেন ৮ রান। একজোড়া চার ও আধডজন ছক্কায় ৩৮ বলে ৭২ রান আসে অধিনায়ক কোহলির ব্যাট থেকে। ভারতের ইনিংস থামে ৪ উইকেটে ১৯০ রানে।
বিশাল লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে সুবিধা করতে পারেননি ওপেনার মার্কাস স্টোইনিস (১১ বলে ৭) এবং অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ (৭ বলে ৮)। চার ওভার শেষে মাত্র ২২ তুলতেই সাজঘরে দুই ব্যাটসম্যান। দমে না গিয়ে পালটা আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেন টিকে থাকা ওপেনার ডি'আরকি শর্ট এবং ম্যাচের নায়ক গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।
পাওয়ার প্লের বাকি দুই ওভারে ২০ রান নেন ম্যাক্সওয়েল এবং শর্ট। দুজনের তৃতীয় উইকেট জুটিতে মাত্র ৪৩ বলে আসে ৭৩ রান। দ্বাদশ ওভারের প্রথম বলে দলীয় ৯৫ রানের মাথায় ফেরেন ২৮ বলে ৪০ রান করা শর্ট। তখন জয়ের জন্য ৫৩ বলে করতে হতো আরও ৯৬ রান।
যা করতে খুব বেশি সমস্যা হয়নি ম্যাক্সওয়েলের। ভারতীয় বোলিং আক্রমণকে লণ্ডভণ্ড করে দিয়ে মাত্র ৫০ বলে পূরণ করেন নিজের সেঞ্চুরি। যা কি না আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ভারতের মাটিতে মাত্র দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। ইনিংসের শেষ ওভারের তৃতীয় বলে ৬ এবং চতুর্থ বলে ৪ মেরে নিশ্চিত করেন দলের জয়।
শেষপর্যন্ত ৫৫ বলে ৭ চার ও ৯টি বিশাল ছক্কার মারে ১১৩ রানে অপরাজিতই ম্যাক্সওয়েল। ভারতেত মাটিতে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের রেকর্ডও এটি। অবিচ্ছিন্ন চতুর্থ উইকেটে পিটার হ্যান্ডসকম্বের সঙ্গে ৫২ বলে ৯৯ রানের জুটি গড়েন ম্যাক্সওয়েল। যেখানে হ্যান্ডসকম্বের অবদান ১৮ বলে ২০ রান।
প্রায় একা হাতে অস্ট্রেলিয়াকে অবিস্মরণীয় জয় এনে দিয়ে ম্যাচসেরার পুরস্কার এবং ভারতকে তাদের মাটিতে প্রথমবারের মতো হোয়াইটওয়াশ করে সিরিজসেরার পুরস্কারও জেতেন ম্যাক্সওয়েল।
এসএএস/বিএ