হেটমায়ারের ঝড়ে প্রতিশোধ নিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ
একই মাঠের এই কি চরিত্র! আগের ম্যাচে বার্বাডোজের ব্রিজটাউন শহরে কেনসিংটন ওভালে ৩৬০ রান করেও জিততে পারেনি স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সফরকারী ইংল্যান্ডের কাছে হারতে হয়েছিল ৬ উইকেটের ব্যবধানে। ওই ম্যাচে ক্রিস গেইলের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি ম্লান হয়ে গিয়েছিল ইংল্যান্ডের জেসন রয় আর জো রুটের সেঞ্চুরির সামনে।
এবার সেই একই মাঠে ৩০০ রানও হলো না। প্রথমে ব্যাট করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ ছিল ২৮৯ রান। জয়ের জন্য ২৯০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ড অলআউট ২৬৩ রানে। শেষ পর্যন্ত ২৬ রানের জয়ে ইংল্যান্ডের ওপর প্রথম ম্যাচ হারের দারুণ প্রতিশোধ নিলো স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
এবার আর গেইল নন, ঝড় তুলেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের নতুন সেনসেশন শেমরন হেটমায়ার। দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি করেন তিনি। ৮৩ বলে অপরাজিত ১০৪ রানের ইনিংস খেলে স্বাগতিকদের জয়ের নায়কে পরিণত হন হেটমায়ার। ম্যাচ সেরার পুরস্কারটাও ওঠে তার হাতে।
শুধু হেটমায়ারই নন, মূলতঃ ব্যাট হাতে তার জোরালো ইনিংসের পর বল হাতে ইংলিশদের ওপর ঝড় তুলেছিলেন ক্যারিবীয় পেসার শেলডন কটরেল। ৯ ওভারে ৪৬ রান দিয়ে তিনি একাই নেন ৫ উইকেট। এছাড়া অধিনায়ক জেসন হোল্ডার ৫৩ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট। বাকি দুটি ভাগ করে নেন ওশানে থমাস এবং কার্লোস ব্র্যাথওয়েট।
জয়ের জন্য ২৯০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই কটরেলের তোপের মুখে পড়ে ইংল্যান্ড। ১০ রানের মধ্যেই দুই ওপেনার জেসন রয় এবং জনি বেয়ারেস্টকে ফিরিয়ে দেন তিনি। এরপর যদিও জো রুট আর ইয়ন মরগ্যান মিলে বিপর্যয় সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু দলীয় ৬০ রানের মাথায় ব্যাক্তিগত ৩৬ রানে ফিরে যান জো রুটও। ওশান থমাসের বলে উইকেটের পেছনে সাই হোপের হাতে ক্যাচ দেন তিনি।
এরপর মরগ্যান আর বেন স্টোকস মিলে গড়ে তোলেন ৯৯ রানের জুটি। এই জুটিতে মনে হচ্ছিল ইংল্যান্ড জিতে যাবে। কিন্তু দলীয় ১৫৯ রানের মাথায় ইয়ন মরগ্যানকে ফিরিয়ে দেন কটরেল। ৮৩ বলে ৭০ রান করে আউট হন মরগ্যান।
বেন স্টোকস করেন সর্বোচ্চ ৭৯ রান। হোল্ডারের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য হন স্টোকস। এরপর জস বাটলার কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছিলেন। ৩৩ বলে ৩৪ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। কিন্তু হোল্ডারের বলে পারলেন না নিজেকে টিকিয়ে রাখতে।
পরের ব্যাটসম্যানরা ছিলেন কেবল আসা-যাওয়ার মিছিলে। শেষ পর্যন্ত ৪৭.৪ ওভারে (১৪ বল বাকি থাকতে) ২৬৩ রানে অলআউট হয়ে যায় সফরকারী ইংল্যান্ড এবং ২৬ রানে পরাজয় মানতে বাধ্য হয়।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে গেইল আর জন ক্যাম্পবেলের ব্যাটে ঝড় ওঠার ইঙ্গিত মিলেছিল। দু’জনের ব্যাটে গড়ে ওঠে ৬১ রানের জুটি। যদিও লিয়াম প্লাঙ্কেটের বলে ২৩ রানে আউট হয়ে যান ক্যাম্পবেল। ক্রিস গেইল এই ম্যাচেও হাফ সেঞ্চুরিটা করেন খুব স্লো। ৬৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করার পর অবশ্য আর তাকে বাড়তে দেননি আদিল রশিদ। ৫০ রানেই গেইলকে বোল্ড করে দেন রশিদ।
সাই হোপ আউট হন ৩৩ রানে। ড্যারেন ব্র্যাভো করেন ২৫ রান। এরপর মাঠে ঝড় তোলেন মূলতঃ হেটমায়ার। মাঝে জেসন হোল্ডার মাত্র ৩ রান করে আউট হয়ে গেলেও টেল এন্ডারদের সঙ্গে নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে একটা লড়াকু স্কোরে পৌঁছে দেন মূলতঃ হেটমায়ারই। তার সঙ্গীদের যথাসম্ভব নন-স্ট্রাইকে রেখে ব্যাট করে যান তিনি। যার ফলে ৮৩ বলে ৭ বাউন্ডারি আর ৪ ছক্কায় ১০৪ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি।
শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেট হারিয়ে ২৮৯ রান সংগ্রহ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ইংল্যান্ডের হয়ে মার্ক উড, লিয়াম প্লাঙ্কেট, বেন স্টোকস এবং আদিল রশিদ নেন ১টি করে উইকেট।
আইএইচএস/আরআইপি