ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

প্রিমিয়ার টি-টোয়েন্টি : ক্লাবগুলোর প্রস্তুতিতে সরব একাডেমি মাঠ

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশিত: ০৮:৫২ পিএম, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

জানুয়ারির একদম প্রথম ভাগ থেকে ফেব্রুয়ারির ৮ তারিখ, প্রায় ৩৩-৩৪ দিন একটানা দেশি, বিদেশি ক্রিকেটার-কোচের পদচারণায় মুখরিত ছিল মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়াম লাগোয়া বিসিবি ইনডোর মাঠ। তারপর দু সপ্তাহ বিরতি। আজ থেকে আবার সরগরম বিসিবি একাডেমি মাঠ।

আবার একাডেমি মাঠে ক্রিকেটার, কোচ, সংগঠক আর প্রচার মাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতি। সাজ সাজ রব। মাঝের একমাস ক্রিকেটারদের অনুশীলন ছিল ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট বিপিএলের প্রস্তুতির। আর শুক্রবার থেকে বিসিবি একাডেমি মাঠ সরব আরেক টি-টোয়েন্টি আসরের পূর্ব প্রস্তুতিতে। তবে এবার আর ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টির প্রস্তুতি নয়, আজ থেকে ঢাকার প্রিমিয়ার টি-টোয়েন্টি লিগের আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি শুরু করলো দলগুলো।

বলার অপেক্ষা রাখেনা, আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু প্রিমিয়ার ক্রিকেট টি-টোয়েন্টি লিগ, সে আসরকে সামনে রেখেই শুক্রবার শেরে বাংলায় প্র্যাকটিস করলো প্রিমিয়ারের চার দল-শেখ জামাল ধানমন্ডি, মোহামেডান, লিজেন্ডস অফ রূপগঞ্জ ও প্রাইম দোলেশ্বর।

সে অর্থে ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটের এবারের মৌসুমের ওয়ার্ম আপ আসর এই টি-টোয়েন্টি লিগ। এক সময় ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটে ৫০ ওভারের লিগের সাথে টি-টোয়েন্টি লিগও হতো। সেটা শুরু হয়েছিল ২০০৬ সালে। তারপর দুই তিন বার হবার পর তা বন্ধ হয়ে যায়। এবার দীর্ঘ দিন পর আবার মাঠে গড়াতে যাচ্ছে টি-টোয়েন্টি লিগ।

তবে ইতিহাস জানাচ্ছে, প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগ শুরুর আগে দীর্ঘ দিন ওয়ার্ম আপ টুর্নামেন্ট ছিল দামাল সামার ও দামাল স্মৃতি টুর্নামেন্ট। সেই ৭০ দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে ৯০ দশকের প্রায় পুরো সময় ঐ টুর্নামেন্ট দিয়েই শুরু হতো ঢাকাই ক্রিকেট মৌসুম। ক্লাব গুলো দামাল সামার পরে দামাল স্মৃতি টুর্নামেন্ট খেলেই অংশ নিতো প্রিমিয়ার লিগে। ঐ আসর প্রায় দুই যুগের বেশি সময় ক্লাবগুলোর লিগ প্রস্তুতির আসর হিসেবেই পরিগণিত হতো।

কেউ কেউ হয়ত ভাবছেন, টি-টোয়েন্টি লিগও বুঝি তেমনি। আসলে তা নয়। লিগ শুরুর আগে হচ্ছে বলে হয়ত অমন ভাবা হচ্ছে, কিন্তু আসলে টি-টোয়েন্টি লিগ একটা ভিন্ন আসর। ভিন্ন চিন্তা ধারা থেকে এর আয়োজন।

কদিন আগেই শেষ হয়ে গেল বিপিএল টি-টোয়েন্টি। সে আসরে ক্রিস গেইল, এ বি ডি ভিলিয়ার্স, স্টিভেন স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নার, আন্দ্রে রাসেল সুনিল নারিনসহ বিশ্বের অনেক নামি ক্রিকেটারদের সাথে খেলেছেন বাংলাদেশেরও অনেক ক্রিকেটার। কিন্তু সেটা সংখ্যায় বড়জোর ৫০ কিংবা তার অল্প কিছু বেশি। বড় একটা অংশ খেলার সুযোগই পাননি।

যে অংশটা বিপিএলে দল পান না, কিংবা ডাকই মেলেনা, আর দল পেলেও সেভাবে খেলার সুযোগ হয় না, তাদের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ধাতস্ত করে তুলতেই আসলে প্রিমিয়ার টি-টোয়েন্টি লিগের আয়োজন।

প্রস্তুতি শুরুর প্রথম দিন মোহামেডানের নাদিফ চৌধুরী আর শেখ জামাল ধানমন্ডির নুরুল হাসান সোহানের মুখেও অমন কথা। এবারের বিপিএলে রংপুর রাইডার্সের হয়ে খেলা নাদিফ দলবদলের পালায় প্রিমিয়ার লিগে মোহামেডানের পক্ষে নাম লিখিয়েছেন।

নাদিফ প্রিমিয়ারে টি-টোয়েন্টি লিগের অন্তর্ভূক্তি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বলেন, ‘আমার মনে হয় খুব ভালো একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে বোর্ড। কারণ এখান থেকে নতুন প্লেয়ার উঠে আসতে পারবে।’

নাদিফ বোঝানোর চেষ্টা করেন, যে সুযোগটা বিপিএলে পায় না সবাই, সেই সুযোগটা এই টুর্নামেন্টে পাওয়া যাবে। তার মূল্যায়ন, যদিও অনেক ছোট টুর্নামেন্ট, তারপরও একটা ভালো সুযোগ থাকবে লোকাল নতুন প্লেয়ারদের জন্য। বলেন, ‘আমার মনে হয় অনেক ভালো হবে।’

আবার এ আসরকে প্রিমিয়ার লিগের ড্রেস রিহার্সালও মনে হয় নাদিফের। তার ভাষায়, ‘ওইদিক থেকেও ভালো হবে। একটা ট্রায়াল হয়ে যাবে টিম সেট করার জন্য। সব মিলিয়ে খুব ভালো একটা উদ্যোগ নিয়েছে বোর্ড।’

সর্বশেষ বিপিএলের দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে ওপেন করতে নেমে ১২ বলে ২৭ রানের এক ঝড়ো ইনিংস খেলেছিলেন নাদিফ। সে ইনিংস প্রিমিয়ার টি-টোয়েন্টি খেলায় বাড়তি আত্মবিশ্বাস যোগাবে বলেই বিশ্বাস ডানহাতি এই ব্যাটসম্যানের।

এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই বিপিএলের ওই ইনিংসের পর আমার আত্মবিশ্বাস আগের থেকে বেটার। আর সেটা ভবিষ্যতে নিশ্চয়ই ভালো কিছু করারই প্রেরণা দেবে।’

মাঝে ফুটবলের মত ক্রিকেটেও শিরোপা লড়াই থেকে দূরে মোহামেডান। এ ঐতিহ্যবাহী ক্লাব এবার গত কয়েক বছরের তুলনায় ভাল দল গড়েছে। নাদিফও তা মনে করেন।

তাই মুখে এমন আত্মবিশ্বাসী উচ্চারণ, ‘কাগজে কলমে যদি ধরেন, আমার তো খুব ভালো একটা টিম। বাকিটা মাঠে যদি আমাদের বেস্টটা দিতে পারি, একটা ভালো রেজাল্ট আসবে আশা করি।’

ওদিকে সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয়ে দল গড়া শেখ জামাল ধানমন্ডির নুরুল হাসান সোহানও মনে করেন, ডিপিএল টি-টোয়েন্টি স্থানীয় ক্রিকেটারদের এই ফরম্যাটে অভ্যস্ত করে তুলতে এবং তাদের স্কিল বাড়াতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

তরুণ এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান বলেন, ‘বিপিএলে হয়তো কিছু সংখ্যক প্লেয়ার খেলে। কিন্তু আমাদের প্লেয়ারদের জন্য সবচেয়ে বড় আসর আসলে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগই। এমন আসরে টি-টোয়েন্টি থাকা মানে যারা বিপিএলে সুযোগ পাচ্ছে না তাদের জন্য একটা বড় সুযোগ। হয়তো এখানে একটু ভালো করে সামনের ডিসেম্বরে আবার বিপিএল আসবে। এটা অনেক বড় সুযোগ তাদের জন্য। আমি মনে করি সবার জন্যই এটা খুব ভালো হবে।’

নিজ দল শেখ জামাল সম্পর্কে সোহানের মূল্যায়ন, ‘আসলে অকশনে আমরা যেই জিনিসটা চেয়েছি, সেটা হলো দলটা যাতে ভারসাম্যপূর্ণ হয়। দল আল্লাহর রহমতে সেটা হয়েছে। আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় যে, টিম স্পিরিটটা। গত বছর যেই জিনিসটা ছিল। আমরা খুব মাঝারি ধরনের দল নিয়েও রানার্স আপ হয়েছিলাম টিম স্পিরিটের কারণে। আজ আমরা প্র্যাকটিস শুরু করলাম। যদি আমাদের টিম স্পিরিটটা থাকে, সব দিক থেকেই ভালো হবে।’

এআরবি/এমএমআর/পিআর

আরও পড়ুন