ধারাবাহিকতা থাকলে বাংলাদেশ বিশ্বসেরা হতে পারে : মনোহর
আইসিসি প্রেসিডেন্ট শশাঙ্ক মনোহর বাংলাদেশে আসছেন-কেন কি কারণে তা নিয়ে কারও কারও মনে একটা ভ্রান্ত ধারণার উদ্রেক ঘটেছিল। কেউ কেউ ভেবে বসেছিলেন, ভারতের সাড়া জাগানো ফ্রাঞ্চাইজি আসর আইপিএলের কিছু ম্যাচ বাংলাদেশে আয়োজনের চিন্তা থেকেই বিপিএল চলাকালীন আসছেন আইসিসির কর্ণধার।
তবে কঠিন সত্য হলো, ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) সভাপতি হিসেবে শশাঙ্ক মনোহর আইসিসি প্রধান নির্বাচিত হলেও তিনি এখন সেই পদে নেই। বিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট এখন সি কে খান্না। আর আইপিএলের চেয়ারম্যান রাজিব শুক্লা। কাজেই তার আসার সঙ্গে আইপিএলের ম্যাচ আয়োজনের বিষয়টি সংযুক্ত থাকার কথা নয়।
যদি থাকতো, তবে বিসিসিআইয়ের প্রধান, সিইও অথবা আইপিএল অর্গানাইজিং কমিটির সদস্য সচিব অবশ্যই সঙ্গে আসতেন। কিন্তু তারা কেউ আসেননি। শশাঙ্ক মনোহর এসেছেন সস্ত্রীক। এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে, বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের ব্যক্তিগত আমন্ত্রণেই বাংলাদেশে এসেছেন আইসিসি প্রধান।
বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীতে পা রাখা শশাঙ্ক মনোহর উঠেছেন 'হোটেল লা মেরিডিয়ানে'। আজ সারাদিন ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন। সকালে গিয়েছিলেন সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় তাঁর সম্মানে নৈশভোজের আয়োজন করে বিসিবি। তারও আগে হোটেলের বলরুমে কাচে ঘেরা বক্সের মধ্যে পূর্বাচলের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের মূল নকশা এবং স্থাপত্যশৈলি উপস্থাপন করা হয় শশাঙ্ক মনোহরের সামনে।
এসবেরই এক পর্যায়ে স্থানীয় প্রচার মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন আইসিসি প্রেসিডেন্ট। সেখানে তিনি এমন কিছু বলেননি, যেটা বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য বড় খবর হতে পারে। তবে এদেশের ক্রিকেটের উন্নতিতে খুশি আইসিসি প্রধান।
এজন্য বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপনের প্রশংসা করে তিনি বলেন, 'নাজমুলের নেতৃত্বে ক্রিকেটের উন্নতি হয়েছে। বিশ্বের সবাই সেটা জানে। বাংলাদেশ এখন ভারত, অস্ট্রেলিয়া আর ইংল্যান্ডকে হারাতে পারে। তারা খুব ভালো পারফর্ম করছে। তবে একটি জায়গায় ঘাটতি, সেটা হলো ধারাবাহিকতা। (সেটা হলে) তারা বিশ্বসেরা হতে পারে।'
সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের জবাবে শশাঙ্ক মনোহর পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, ২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের আয়োজক হবে শুধু ভারত। এর আগে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তানের মতো এশিয়ার দলগুলোর সম্পৃক্ততা থাকলেও এবার এককভাবেই টুর্নামেন্ট আয়োজনের দায়িত্ব নিয়েছে ভারত। সেক্ষেত্রে বিশ্বকাপের কোনো ম্যাচ বাংলাদেশে হওয়ার সুযোগ নেই।
২০২৩ সালে না হলে বাংলাদেশে কবে বিশ্বকাপ হতে পারে? এমন প্রশ্নে আইসিসির প্রেসিডেন্ট শশাঙ্ক মনোহর জানালেন, ‘২০২৩ সালের বিশ্বকাপ শেষে ঠিক করা হবে ভবিষ্যতে কোথায় বিশ্বকাপ হবে। এবং সেটাতে বাংলাদেশের অন্তর্ভূক্তি থাকবে কি না।’
এর আগে ২০১০ এবং ২০১১ সালে বাংলাদেশে এসেছিলেন শশাঙ্ক মনোহর। এবার এদেশে এসে তার একটি জিনিস আলাদাভাবে চোখে পড়েছে, সেটা হলো ঢাকার অবকাঠামোগত উন্নয়ন। তার ভাষায়, ‘ঢাকার অনেক উন্নতি হয়েছে, এটা দেখে ভালো লেগেছে।’
অলিম্পিকে ক্রিকেট আয়োজন নিয়েও অনেক কথা আছে। বাস্তবে সেটা কতটা সম্ভব? এমন প্রশ্নে আইসিসি প্রধান বলেন, ‘এটা আসলে কঠিন। কারণ অলিম্পিক হয় ১৫ দিনের। আর ক্রিকেট আয়োজন করতে অন্ততঃ চারটা মাঠ দরকার। যেটা আসলে অলিম্পিকের মতো বড় আয়োজনে প্রস্তুত করা বেশ কঠিন। সে কারণে অলিম্পিকে সহসাই ক্রিকেটের অন্তর্ভূক্তির সম্ভাবনা কম।’
এআরবি/এমএমআর/এমকেএইচ