‘প্রথম’ ফাইনালে বন্ধু সাকিবের বিপক্ষে তামিম!
বিপিএলের ইতিহাসে এবারই প্রথম ফাইনাল ম্যাচে মুখোমুখি হবেন দুই দেশি কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন (কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস) এবং খালেদ মাহমুদ সুজন (ঢাকা ডায়নামাইটস)। তবে ব্যক্তিগতভাবে দুজনই ফাইনাল খেলেছেন এর আগে, শিরোপাও জিতেছেন দুজনই।
এবারই প্রথম ফাইনাল খেলছেন না ঢাকার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান কিংবা কুমিল্লার অধিনায়ক ইমরুল কায়েসও। এর আগে ২০১৩ সালের আসরে খেলোয়াড় হিসেবে এবং ২০১৬ সালের আসরে অধিনায়ক হিসেবে চ্যাম্পিয়নই হয়েছিলেন সাকিব। ২০১৭ সালের আসরে ছিলেন রানারআপ।
অধিনায়ক হিসেবে না হলেও ২০১৫ সালের আসরে মাশরাফি বিন মর্তুজার নেতৃত্বে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের হয়ে শিরোপার স্বাদ ঠিকই পেয়েছেন ইমরুল কায়েস। তবে ‘অধিনায়ক’ ইমরুলের এটিই প্রথম বিপিএল ফাইনাল।
কিন্তু অধিনায়ক বলা হোক কিংবা খেলোয়াড়ই বা ধরা হোক- কোনো ভূমিকাতেই এর আগে বিপিএলের ফাইনালের মঞ্চে নামা হয়নি দেশের ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান তামিম ইকবালের। তাই কোয়ালিফায়ার-১’র ম্যাচে রংপুর রাইডার্সকে হারিয়ে ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করার পর তামিমের চোখেমুখে ছিলো অন্যরকম পরিতৃপ্তির হাসি।
কিন্তু ভাগ্যের কি পরিহাস! ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো বিপিএল ফাইনালে কি-না নিজের সবচেয়ে কাছের ও প্রিয় বন্ধু সাকিব আল হাসানের বিপক্ষেই লড়তে হবে তামিমকে। যেখানে প্রথমবারের মতো শিরোপা উঁচিয়ে ধরতে হলে বন্ধু সাকিবকে হারিয়েই তবে জিততে হবে ফাইনাল ম্যাচ।
কাগজে-কলমে কুমিল্লার অধিনায়ক ইমরুল কায়েস হলেও মাঠের মধ্যে সমান তৎপর দেখা যায় তামিম ইকবালকেও। দীর্ঘ প্রায় এক যুগের বেশি সময় ধরে ক্রিকেট খেলার অভিজ্ঞতা এবং তুলনামূলক বেশি তারকাখ্যাতি থাকা তামিমই মূলত কুমিল্লার ‘আর্মব্যান্ডবিহীন’ অধিনায়ক। যে কারণে মাঠে খুব বেশি কিছু করতে হয় না আনুষ্ঠানিক অধিনায়ক ইমরুলকে।
শুক্রবারের ফাইনাল ম্যাচে অনানুষ্ঠানিক অধিনায়ক তামিমের কাছে থাকতে হবে বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার এবং বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ‘ট্যাক্টিক্যাল’ অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে মাত করার পরিকল্পনা।
তুখোড় কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের সঙ্গে মিলে তা বের করতেই আজ ব্যস্ত থাকতে হবে কুমিল্লার ম্যানেজম্যান্টকে। তবে কম যাননি ঢাকার কোচ খালেদ মাহমুদ সুজনও। ছোটছোট কিন্তু ম্যাচ ঘুরিয়ে দেয়ার মতো অনেক বিষয়ে সুজনের পারদর্শীতা অন্য পর্যায়ের। সেসব দিকেও খেয়াল রাখতে হবে প্রথমবারের মতো ফাইনাল খেলতে যাওয়া তামিম ইকবাল ও তার দলকে।
তবে দলীয় পারফরম্যান্সের পরও থাকে ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের হিসাব-নিকাশ। বন্ধু সাকিব ব্যাটে-বলে সমান অবদান রাখতে পারলেও তামিমকে সন্তুষ্ট থাকতে হয় শুধু ব্যাটের পারফরম্যান্স দিয়েই।
আর এই ব্যাট হাতে এখনো পর্যন্ত সাকিবের চেয়ে এগিয়েই রয়েছেন তামিম। ১৩ ম্যাচে খেলে প্রায় ২৮ গড়ে আসরের পঞ্চম সর্বোচ্চ ৩২৬ রান রয়েছে তামিমের নামের পাশে। হাঁকিয়েছেন ২টি ফিফটি। বিপরীতে ১৪ ম্যাচ খেলে ২২ গড়ে সাকিব করেছেন ২৯৮ রান, তারও রয়েছে ২টি ফিফটি।
কিন্তু বল হাতে আসরের সর্বোচ্চ ২২টি উইকেট শিকার করেছেন সাকিব। যা চাইলেও করতে পারবেন না তামিম। তাই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার ‘বন্ধু’ সাকিবের বিপক্ষে ফাইনাল জিতে প্রথমবারের মতো শিরোপার স্বাদ নেয়াটা খুব একটা সহজ হবে ‘অভিষেক’ ফাইনাল খেলতে নামা তামিমের।
এসএএস/জেআইএম