মাঠেই নিজেদের প্রমাণ করতে চায় রাজশাহী
তরুণ এক অধিনায়কের কাঁধে রাজশাহীর রাজাদের ভার। রাজাদের রাজা সেই তরুণ নেতার নাম মেহেদী হাসান মিরাজ। এবারের বিপিএলে খুব বেশি শক্তিশালী দল নয় রাজশাহী কিংস। অন্তত কাগজে-কলমে নয়। তবুও এখনও পর্যন্ত যে ক’টি ম্যাচ তারা খেলেছে তাতে করে সত্যিকারার্থেই সমীহ আদায় করে নিতে সক্ষম হয়েছে।
এখনও পর্যন্ত খেলেছে ৬টি ম্যাচ। এর মধ্যে জয় তিনটিতে, পরাজয়ও সমান তিনটিতে। ৬ পয়েন্ট নিয়ে মিরাজের দল রয়েছে ৫ নম্বরে। কোয়ালিফায়ারে খেলতে হলে সেরা চারে থাকতে হবে রাজশাহীকে। সে লক্ষ্যেই সোমবার দিনের প্রথম ম্যাচে আসরের অন্যতম সেরা দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের মুখোমুখি হবে রাজশাহীর কিংসরা।
এখনও পর্যন্ত রাজশাহী যে তিনটি ম্যাচে হেরেছে, তার মধ্যে একবার হেরেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কাছে। চরম ব্যাটিং ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে ওই ম্যাচে ১২৪ রানে অলআউট হয়েছিল মিরাজের দল। এরপর ৫ উইকেটেই জয় ছিনিয়ে নিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোলিয়ান্স।
অন্য দুই ম্যাচের একটিতে হেরেছিল ঢাকা ডায়নামাইটসের কাছে। যেটা ছিল রাজশাহীর প্রথম ম্যাচও বটে। কিন্তু সিলেট গিয়ে ফিরতি ম্যাচে ঢাকাকে উল্টো নাকানি-চুবানি খাইয়েছে মিরাজের দল। ১৩৬ রান করলেও সাকিবের দলকে তারা অলআউট করেছে ১১৬ রানে।
দারুণ জয়টিই এখন সবচেয়ে বেশি আত্মবিশ্বাস জোগাচ্ছে রাজশাহী কিংসের খেলোয়াড়দের মধ্যে। ঢাকার বিপক্ষে ওই ম্যাচে কয়েকটি পরিবর্তন এনেছিল রাজশাহী এবং সেই পরিবর্তনের ফসলও পেয়েছিল তারা। ওই ম্যাচে সর্বোচ্চ স্কোর করা মার্শাল আইয়্যুব ৩১ বলে করেছিলেন ৪৫ রান।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষেও সেই আইয়্যুবেই ভরসা রাজশাহীর অধিনায়ক মিরাজের। সোমবারের প্রতিপক্ষ যখন কুমিল্লার মত শক্তিশালী দল, তখন রাজশাহী নিজেদের মধ্যে একটাই প্রেরণা প্রবেশ করিয়ে নিতে পেরেছে, যা করার মাঠে করবো। মার্শাল আইয়্যুবও মিডিয়ার মুখোমুখি হয়ে জানালেন, মাঠেই নিজেদের প্রমাণ দিতে চান তারা।
সিলেটে সর্বশেষ ম্যাচ তারা খেলেছে ১৬ জানুয়ারি। পরের ম্যাচের মাঝে চারদিন সময় পেয়েছে তারা। এই সময়টাকে দারুণ কাজে লাগিয়েছে রাজশাহী, বলে জানালেন মার্শাল আইয়্যুব। তিনি বলেন, ‘ঢাকায় এসে আমার অনুশীলনের সুযোগ হয়েছে। মিরপুরের উইকেট দুপরের ম্যাচে একটু বোলারদের সাহায্য করে। এটা আমাদের জন্য প্লাস পয়েন্ট। আমরা এখানে এসে দুইদিন নিজেদের প্রস্তুত করতে পেরেছি ভালোভাবে।’
ঢাকাকে হারানোর পর সামনের ম্যাচ কুমিল্লার বিপক্ষে। যারা এ টুর্নামেন্টের অন্যতম শক্তিশালী দলও বটে। এ বিষয়ে মার্শাল বলেন, ‘অবশ্যই টুর্নামেন্টের একটা টপ টিমকে আপনি যখন হারাবেন, তখন আপনার টিমের চেহারাই অন্যরকম থাকে। সেটা আমাদের ভেতরেও আছে। পরের ম্যাচ বড় দল কুমিল্লার বিপক্ষে। ঠিক আছে; কিন্তু মাঠে দেখা যাবে কি অবস্থা। আমরা নিজেদের মাঠেই প্রমাণ করতে চাই। অবশ্যই আমরা ফাইট ব্যাক করব। ওদের সাথে একটা ম্যাচে হেরেছি আমরা, এটা আমাদের মেইন টার্গেট থাকবে রিভেঞ্জ নেয়ার।’
মোস্তাফিজকে সামনে নিয়েই পরিকল্পনা সাজাচ্ছে রাজশাহী। যদিও সিলেট এবং ঢাকার উইকেটের পার্থক্য আছে, তবুও মার্শাল মনে করেন, মোস্তাফিজই পার্থক্য গড়ে দেবে। তিনি বলেন, ‘সিলেট ও এখানের (ঢাকার) উইকেটে পার্থক্য আছে। আর আমি মনে করি আমাদের বেস্ট স্ট্রেন্থ হচ্ছে মোস্তাফিজ। আপনি যদি আমাদের ম্যাচ দেখেন, সে আমাদের ম্যাচ জিতিয়েছে। সে, মিরাজ, আমাদের বোলিং অ্যাটাক অবশ্য ভালো। এটা আমাদের অনেক বড় প্লাস পয়েন্ট।’
কিন্তু বোলার যতই ভালো হোক, রাজশাহীর ব্যাটিং দুর্বল। বিষয়টা নিয়ে তারা কি ভাবছে? জানতে চাইলে মার্শাল বলেন, ‘অবশ্যই ওরা (ব্যাটসম্যানরা) ব্যক্তিগত পর্যায়ে চেষ্টা করবে। আগের ম্যাচগুলোতে হয়তো হয়নি। পরের ম্যাচগুলোতে বড় ইনিংস খেলবে। সৌম্য পরীক্ষিত খেলোয়াড়। নেটে ও অনেক কষ্ট করছে। আমরা আশাবাদী, ও কামব্যাক করবে। এবং মমিনুলও।’
আইএইচএস/জেআইএম