অবশেষে হাসল সাব্বিরের ব্যাট, এবার খুশি মাশরাফি!
মাসদুয়েক আগে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা জানিয়েছিলেন ২০১৯ সালের বিশ্বকাপের জন্য নিজের দল প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছেন তিনি। সেখানে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্দিষ্ট করে কারো নাম না বললেও সাত নম্বর পজিশনে সাব্বিরের দিকে যে তার চোখ আছে এবং সাব্বিরের ফর্মে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন টাইগার অধিনায়ক- সে ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে বেশ কয়েকবারই।
অনানুষ্ঠানিক কথোপকথনে বেশ কয়েকবারই তিনি বলেছেন সাব্বিরের ব্যাটে রানের জন্য অপেক্ষা করছেন তিনি। অবশেষে বিপিএলের ম্যাচে সিলেটে এসে শেষ ম্যাচে ব্যাট হাতে জ্বলে উঠেছেন সাব্বির, আগের ইনিংসগুলোতেও তাকে বেশ সাবলীল এবং স্বচ্ছন্দ মনে হয়েছে।
খেলেছেন নিজের সহজাত সব শট। এই যে সাব্বিরের রানে ফেরা, তার ব্যাট কথা বলা এবং আবার তেজোদ্দীপ্ত রুপে সাব্বিরের ফেরা- সেটা আজকের ম্যাচে প্রতিপক্ষ রংপুর রাইডার্স অধিনায়ক মাশরাফির জন্য চিন্তা ও উদ্বেগের কারণ হলেও বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক নিশ্চয়ই খুশি।
কেননা সাত নম্বর পজিশনে যে সাব্বিরের মতোই দ্যুতি ছড়ানো, তেজোদ্দীপ্ত ও কার্যকর একজনকেই খুঁজছে বাংলাদেশ দল এবং দলপতি মাশরাফি বিন মর্তুজা। যা পাওয়া যায় না সাত নম্বরে বিকল্প হিসেবে খেলা আরিফুল হক, মোহাম্মদ মিঠুন কিংবা মোহাম্মদ সাঈফউদ্দীনদের ব্যাটে।
আজকের ম্যাচে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই ওপেনার লিটন দাসের বিদায়ে দলের পুরো দায়িত্ব চলে আসে মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান থেকে ওপেনার বনে যাওয়া সাব্বিরের কাঁধে। দায়িত্ব নিয়ে শুরু থেকেই খেলতে থাকেন উইকেটের চারপাশে ব্যাট ঘুরিয়ে।
মুখোমুখি পঞ্চম বলে মাশরাফি বিন মর্তুজাকে দারুণ এক পুল শটে ইনিংসের প্রথম বাউন্ডারি মারেন সাব্বির। পরের ওভারে স্কুপ শটে বাউন্ডারিতে পাঠান শফিউল ইসলামকে। নিজের ফিফটি পেরুনোর আগে সাব্বিরের ব্যাটে চারের মার এ দুটিই।
এরপর শুধু হাঁকিয়েছেন ছক্কা। ইনিংসের ১২তম ওভারে নিজের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ১৩তম পঞ্চাশ ছোঁয়ার আগে ফরহাদ রেজার ডেলিভারিকে ২ বার, নাহিদুল ইসলাম ও সোহাগ গাজীর ডেলিভারিকে একবার করে হাওয়ায় ভাসিয়ে সীমানা ছাড়া করেন তিনি।
সব মিলিয়ে ২ চার ও ৪ ছক্কার মারে মাত্র ৩৪ বলে নিজের পঞ্চাশ পূরন করেন তিনি। ফিফটি পেরিয়েই থেমে যাননি সাব্বির। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে নিজের দ্বিতীয় এবং বিপিএলের প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে দুইটি সেঞ্চুরি হাঁকানোর আশা বাঁচিয়ে রেখে খেলতে থাকেন এ হার্ডহিটার ব্যাটসম্যান।
মাত্র ১৫ ওভারেই সাব্বিরের ব্যক্তিগত সংগ্রহ গিয়ে পৌঁছায় ৭৪ রানে। শেষের ৩০ বল থেকে সাব্বির ২৬ রান করতে পারলেই হয়ে যেত এবারের আসরের প্রথম ব্যক্তিগত সেঞ্চুরি। কিন্তু ক্যারিবিয়ান নিকলাস পুরান পরের ওভারগুলোয় তাণ্ডবলীলা চালালে তেমন ব্যাটিংয়ের সুযোগই পাননি সাব্বির।
যে কারণে ১৯ ওভার শেষে ৫০ বলে ৫ চার ও ৬ ছক্কায় সাব্বির অপরাজিত থাকেন ৮৫ রানে, যা এবারের আসরের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহ। শফিউল ইসলামের করা শেষ ওভার থেকে ১৫ রান নিতে পারলে হয়ে যাবে সেঞ্চুরি, এ ভাবনা থেকেই প্রথম বলে ছক্কা হাঁকানোর চেষ্টা করেন তিনি।
কিন্তু ঠিকঠাক ব্যাটে-বলে না হওয়ায় ক্যাচ উঠে যায় লংঅফে। পরম নির্ভরতায় সে বলটি তালুবন্দী করে সাব্বিরকে সাজঘরের পথ দেখিয়ে দেন রিলে রুশো। সেঞ্চুরি করতে না পারলেও এতোদিন ধরে চলা অফফর্ম দূর করে নিজের সেরা সময়ের আভাস ঠিকই দিয়েছেন সাব্বির রহমান রুম্মন। যা নিশ্চিতভাবেই স্বস্তি দেবে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাশরাফিকে।
এআরবি/এসএএস/আরআইপি