‘এমন অস্ট্রেলিয়াকে আর দেখতে চাই না’
১৭২ ম্যাচ পর ফলোঅন, এরপর সিডনি টেস্ট ড্র। ম্যাচে ফেরার কোনো সুযোগই পেলো না অস্ট্রেলিয়া। এমন অস্ট্রেলিয়াকে সর্বশেষ কবে দেখা গিয়েছিল?
অতীত ঘেঁটে-ঘুঁটে কেউ বের করতে পারেনি। কখনও এক ইনিংসে খারাপ অবস্থার মুখোমুখি হলে, অন্য ইনিংসে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল ব্যাগি গ্রিনরা। কিন্তু, এভাবে অসহায় আত্মসমর্পন করার ইতিহাস যে আর নেই! যে কারণে, ইতিহাসে প্রথমবারের মত অস্ট্রেলিয়ার মাটি থেকে টেস্ট সিরিজ জয় করে ফিরে আসছে বিরাট কোহলির নেতৃত্বাধীন ভারতীয় ক্রিকেট দল।
স্বাভাবিকভাবেই এমন অস্ট্রেলিয়াকে দেখে সাবেকদের মন খারাপ হতে বাধ্য। টিম পেইনদের না আছে কোনো নখ, না আছে কোনো দন্ত- নখ-দন্তগীন বাঘের মত শিকারের ওপর আছড়ে পড়বে যেখানে, সেখানে উল্টো নিজেরাই শিকার হয়ে বসে আছে।
অ্যাডিলেডে হার, পার্থে ঘুরে দাঁড়ালেও মেলবোর্নে লজ্জাজনক পরাজয়ের পর সিডনি টেস্টই অস্ট্রেলিয়ার সামনে সুযোগ ছিল, ভারতকে সিরিজ জিততে না দেয়ার। কিন্তু বৃষ্টিও বিরূপ আচরণ করলো পেইনদের সঙ্গে। যে কারণে টেস্ট হয়ে গেলো ড্র। ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হেরে গেলো অস্ট্রেলিয়া।
অসিদের এমন অসহায় আত্মসমর্পন দেখে সাবেক অধিনায়ক রিকি পন্টিং যেন নিজেকে আর সামলাতে পারলেন না। রাগে-ক্ষোভে, দুঃখে জানিয়েই দিলেন, এমন অস্ট্রেলিয়াকে আর দেখতে চাই না। যে দলের খেলোয়াড়দের নিজেদের মধ্যেই আত্মসমালোচনা নেই, এমন পরাজয়ের পর হাতাশা তৈরি হয় না, এমনকি পারস্পরিক কোনো সহযোগিতা নেই, সেই দলটিকে আর দেখার ইচ্ছা নেই।
পন্টিং মূলত ক্ষেপেছেন নাথান লিওন এবং মিচেল স্টার্কের আচরণের কারণে। নিজেদের প্রথম ইনিংসে কুলদীপ যাদবের বলে যখন নাথান লায়ন এলবিডব্লিউ হয়ে গেলেন এবং আম্পায়ার ইয়ান গোল্ড আঙ্গুল তুলে দিলেন, তখন লিওন সেটাকে কোনো চ্যালেঞ্জই করলেন না। আউটটা বিনা বাক্যব্যায়ে মেনে নিলেন। আম্পায়ার আঙ্গুল তোলার সঙ্গে সঙ্গে হাঁটা শুরু করলেন। নন-স্ট্রাইকিং প্রান্তে থাকা মিচেল স্টার্কও কোনো পরামর্শ দিলো না।
অথচ, তখনও অস্ট্রেলিয়ার হাতে দুটি রিভিউ বাকি ছিল। রিভিউ ব্যবহার করলে আউটের সিদ্ধান্তটি হয়তো পাল্টানোও যেতে পারতো। না হলেও, অন্তত শেষ মুহূর্তেও যে নিজেদের মধ্যে অদম্য, অপরাজেয় মনোভাব রয়েছে সেটা প্রকাশ পেতো।
কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার কাছে সিরিজ হারের পরও ক্রিকেটারদের মধ্যে হতাশা দেখতে না পাওয়ায় উল্টো হতাশ হয়েছেন রিকি পন্টিং। তিনি বলেন, ‘লিওনের আউটটির মাধ্যমেই আমার কাছে এই দলটি সম্পর্কে পুরোপুরি বার্তা চলে আসে, যে এই দলটি কি অবস্থায় রয়েছে। তাদের মানসিক অবস্থা কি ছিল এই ম্যাচে, সেটাও স্পষ্ট হয়ে যায়। তাদের মধ্যে কোনো নিবেদন কিংবা খেলায় এমন বাজে পরিস্থিতিতে যেভাবে হতাশা তৈরি হয়, তার কিছুই দেখিনি।’
পন্টিং খেলোয়াড়দের এই শারীরিক আচরণগুলো বিশ্লেষ করেই জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কেন তাদেরকে এমন দেখা যাচ্ছে? কেন খেলায় তাদের মনোনিবেশ নেই? নিজেদের হাতে দুটি রিভিউ থাকা সত্ত্বেও কেন সেগুলোর ব্যবহার করলো না? তাদের মানসিকতা নিয়েই এখন সন্দেহ তৈরি হয়েছে।’
আইএইচএস/এমকেএইচ