চতুর্থ দিন সকালে কি করবে বাংলাদেশ?
দিন শেষে জিম্বাবুয়ে থামলো ৩০৪ রানে। ফলোঅন থেকে ঠিক ১৮ রান পিছনে। বাংলাদেশ চাইলে হ্যামিল্টন মাসাকাদজার দলকে ফলোঅন করাতে পারে। এখন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ তা করাবেন কিনা? সেটাই দেখার। ভক্ত ও সমর্থকরা তা জানতেই উন্মুখ হয়ে আছে।
আজ (মঙ্গলবার) খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনেও উঠলো সে প্রশ্ন। তবে দিনের সেরা পারফরমার হিসেবে মঙ্গলবার সন্ধ্যারও বেশ পরে মিডিয়ার সামনে কথা বলতে আসা তাইজুল ইসলাম সে প্রশ্নের পরিষ্কার উত্তর দিতে পারেননি। তার কথা, এখনো সে বিষয়ে নাকি কথাই হয়নি।
এখন প্রশ্ন হলো আসলে কি করবে বাংলাদেশ? ইনিংস জয়ের লক্ষ্যে জিম্বাবুইয়ানদের বুধবার সকালেই ব্যাটিংয়ে পাঠাবে? নাকি জয় নিশ্চিত করতে এবং প্রতিপক্ষকে আরও বড়-সড় স্কোরের চাপ ও চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দিতে নিজেরা প্রথম সেশন ব্যাট করবে?
তা নিয়েই যত জল্পনা-কল্পনা আর গুঞ্জন। আসলে বিষয়টি একটু স্পর্শকাতর ও গোপনীয়। যেহেতু রাতে দু’দলই থাকবে বিশ্রামে, তাই আগে-ভাগে লক্ষ্য ও পরিকল্পনা জানাতে চাইবে না বাংলাদেশ।
দুটি সম্ভাবনাই আছে। জিম্বাবুয়েকে দ্বিতীয়বার ব্যাটিংয়ে নামাতেও পারে বাংলাদেশ। আবার নিজেরাও ঘন্টা দেড়েক-দুই ব্যট করে নিয়ে ৪২৫ থেকে সাড়ে চারশো রানের বড় সড় টার্গেটও ছুঁড়ে দিতে পারে।
এখন কোনটা করবে, তা জানতে আসলে কাল সকাল পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতেই হবে। কারণ, কৌশলগত কারণেই হয়তো আজ রাতে ঘোষণা আসবে না স্বাাগতিকদের পক্ষ থেকে। আজ জানিয়ে দিলে জিম্বাবুইয়ানরা লক্ষ্য-পরিকল্পনা ও সম্ভাব্য করণীয় স্থির করার বেশি সময় পাবে।
তাই জিম্বাবুয়েকে ভেবে-চিন্তে কৌশল আটা ও লক্ষ্য- পরিকল্পনা স্থির করার সময় কম দিতেই হয়ত কাল সকালে খেলা শুরুর আগে নিজেদের পরিকল্পনার কথা জানাবেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তবে উইকেটের যা অবস্থা, তাতে ‘সময় একটা বড় ফ্যাক্টর’।
কারণ বাংলাদেশ প্রথম সেশন ব্যাট করে ফেললে হয়ত বড় সড় স্কোরের চাপ থাকবে, কিন্তু জিম্বাবুয়ের ম্যাচ বাঁচানো তুলনামুলক সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। তখন পাঁচ সেশন ক্রিজে কাটালেই হয়ত ম্যাচ ড্র করা যাবে। আর সিলেটে জিতে এগিয়ে থাকা জিম্বাবুয়ের তো আর টাইগারদের মত জয়ের তাড়া নেই। তারা মানে মানে ম্যাচ ড্র করতে পারলেই খুশি। তাতেই সিরিজ বিজয়ের কৃতিত্ব অর্জিত হবে।
বাংলাদেশের চাই জয়। তাতেই সিরিজ ড্র করা যাবে। সেটা বড় সড় কৃতিত্ব না হলেও মুখ রক্ষা অবশ্যই। এখন জিততে সম্ভাব্য করণীয় স্থির করতে হবে টাইগারদের। মনে রাখতে হবে ৫২২ রানের বিশাল স্কোরের চাপ মাথায় নিয়ে শেষ পর্যন্ত ফলোঅন এড়াতে না পারলেও জিম্বাবুইয়ানরা প্রথম ইনিংসে প্রায় চার সেশন উইকেটে কাটিয়ে দিয়েছে। সেটাই চিন্তার ।
এখন কাল সকালে নিজেরা এক সেশন বা ঘন্টা দেড়েক ব্যাট করে জিম্বাবুয়েকে ব্যাটিংয়ে পাঠালে আবার একটা সেশন কমে যাবে। সে ক্ষেত্রে ২১৮ রানের ঘাটতি পুষিয়ে জিম্বাবুয়ে খুব বেশি ভাল খেললেও হয়ত চার বা পাঁচ সেশন ব্যাট করে সাড়ে তিনশোর মত রান করবে। তখন এক সেশনেরও কম সময়ে বাংলাদেশের জিততে ৫০-৬০ রান দরকার পড়বে। সেটাই ম্যাচ জেতার সহজ সমীকরণ হতে পারে।
আবার কাল সকালে ঘন্টা দুয়েক নিজেরা ব্যাট করে তারপর ১০ মিনিটের বিশ্রাম দিয়ে জিম্বাবুয়েকে ব্যাটিংয়ে পাঠানোর সম্ভাবনাও আছে। তাতে জিম্বাবুয়ানরা একটু হলেও ক্লান্ত থাকবে। এছাড়া চতুর্থ দিনের উইকেট দ্বিতীয় সেশন থেকে ভাঙ্গতেও পারে। সেটাও স্বাগতিকদের জন্য প্লাস পয়েন্ট হতে পারে।
তবে হবেই- সে গ্যারান্টিও নেই। কারণ আজ তৃতীয় দিন শেষ পর্যন্ত উইকেট ভাঙ্গেনি। বোলারদের পক্ষ নেয়নি। এখন শেষ পর্যন্ত যদি উইকেট আদৌ না ভাঙ্গে, বল না ঘোরে, তাহলে জিম্বাবুইয়ানদের ব্যাট করতে যত বেশি সময় দেয়া হবে, সেটাই মঙ্গল। তাতেই টাইগারদের সম্ভাবনা বেশি থাকবে। আর উইকেট কাল চতুর্থ দিন শেষ সেশনে ভাঙ্গা শুরু করলেতো কথাই নেই।
এআরবি/আইএইচএস/আরআইপি