তথ্যের অভাবে বন্ধ আইপিএল ফিক্সিংয়ের তদন্ত
পর্যাপ্ত তথ্য-প্রমাণের অভাবে মাঝ পথেই বন্ধ হতে চলেছে মাল্টি বিলিয়ন ডলারের ফ্রাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট আইপিএলে ঘটনা স্পট কিংবা ম্যাচ ফিক্সিংয়ের তদন্ত। তদন্তকারী কর্মকর্তা বিবি মিশ্রর বক্তব্য, ‘শুধু একজন ক্রিকেটার নন, অনেক ক্রিকেটারের সঙ্গে কথা বলেছি। কিন্তু সেই কথাবার্তা আদালতে কোনও গ্রহণযোগ্যতা নেই। আদালত চাইবে প্রমাণ। সুতরাং, তদন্তই বন্ধ করে দিতে হচ্ছে।’
আইপিএলকেই বলা হয়, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জুয়ার টুর্নামেন্ট। এই আইপিএলকে ঘিরে সারা বিশ্বে হাত ঘুরতে থাকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের। গ্রাম-গঞ্জে, পাড়া-মহল্লায় পর্যন্ত চলে আইপিএল নিয়ে জুয়ার বাণিজ্য। সেই আইপিএলে ফিক্সিংয়ের ঘটনা যে ঘটেছে সেটাও প্রমাণিত। যার কারণে শাস্তি পেতে হয়েছে বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার, কর্মকর্তা এবং ফ্রাঞ্চাইজিকে। চেন্নাই সুপার কিংস এবং রাজস্থান রয়েলসকে তো ২ বছর নিষিদ্ধও থাকতে হয়েছে এই অপরাধে।
অথচ, তথ্য-প্রমাণের অভাবে নাকি সেই আইপিএলে ম্যাচ কিংবা স্পট ফিক্সিংয়ের তদন্ত বন্ধ করে দিতে হচ্ছে তদন্তকারী কর্মকর্তা বিবি মিশ্রকে। ২০১৩ সালে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সাবেক বিচারপতি মুকুল মুদগালের নেতৃত্বে তৈরি হয়েছিল আইপিএল কেলেঙ্কারির জন্য বিশেষ তদন্ত কমিটি। সেই কমিটিরই সদস্য ছিলেন সাবেক আইপিএস অফিসার বিবি মিশ্র।
তদন্তকারী অফিসার বিবি মিশ্র এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘তথ্যপ্রমাণের অভাবে তদন্ত বন্ধ করে দিতে হচ্ছে।’ তাহলে কিহবে তদন্তের? জানা যাবে না অপরাধী কারা? হবে না তাদের শাস্তি?
বিবি মিশ্রের বক্তব্য, ‘পুরোটাই আদালতকে জানানো প্রয়োজন। প্রচুর সময় পেয়েছি। আমি নিজেকে আর তদন্তের সঙ্গে যুক্ত রাখতে রাজি নই।’ ক্রিকেটারদের জেরা করে কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি? তদন্তকারী অফিসারের বক্তব্য, ‘শুধু একজন ক্রিকেটার নন, অনেক ক্রিকেটারের সঙ্গে কথা বলেছি। কিন্তু সেই কথাবার্তা আদালতে কোনও গ্রহণযোগ্যতা নেই। আদালত চাইবে তথ্যপ্রমাণ।’
জুয়াড়িদের সঙ্গে যোগাযোগ করার প্রক্রিয়া কতটা হয়েছিল, সে প্রসঙ্গে বিবি মিশ্রের জবাব, ‘ওখানেই তো আটকে গেলাম। জুয়াড়িদের সঙ্গে যাবতীয় যোগাযোগ রাখা হয়েছিল। আশ্বাস দিয়েছিল, যাবতীয় তথ্যপ্রমাণ দেবে তারা; কিন্তু শেষদিকে জুয়াড়িরাই পিছিয়ে গেল। তাদের এক কথা, তথ্যপ্রমাণ দিলে জীবনহানির সম্ভাবনা থাকবে। পিছনে অনেক বড় বড় মানুষ রয়েছেন। ফলে এরপরে তদন্ত চালানোর কোনও মানে হয় না।’
যদিও বিবি মিশ্র জানিয়েছেন, তদন্তের বিযয়বস্তু ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআইর দুর্নীতি দমন শাখার সঙ্গে শেয়ার করতে চান। অবশ্য বিসিসিআইয়ের একটি মহলের একাংশ মনে করছে, শেষ পর্যন্ত কিছুই হবে না। আইপিএলের দুর্নীতি সংক্রান্ত রহস্য চিরকাল রহস্যই থেকে যাবে।
আইএইচএস/এমএস