পঞ্চপাণ্ডবের উত্তরসূরি বাছাই করলেন মাশরাফি
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অন্যতম চিন্তার কারণ ‘জুনিয়রদের’ গ্রুপ। দলের পাঁচ সিনিয়র মাশরাফি বিন মর্তুজা, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহীম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ছাড়া আর কারো ওপরই যেন নির্ভর করা যায় না। বিচ্ছিন্নভাবে কিছু ম্যাচে ভালো করলেও ধারাবাহিক সার্ভিস পাওয়া যাচ্ছে না কারও কাছ থেকেই।
এমতাবস্থায় ২০১৯ সালের বিশ্বকাপের জন্য একটি স্থিতিশীল দল গড়াই যেন চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের জন্য। ইংল্যান্ডের মাটিতে হতে যাওয়া বিশ্বকাপটির বাকি আর মাত্র কয়েক মাস। বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশ দল দেশের মাটিতে চলতি বছরে খেলবে জিম্বাবুয়ে ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। নতুন বছরে খেলা রয়েছে নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে।
এই কয়েকটা সিরিজের মধ্য দিয়েই এগুতে হবে বিশ্বকাপের জন্য ব্যাপারটা জানা আছে টিম ম্যানেজম্যান্টেরও। যার প্রথমটা শুরু হচ্ছে রোববার, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের মাধ্যমে। তুলনামূলক দুর্বল প্রতিপক্ষ হওয়ায় রোডেশিয়ানদের বিপক্ষে পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগ ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু সাকিব ও তামিম ইনজুরিতে দলের বাইরে থাকায় সে পথে হাঁটেনি টিম বাংলাদেশ।
অবশ্য সাকিব-তামিম পুরোপুরি সুস্থ থাকলেও যে বাংলাদেশ দল যে নতুন খেলোয়াড়দের নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারতো, সেটাও একবাক্যে বলে দেয়া যায় না। কেননা দেশের ক্রিকেটের পাইপলাইনে আন্তর্জাতিক মানের খুব বেশি ক্রিকেটার নেই। যা স্বীকার করে নিয়েছেন খোদ বাংলাদেশ দলের অধিনায় মাশরাফি বিন মর্তুজা।
এই না থাকার মধ্যেই এগুতে হবে সম্ভাব্য সেরা দল গড়ার দিকে, লক্ষ্য থাকবে বিশ্বকাপে ভালো কিছু করার। ওয়ানডে ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠত্বের আসরে দল গড়ার ক্ষেত্রে পঞ্চপান্ডব থাকবেন, এদের নিয়ে কোনো সংশয় নেই। এই পাঁচজন বাদেও দলে জায়গা বাকি থাকে আরও ছয়টি। সে ছয় পজিশনের জন্য কোনো খেলোয়াড়কে এখনই ভেবে রেখেছে কি-না দল? বা এমন কোনো পরিকল্পনা অধিনায়কের রয়েছে কি-না তা জানা গেলো জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের আগে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে।
নির্ধারিত সময়ের প্রায় ঘণ্টাখানেক পরে শুরু হওয়া সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক মাশরাফি জানালেন, পঞ্চপান্ডব ছাড়াও ভরসার অন্যতম জায়গায় রয়েছেন দুই তরুণ মোস্তাফিজুর রহমান ও লিটন কুমার দাস এবং ডানহাতি পেসার রুবেল হোসেন। এছাড়া বাকি জায়গাগুলোর জন্য খেলোয়াড় বাছাইয়ের জন্য সামনের সিরিজগুলো এবং দেশের ঘরোয়া ক্রিকেট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করেন টাইগার অধিনায়ক।
বিশ্বকাপের ব্যাপারে পরিকল্পনা জানাতে গিয়ে মাশরাফি বলেন, ‘আল্লাহ যদি সবাইকে সুস্থ রাখে তাহলে কিছু প্লেয়ার আছে যাদের নিয়ে আপনার চিন্তা করার সুযোগ। নাম বললে হয়তো বা সাকিব, মুশফিক, তামিম, রিয়াদের ক্ষেত্রে হয়তো আমাদের চিন্তা করার সুযোগ কম। একই সাথে মোস্তাফিজ, রুবেল ও লিটন আছে; এরাও ভালো করছে। তবে একটি কথা আগেও বলেছি, ব্যাকআপ প্লেয়ার আমাদের অনেক কম। বিশেষ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পারফর্ম করার মতো ব্যাকআপ।’
এসময় দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের মান আস্তে আস্তে ভালো হচ্ছে দেখে কিছুটা স্বস্তি দেখা যায় মাশরাফির কণ্ঠে। ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে ভালো ব্যাকআপ তৈরি হতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
অধিনায়ক বলেন, ‘এখন আস্তে আস্তে ঘরোয়া ক্রিকেটে শক্তিশালী হচ্ছে, ক্রিকেটাররাও নিজে থেকে খেলতে চাচ্ছে। এরকম খেলতে থাকলে সুযোগ তৈরি হবে এবং ব্যাকআপ খেলোয়াড় তাড়াতাড়ি চলে আসবে। সেই ক্ষেত্রে আমি মনে করি কিছু পজিশন আছে সেখানে বিশ্বকাপের কথা যদি চিন্তা করি সাইফউদ্দীন, ফজলে রাব্বি অবশ্যই সেটা। কারণ সাকিবের যদি আল্লাহ না করুক সমস্যা হয়ে যায়, যেমন এখন ও সমস্যায় আছে, তখন কাউকে না কাউকে দিয়ে বাঁ-হাতি স্পিন ও ব্যাটসম্যানের অভাব পূরণ করার ব্যাপারে আমাদের চিন্তা করতে হতে পারে।’
‘অবশ্য এত কম সময়ে এটা সম্ভব না। কিন্তু সুযোগগুলো আমাদের দেখতে হবে, নিতে হবে। সেই সব জায়গা চিন্তা করেই কিন্তু এরা ১৫ সদস্যে এসেছে। একই সময়ে এটাও ঠিক আন্তর্জাতিক ম্যাচগুলো হারা যাবে না। সো আমাদের আরো হিসেবি হতে হবে। এবং সেরা একাদশ ওমনভাবেই সাজাতে হবে। আস্তে আস্তে একজন দুইজন করে হয়তো বা আমাদের দেখতে হবে।’
এসএএস/আইএইচএস/আরআইপি