নিজেকে সাকিবের বিকল্প ভাবছেন না ফজলে রাব্বি
দীর্ঘ প্রায় দেড় দশক ঘরোয়া ক্রিকেট খেলার পর পেয়েছেন স্বপ্নপূরণের ডাক। প্রথমবারের মতো সুযোগ পেয়েছেন জাতীয় দলের চূড়ান্ত স্কোয়াডে। ঘরোয়া ক্যারিয়ারে বারবার দেখেছেন নিজের উত্থান-পতন। শুরুতে ছিলেন মারমুখী ব্যাটসম্যান, এখন নিজেকে পরিণত করেছেন নির্ভরযোগ্য একজন হিসেবে। সাথে বোলিংটাও করেন নিয়মিতই।
ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো খেলার ফলস্বরূপ ডাক পেয়ে যান ‘এ’ দলে। সেখানে নিজেকে প্রমাণ করেই সুযোগ পেয়েছেন জাতীয় দলে। দেড় দশকের ঘরোয়া ক্রিকেটের ক্যারিয়ারটা সহজ ছিলো না ফজলে রাব্বির। জাতীয় দলের নির্বাচকেরা তাকে দলে নেয়ার সময় বার্তা দিয়ে রেখেছেন যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও অপেক্ষা করছে ‘চ্যালেঞ্জিং টাইম’।
কেননা ফজলে রাব্বিকে খেলতে হবে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের জায়গায়, তার অভাব পূরণে। অন্তত দুই নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু ও হাবিবুল বাশার সুমন জানিয়েছেন এমনটাই। কারণ সাকিবের মতো তিন থেকে সাত সবখানেই খেলতে পারেন ফজলে রাব্বি, সাথে রয়েছে কার্যকরী স্পিন বোলিং। ফলে পুরোপুরি সাকিবের মতো না হোক, অন্তত কাছাকাছি সার্ভিস পেলেও সন্তুষ্ট থাকবে দল।
তবে ত্রিশ বছর বয়সী ফজলে রাব্বি অমন ভাবে ভাবছেন না ব্যাপারটা। তার মতে সাকিবের অভাব পূরণ করার মতো খেলোয়াড় নেই কোনো। ফজলে রাব্বি নিজের ভূমিকায় দলের প্রয়োজনে যেকোনো কিছু করার জন্য প্রস্তুত বলে জানান। সোমবার জিম্বাবুয়ে সিরিজকে সামনে রেখে শুরু হওয়া অনুশীলন ক্যাম্পের প্রথম দিনেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন বাঁহাতি স্পিনিং অলরাউন্ডার ফজলে রাব্বি।
তিনি বলেন, ‘দলে আমার রোলটা ঠিক আছে, কি করতে হবে তাও বুঝেছি। কিন্তু সাকিব ভাই এর জায়গা পূরণ করা তো আর কারও পক্ষে সম্ভব না। আমি মূলত ব্যাটিং অলরাউন্ডার। ব্যাট করতে ভালোবাসি। পাশাপাশি দলের প্রয়োজনে বোলিংও করে থাকি। যদি দলের প্রয়োজন হয় তাহলে অবশ্যই এই রোলটা পালন করার চেষ্টা করব। তবে সাকিব ভাই এর জায়গা নেয়া না, আমি যেটা পারি সেটাই করার চেষ্টা করব।’
জাতীয় দলের স্কোয়াডে ডাক পাওয়ার সময় থেকেই শুনছেন তাকে খেলতে হবে সাকিবের জায়গায়, সাকিবের ভূমিকায়। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের জায়গায় খেলাটা যেকোনো দিনই একটা বাড়তি চাপ। এছাড়াও রয়েছে প্রথমবারের মতো জাতীয় দলে খেলার চাপ, সবমিলিয়ে খুব একটা ফুসরতের সুযোগ নেই ফজলে রাব্বির।
এতোদিন ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলেছেন নিজের মতো করে, ছিলো না বাড়তি চাপ। এখন খেলতে হবে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে, কোটি সমর্থক ও দলের প্রত্যাশার চাপ নিয়ে। তবে তার সাথে রয়েছে ঘরোয়া ক্রিকেটের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা। সবমিলিয়ে চাপের ব্যাপারটিকে কিভাবে দেখছেন তিনি?
ফজলে রাব্বির উত্তর, ‘না আমার কাছে ওইরকম (বাড়তি চাপ) মনে হচ্ছে না। এই যে আপনাদের সাথে কথা হচ্ছে, উপভোগ করছি এসব। আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। দেখি না কি হয় (হাসি)। আমি তো এখনও খেলিনি। খেললে বুঝা যাবে আমি কতোটা চাপহীন ক্রিকেট খেলতে পারব।’
বাংলাদেশের ক্রিকেটে ফিটনেস সবসময়ই বড় একটি ইস্যু। বিশেষ করে কখনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে না খেলা ত্রিশোর্ধ্ব কোনো ক্রিকেটারের জন্য রীতিমতো চিন্তার কারণ এটি। সেদিক থেকে নিজের ফিটনেস নিয়ে খুব একটা চিন্তার কারণ নেই বলেই মনে করেন ফজলে রাব্বি। তবে উন্নতির কোনো শেষ নেই, তিনিও চান ফিটনেস আরও বাড়িয়ে নিতে।
‘এবারের প্রিমিয়ার লীগটা ভাল গিয়েছে আমার। তবে নিজের কাছে মনে হয়েছে ফিটনেসটা যদি আরেকটু ভাল হত, তাহলে আমার রান ৭০০’র জায়গায় ৮০০-৮৫০ হতে পারত। তখনই আমার মাথায় চিন্তা ঢুকেছে যে করেই হোক নিজের ফিটনেসের উন্নতি করতে হবে। আমার সৌভাগ্য, তখন আমাকে বাংলাদেশ এ দলে ডাকা হয়েছিল। সেখানে দুই আড়াই মাসের মত একটা ফিটনেস ক্যাম্প হয়েছে। ওই ক্যাম্পটা আমাকে খুব কাজে দিয়েছে। আমি খাওয়া দাওয়া নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছি। ওজন কমিয়েছি। বয়স নিয়ে যেই কথা হচ্ছে, আমি আসলে এসব নিয়ে ভাবি না। আমি যদি ফিট থাকি ও আমার পারফর্ম্যান্স থাকে তাহলে বয়স কোন বিষয় না।’
এসএএস/এমএস