ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

সাকিবের ব্যাপারে কোনো ঝুঁকি নেবে না বোর্ড : আকরাম খান

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশিত: ১০:৩৪ পিএম, ১৪ অক্টোবর ২০১৮

তাকে নিয়ে কত কথাই না হয়েছে। প্রথম আক্ষেপ, আহ হা! সাকিবের বাঁ-হাতের কনিষ্ঠা আঙ্গুলটা বুঝি গেছে। আর কোনো দিন ভাল হবে না! পুরোপুরি ঠিক হবে না! বাঁ-হাতের কনিষ্ঠা আঙ্গুল যদি ঠিকই না হয়, তাহলে সাকিব বোলিং আর ব্যাটিং করবেন কি করে? তবে কি বিশ্বসেরা অলরআউন্ডারের ক্যারিয়ারের অপমৃত্যু ঘটতে যাচ্ছে?

এরপর শুরু হলো নতুন সংশয়-শঙ্কা, ‘আচ্ছা সাকিব তো বলছেন, তার ভাল হতে তিন থেকে ছয় মাস লেগে যেতে পারে। তবে কি তার পক্ষে আগামী বছর মে মাসে বিশ্বকাপ ক্রিকেটে অংশ নেয়া সম্ভব হবে না? কোটি বাঙ্গালীর প্রাণের ক্রিকেটার, টাইগারদের প্রাণ ভোমরা আর মূল চালিকাশক্তি সাকিবকে ছাড়াই কি তবে বিশ্বকাপ খেলতে হবে বাংলাদেশকে?

এমন রাজ্যের দুশ্চিন্তা এসে বাসা বেঁধেছিল লাখো ভক্ত সমর্থকের মনে। তবে আশার খবর, সে সব সংশয়ের কালো মেঘ কেটে গেছে। অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে অনেকটাই নির্ভার সাকিব। উদ্বেগ-উৎকন্ঠা গেছে কমে। বাঁ হাতের কনিষ্ঠা আঙ্গুলের ইনফেকশনও অনেকটাই ভালোর দিকে।

হযরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে রোববার দুপুরে পা রেখে উপস্থিত প্রচার মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডার বলে দিলেন, ‘এখন আমার হাতে ব্যথা নেই। খুব ভালো অনুভব করছি।’

এখানেই শেষ নয়। হাতের সর্বশেষ অবস্থার কথা জানাতে গিয়ে সাকিব বলেন, ‘আসলে এটা এমন একটা প্রবলেম, যার কোনো টাইম ফ্রেম নাই। হতে পারে যে, সামনের মাসেও খেলতে পারি। গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আমার হাতের স্ট্রেন্থ কতক্ষণে ফিরে আসে। রিহ্যাবের মাধ্যমে তাড়াতাড়ি ফিরে আসতে পারে। যদি আসে তাহলে সামনের মাসেও খেলতে পারি। আবার রিহ্যাবের পর যদি ব্যথা অনুভব করি তাহলে আবার ওয়েট করতে হবে যে, কখন সার্জারি করতে পারব। এটা আসলে খুব আনসার্টেইন। আবার একটা জিনিস ভালো যে, ইনফেকসন হবার পর এখন সেটা কমে গেছে। এখন সার্জারি বাদেও খেলা যেতে পারে। যদি সেটা হয় তাহলে তা হবে সবথেকে বেস্ট অপশন। বাট, এটা আসলে কনফার্ম বলাটা মুশকিল। হতে পারে একমাস পরেও খেলতে পারি, আবার ছয় মাসও লাগতে পারে। আশা করি একমাস পরই খেলতে পারব। তারপরও যেহেতু আঙ্গুলে শক্তি সঞ্চারের ব্যাপার আছে। একমাসে হয়তো হবে না। একটু সময় বেশিই লাগবে।’

এটুকু বলে শেষ করেন সাকিব। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার তথা বাংলাদেশের টেস্ট আর টি-টেয়েন্টি অধিনায়কের কথার সারমর্ম হলো, ‘আঙ্গুলের ইনফেকশন প্রায় সেরে গেছে। এখন ব্যাথাও নেই। ক্রমাগত ব্যাথা ও তারপর আঙ্গুলে পুঁজ ও পানি জমে বাঁ-হাতের কনিষ্ঠা আঙ্গুল যে দুর্বল বা কমজোরি হয়ে পড়েছিল, তার শক্তি ফিরে আনতে এখন রিহ্যাব করছেন। আঙ্গুলের পুরো শক্তি ফিরে আসলে আর ব্যাথা না থাকলে মাঠে নামার পথে আর কোন বাঁধাই থাকবে না। আপাততঃ সেটাই লক্ষ্য সাকিবের।

ধরা যাক, এক মাসের মধ্যে কিংবা সর্বোচ্চ দেড়মাসে ব্যাথা ও সমস্যামুক্ত আঙ্গুলে পূর্ণ শক্তি ফিরে আসলো। তখন কি সাকিবকে মাঠে দেখা যাবে? এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে আঙ্গুলের পুরো শক্তি ফিরে আসলে আর ব্যাথা না থাকলে তো ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে খেলাও সম্ভব। তা কি খেলতে পারবেন সাকিব?

আঙ্গুল পুরো ভাল হয়ে গেলে আর ব্যাথা মুক্ত আঙ্গুলের পুরোপুরি আগের মত কার্যকর হয়ে উঠলে মানে আঙ্গুলের পূর্ণ শক্তি ফিরে আসাই কি শেষ কথা? মানে এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে সাকিব সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠলেও কি বিসিবি তাকে মাঠে ফেরার অনুমতি দেবে?

এসব প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছিলেন আকরাম খানও। বলার অপেক্ষা রাখে না, সাকিব একা নন। পুরো জাতীয় দল পরিচর্যা, পরিচালনা ও তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব যে স্ট্যান্ডিং কমিটির ওপর, সেই ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান রোববার রাতে জাগো নিউজের সাথে আলাপে জানান, ‘আমরা সাকিবের মুখ থেকে তার সর্বশেষ অবস্থা শুনে অনেক ভাল লাগছে। বেশ আশ্বস্তও বোধ করছি। এটা খুব ভাল সংবাদ। যেভাবে পত্রিকায় আসছিল যে, সে অনেক দিনের জন্য খেলতে পারবে না। অনেক দিন লাগবে ভাল হতে। আমরা না সবাই ঘাবড়েই গিয়েছিলাম। একটা চিন্তাও এসে ভর করেছিল। তবে এখন সাকিবের মুখ থেকে সব শুনে ভাল লাগছে।’

তবে আকরাম বুঝিয়ে দিয়েছেন, সাকিব যে টাইম ফ্রেমের কথা বলছেন, মানে এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে তার আঙ্গুল পুরোপুরি ঠিক হয়ে গেলেও মাঠে ফেরার ব্যাপারে, তারা মানে বোর্ড আগের যে কোন সময়ের চেয়ে অনেক বেশি সতর্ক ও সাবধানী থাকবে।

তাই তো মুখে এমন কথা, ‘এতটুকু ঝুঁকি থাকলে কিংবা কোনরকম সমস্যার উদ্রেক ঘটতে পারে এমন সংশয় থাকলে আমরা তাকে মাঠে নামতে দিব না। আমাদের ফিজিও এবং সংশ্লিষ্ট সবার সাথে বসে কথা বলে সম্মিলিত মতামতের ওপর ভিত্তি করেই সাকিবের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব। মোটকথা, আমাদের ক্রিকেটের জন্য যেটা ভাল হবে, সেটাই করব।’

এআরবি/আইএইচএস

আরও পড়ুন