এশিয়া কাপ দিয়েই শুরু হয়েছে যুব দলের বিশ্বকাপ মিশন
সাধারণত বাংলাদেশের অনুর্ধ্ব-১৯ দলে আগের ব্যাচের বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়কে রেখে দেয়া হয়, যাদের কি-না ২০ বছর হয়ে যায়নি। কিন্তু এবারের যুব দলে আগের ব্যাচ থেকে রাখা হয়েছে শুধুমাত্র একজন খেলোয়াড়কে। তিনি অধিনায়ক তৌহিদ হৃদয়। এছাড়া দলের প্রায় সবাই-ই নতুন মুখ।
এ দলকে নিয়েই চলতি মাসে যুব এশিয়া কাপের সেমিফাইনাল খেলেছে বাংলাদেশ। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে মাত্র ২ রানের ব্যবধানে হারতে হয়েছে ভারতের বিপক্ষে। সে ম্যাচে অভিজ্ঞতার ছাপ ছিলো স্পষ্ট। তবে অনভিজ্ঞ দল নিয়ে খেলার কারণটা ছিলো মূলত ২০২০ সালের যুব বিশ্বকাপের জন্য নতুনদের প্রস্তুত করা।
এশিয়া কাপ শেষে যুব দল এবার যাবে শ্রীলঙ্কায়। সেখানে দ্বীপ দেশটির বিপক্ষে ৫টি ওয়ানডে ও ২টি চারদিনের ম্যাচ খেলবেন তৌহিদ-প্রান্তিকরা। লঙ্কা সফরে যাওয়ার আগে যুবারা আপাতত নিজেদের প্রস্তুত করে নিচ্ছেন শেরে বাংলায় অনুশীলনমূলক প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে।
অনুশীলনের ফাঁকে দলের কোচ নাভিদ নওয়াজ কথা বলেছেন সংবাদ মাধ্যমের সাথে। জানিয়েছেন এশিয়া কাপ থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে যুব দলের বিশ্বকাপ মিশন। লক্ষ্য অন্তত বিশ্বকাপের ৬ মাস আগেই স্থিতিশীল একটি স্কোয়াড দাঁড় করানো।
যুব দলের কোচ বলেন, ‘আসলে ছেলেদের শেখার শুরু হয়েছে সবশেষ এশিয়া কাপ থেকেই। আপনি যদি টুর্নামেন্টে ফিরে তাকান, এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচেই ১০ জনের অভিষেক করিয়েছি। সেখান থেকেই আমাদের শুরু। আর আমরা ভাল করেছি, এশিয়া কাপের সেমিফাইনাল খেলেছি, খুবই ক্লোজ ম্যাচে শক্তিশালী ভারতের কাছে হেরেছি। এই শ্রীলঙ্কা সফরও গুরুত্বপূর্ণ। আমরা শ্রীলঙ্কা সফরের শুরুতে দুটি অঘোষিত টেস্ট ম্যাচ খেলব, এরপর পাঁচটি ওয়ানডে ম্যাচ। এই ম্যাচ গুলো স্কোয়াডের তরুণ ক্রিকেটারদের অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য বড় ভূমিকা পালন করবে।’
যুব ক্রিকেটে দ্বিপাক্ষিক সিরিজগুলো খুব একটা গুরুত্ব বহন করে না সাধারণত। বহুজাতিক টুর্নামেন্টগুলোর জন্য নিজেদের প্রস্তুত করাই থাকে এসব সিরিজের লক্ষ্য। আসন্ন শ্রীলঙ্কা সিরিজটাও অনেকটা এমনই বলে জানান যুব দলের কোচ।
নাভিদ বলেন, ‘বোর্ড চাইবে যুব দল থেকেই জাতীয় দলের জন্য ক্রিকেটার তৈরি করতে। প্লেয়ারদের গড়ে তুলে ভবিষ্যতে পাইপলাইন সমৃদ্ধ করাটাই বিসিবির মূল পরিকল্পনা। কিন্তু আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি, ফলাফল, জয় এবং জয়ের সংস্কৃতি ক্রিকেটার গড়ে তোলার জন্য ভাল। আপনি যদি জয়ের মধ্যে থাকেন, তাহলে আপনি ভাল ক্রিকেটার পাবেন। সুতরাং ফলাফলটাও গুরুত্বপূর্ণ। হ্যাঁ, বড় দৃষ্টিকোণে জাতীয় দলের জন্য প্লেয়ার তৈরি করা আসল লক্ষ্য।’
সদ্য সমাপ্ত যুব এশিয়া কাপে দেখা গিয়েছে বোলিংটা যেমনই হোক, ব্যাটিংয়ের কারণে পিছিয়ে পড়তে হয়েছে বাংলাদেশের যুবাদের। সে সমস্যা সমাধানে ২৩ জনের প্রাথমিক স্কোয়াডের সবার ব্যাটিং পরখ করার চিন্তা করছেন দলের কোচ নাভিদ। তবে সবাইকে যথেষ্ঠ সুযোগ দেয়ার পক্ষেই রয়েছেন তিনি।
‘এই মুহূর্তে আমাদের ২৩ জনের একটা স্কোয়াড রয়েছে। নির্বাচকদের প্রস্তাব হলো ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সবাইকে সুযোগ দিয়ে দেখতে, কে কেমন করছে এবং কে কার থেকে ভাল। ধীরে ধীরে এটা করা হচ্ছে, প্লেয়াররা যেন ধারাবাহিকভাবে সুযোগ পায়। কারণ দেখা যায় কেউ এক দুই ম্যাচ খেলেছে। আমাদের যথেষ্ট সুযোগ দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। তাদেরকে নিজেদের খেলাটা বুঝতে দেয়ার সময় দিতে হবে। একই সাথে যথেষ্ট ক্রিকেটারকে সুযোগ দিতে হবে, যেন আমরা বিশ্বকাপের ৬ মাসের আগেই সেরা ১৫ জনের স্কোয়াড দাঁড় করাতে পারি।’
এসএএস/পিআর