জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডেতে নতুন চমক মিজানুর!
বাংলাদেশ কি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দল নিয়ে কোনরকম পরীক্ষা-নিরীক্ষায় যাবে? বিশ্বকাপকে সামনে রেখে বিকল্প বা ব্যাকআপ পারফরমার খুঁজে বের করতে কি সম্ভাবনাময় তরুণদের কাউকে সুযোগ দেয়া হবে? যেহেতু সামনে টানা খেলা, তাই তরুণদের মধ্য থেকে বিকল্প খোঁজার মিশনে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজই হতে পারে সেরা ক্ষেত্র।
কিন্তু দুটি কারণে টিম ম্যানেজমেন্ট ও নির্বাচকরা থমকে দাঁড়িয়েছিলেন। এক মূল শক্তির অন্যতম উৎস তামিম-সাকিব নেই। তাদের ছাড়া এমনিতেই শক্তি কম। তারওপর নতুনদের সুযোগ দিতে গেলে শক্তির ভারসাম্য কমে যাবে আরও। যেহেতু রেটিংয়ের ব্যাপারটাও মাথায় রাখতে হচ্ছে, হারলে রেটিং পয়েন্ট কমবে। র্যাংকিংয়ের অবনমনের ঝুঁকি। দুয়ে মিলে নির্বাচকরা ছিলেন দ্বিধা-সংশয়ে।
কিন্তু বোর্ড প্রধান নিজেই যখন বলে ফেলেন, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দলে এক্সপেরিমেন্ট চালানোর কথা, তখন আর কিইবা করার থাকে? যদিও বিসিবি সভাপতি সিনিয়রদের কাউকে বিশ্রাম দেবার কথা বলেননি। শুধু উল্লেখ করেছেন, নতুনদের প্রাথমিক ক্যাম্পে ডাকবে। ভাল মনে হলে রাখবে।
ভিতরের খবর, টিম ম্যানেজমেন্ট ও নির্বাচকদের ভাবনাও তেমন। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু ও টিম ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজনও জানালেন, বড় ধরনের রদ বদলের সুযোগ-সম্ভাবনা নেই। তবে দু’একজনকে পরখ করার সম্ভাবনা আছে। সেটা এমনিতেই আছে।
তাদের দু’জনার একই কথা, ‘ওপেনার তামিম আর অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান যেহেতু নেই, তাই দুটি জায়গা খালি। ওই শূন্যতা পুরণের জন্য এমনিতেই দুজনকে সুযোগ দিতে হবে।’
নান্নুর কথায় পরিষ্কার, সেখানে নতুন কাউকে দেখা যেতেও পারে। এর মধ্যে লিটন দাসের সাথে বিকল্প ওপেনার হিসেবে রাজশাহীর মিজানুর রহমানের সম্ভাবনার কথা শোনা যাচ্ছে।
জাতীয় লিগের দ্বিতীয় রাউন্ড শুরুর আগে জাগো নিউজের সাথে আলাপে নান্নু জানিয়েছিলেন, লিটন দাসের সাথে অন্তত আরও দুজন ওপেনারের কথা ভাবা হচ্ছে। শান্তর অবস্থা খুঁটিয়ে দেখা হবে। আর রাজশাহীর ওপেনার মিজানের (মিজানুর রহমান) ওপর চোখ আছে আমাদের। কাকতালীয়ভাবে দুজনই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। মিজান অনবদ্য শতরান করেছেন। রংপুরের বিপক্ষে তার ব্যাট থেকে এসেছে ১৬৫ রান জলমলে ইনিংস। আর বাঁ-হাতি নাজমুল হোসেন শান্তও সেঞ্চুরি পূরণ করে ১৬০’র ঘরে পা রেখেছেন।
যদিও পর্যাপ্ত ব্যাটিং পারফরমার আছেন। তারপরও মিজানুরকে পরখ করার জন্য জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রাথমিক দলে নেয়া হতে পারে। রাজশাহীর এ ২৭ বছর বয়সী যুবাকে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে স্কোয়াডে দেখলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
আগেই জানা ১৫ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের প্রস্তুতি। তার অন্তত দুই-তিন দিন আগে ঘোষণা করা হবে দল। ওয়ানডে স্কোয়াড যাদের নিয়ে সাজানো হবে, তারা কেউ ১৫ অক্টোবর থেকে জাতীয় লিগের যে তৃতীয় রাউন্ড শুরু হবে, তাতে অংশ নিতে পারবেন না।
এই না পারা নিয়েই খানিক সংশয় দেখা দিয়েছে। নির্বাচকরা খেলোয়াড় সংখ্যা নিয়ে খানিক বিপাকে। কারণ, ১৬ জনের দল হলে দ্বাদশ ব্যক্তির বাইরে আরও চারজন থাকবে। তাদের পক্ষে দেশের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আসর জাতীয় লিগ খেলা সম্ভব হবে না।
মোটা দাগে বলতে গেলে বলতে হয়, দল যত বড় হবে, তত বেশি ক্রিকেটারকে ড্রেসিং রুম ও ডাগ আউটে বসে থাকতে হবে। তাই নির্বাচকরা দোটানায়, দল কত জনের হবে, ১৪ জনের নাকি ১৬ জনের?
সংখ্যা চূড়ান্ত না হলেও ক্রিকেটার বাছাই বা নির্বাচনের কাজ প্রায় শেষ। নির্বাচকরা আগামী দু’এক দিনের মধ্যে দল সাজিয়ে বোর্ডে জমা দেবেন। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু আজ (মঙ্গলবার) সকালে জাগো নিউজকে তা নিশ্চিত করেছেন। জাতীয় লিগ দেখতে এখন রাজশাহী অবস্থান করা মিনহাজুল আবেদিন নান্নু মুঠোফোনের আলাপে জাগো নিউজকে এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘আমরা আগামীকালই (বুধবার) হয়ত দল বোর্ডে জমা দিয়ে দেব। তবে দলের সংখ্যা নিয়ে খানিক দোটানায় আছি। আমরা চাচ্ছি ১৬ জনকে ডাকতে। তাহলে আর আলাদা করে ক্রিকেটার ডাকার দরকার হবে না; কিন্তু সমস্যা হলো, ১৬ জন হলে চার থেকে পাঁচ জন বসে থাকবে। আমরা চাচ্ছি ক্রিকেটারদের খেলার মধ্যে রাখতে। ১৫ অক্টোবর জাতীয় দলের প্র্যাকটিস শুরু। একইদিন আবার জাতীয় লিগের তৃতীয় রাউন্ডও শুরু। এখন ১০/১১ অক্টোবরের মধ্যে দল চূড়ান্ত হয়ে গেলে স্কোয়াডে জায়গা পাওয়া ক্রিকেটারদের জাতীয় লিগে খেলা হবে না। তাই সংখ্যা নিয়ে কোচের সাথে কথা বলছি। দেখি এ বিষয়ে কোচ স্টিভ রোডস কি বলেন!’
এআরবি/আইএইচএস/এমএস