‘চাওয়ার চেয়েও বেশি দিয়েছে লিটন-মিরাজ’
ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা ইঙ্গিত দিয়েছিলেন এমন একজনকে ওপেনিং করতে নামাবেন যার কিনা আগে কখনো ইনিংস সূচনা করার অভিজ্ঞতা নেই। যেই কথা সেই কাজ, ফাইনাল ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে লিটন কুমার দাসের সাথে ব্যাট হাতে নেমে পড়েন অফস্পিনিং অলরাউন্ডার তরুণ মেহেদি হাসান মিরাজ।
অবশ্য এমনটা ছাড়া উপায়ও ছিলো না বাংলাদেশ দলের সামনে। কেননা ফাইনালের আগে খেলা পাঁচ ম্যাচে উদ্বোধনী জুটির সর্বোচ্চ রান ছিল মাত্র ১৬। ফলে একপ্রকার বাধ্য হয়েই মিরাজকে দিয়ে জুয়ার বড় চালটা খেলেন অধিনায়ক মাশরাফি।
সৌম্যকে নিচে পাঠিয়ে মিরাজকে ওপেন করতে পাঠানোর বাজিতে পুরোপুরি সফল বাংলাদেশ অধিনায়ক। আসরে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ পায় শতরানের উদ্বোধনী জুটি, মিরাজ-লিটন মিলে যোগ করেন ১২১ রান। অথচ মিরাজকে ওপেনিং করতে পাঠানোর সময় দলের চাহিদা ছিলো প্রথম দশ ওভার নির্বিঘ্নে কাটিয়ে দেয়া।
ম্যাচের পরে সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই জানিয়েছেন অধিনায়ক মাশরাফি। মিরাজ-লিটনের জুটিতে দল আশার চেয়েও বেশি পেয়েছে বলে জানান টাইগার অধিনায়ক। তিনি বলেন, ‘আসলে আমরা ভাবছিলাম যে আমাদের টপঅর্ডার পুরো টুর্নামেন্টেই ব্যর্থ হয়েছে। তাই আমরা সৌম্যকে রেখে মিরাজকে শুরুতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেই। যাতে করে শেষে আমাদের সাতজন বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান থেকে যায়। আমরা চাচ্ছিলাম মিরাজ যাতে অন্তত প্রথম ১০ ওভার কাটিয়ে দেয়। এরপর মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানরা দায়িত্ব নেবে। কিন্তু আমি মনে করি তারা আমাদের চাহিদার চেয়ে অনেক বেশি দিয়েছে।’
অধিনায়কের চাহিদা ছিলো প্রথম ১০ ওভার, কিন্তু মিরাজ উইকেটে ছিলেন প্রায় ২১ ওভার। লিটনের সাথে গড়েন ১২১ রানের অসাধারণ এক জুটি। লিটন-মিরাজের জুটির সময় মনে হচ্ছিল বড় সংগ্রহ গড়বে বাংলাদেশ। কিন্তু পরের মিডল অর্ডারদের ব্যর্থতায় মাত্র ২২২ রানেই থেমে যায় বাংলাদেশের ইনিংস।
এখানেই পিছিয়ে যায় মাশরাফির দল। ম্যাচ শেষে হাহাকার দেখা দেয় ২০-৩০ রানের জন্য। মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানরা দায়িত্ব নিলে যা খুব সহজেই করতে পারত বাংলাদেশ। কিন্তু মুশফিক-মাহমুদউল্লাহরা দায়িত্ব নিতে ব্যর্থ হওয়াতেই সম্ভব হয়নি ভালো স্কোর গড়া।
মাশরাফি বলেন, ‘সত্যি বললে, যখন মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ ব্যাট করছিল তখন আমরা একটা জুটি আশা করেছিলাম। আমরা ২১ ওভারে ১২০ রানের মতো ছিল। আমরা যদি তখন পরবর্তী ১৪-১৫ ওভার ঝুঁকিহীন ক্রিকেট খেলতাম তাহলে অনায়াসেই ৬০-৭০ করতে পারতাম। মুশফিক ঠিকভাবে খেলতে পারেনি, রানআউটগুলোও বেশ পুড়িয়েছে। বড় শট খেলার প্রবণতাও অনেকটা দায়ী। ভালো শুরুর পরে বড় স্কোরের দিকে নজর দেয়া উচিৎ ছিল। আমাদের অন্তত ২৫০-২৬০ রান করতে হতো এই উইকেটে।’
এসএএস/এমএস