লিটনকে বিতর্কিত আউট না দিলে হয়তো চ্যাম্পিয়ন হতো বাংলাদেশই
লিটন কুমার দাসকে যখন বিতর্কিতভাবে আউট দেয়া হলো থার্ড আম্পায়ার রড টাকারের পক্ষ থেকে, তখন বাংলাদেশের রান ছিল ১৮৮। তখনও ৫৪ বল বাকি ছিল বাংলাদেশের হাতে। তার সঙ্গে জুটিতে তখন ছিলেন সৌম্য সরকার। দু’জন মিলে তখন ৩৭ রানের জুটি গড়ে ফেলেছিলেন।
বাংলাদেশের রানকে এ লিটন আর সৌম্য মিলে একটা ভালো অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। এমন পরিস্থিতিতে হঠাৎ, কুলদ্বীপ যাদবের বলে পরাস্ত হন লিটন এবং মহেন্দ্র সিং ধোনি স্ট্যাম্প ভেঙে দেন মুহূর্তের মধ্যেই। ফিল্ড আম্পায়ার টিভি আম্পায়ারের কাছে পাঠিয়ে দেন সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য।
টিভি আম্পায়ার নানা অ্যাঙ্গেল থেকে দেখলেন লিটনের পা লাইন স্পর্শ করেছে কি না। বারবারই দেখা যাচ্ছিল, স্ট্যাম্প ভাঙ্গার আগেই লাইন স্পর্শ করে ফেলেছিল। তার আগে ইমরুল কায়েসকে এলবি আউট দেয়ার সময় রিভিউ নেয়া হলে মাত্র দু’বার দেখে সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছিল। বল আউটসাইড লাইনে থাকার পরও আম্পায়ার্স কল বহাল রাখা হলো কেবলমাত্র আম্পায়ারের সম্মান রক্ষার্থে।
অথচ, লিটনের পায়ের পজিশন শেষ পর্যন্ত ফোর এক্স জুম ক্যামেরা দিয়ে দেখা হলো। জুম ক্যামেরা দিয়ে প্রথমবার দেখার পরই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়ে যায়। তবুও টিভি আম্পায়ার রড টাকার তিনবার দেখলেন জুম ক্যামেরা দিয়ে, ম্যাগনিফাইং গ্লাসের মত করে। স্ট্যাম্পে রাখা ক্যামেরা দিয়েও দেখা হলো। সব জায়গাতেই দেখা গেলো, লিটনের পা বিহাইন্ড দ্য লাইন ছিল না।
তবুও টিভি আম্পায়ার ঘোষণা করলেন এটা আউট। বেনিফিট অব ডাউট সব সময় যায় ব্যাটসম্যানের পক্ষে। অথচ, এই ম্যাচে গেলো সেটা বোলারের পক্ষে। ভারতের কল্যাণে আইসিসিও পুরনো আইন পরিবর্তন করে নতুন নতুন রূপে উপস্থাপন করছে।
লিটন আউট হওয়ার পর বাংলাদেশের সংগ্রহ শেষ পর্যন্ত গিয়ে দাঁড়ালো ২২২ রানে। অথচ, লিটন ক্রিজে থাকলে সৌম্যর সঙ্গে জুটিটা আরেকটু লম্বা করতে পারলে অন্তত ২০-৩০টা রান বাড়তে পারতো বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে। হয়তো বা, ইনিংসটা গিয়ে ২৫০ কিংবা ২৬০ হয়ে যেতো।
অথচ, লিটনকে বিতর্কিত আউট দিয়ে সাজঘরে পাঠিয়ে দেয়া হলো। ১১৭ বলে তিনি করলেন ১২১ রান। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের বোলারদের সাঁড়াসি আক্রমণের মুখে একেবারে ইনিংসের শেষ বলে গিয়ে জিতলো ভারত। মাত্র ৩ উইকেটের ব্যবধানে। লিটন মাঠে থাকতে পারলে যে রানটা বেশি করতেন, হয়তো বা শেষ পর্যন্ত সে রানের ব্যবধানেই জিততো বাংলাদেশ। হতে পারতো এশিয়া কাপের নতুন চ্যাম্পিয়ন। নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম কোনো ট্রফি জয়ের স্বাদ পেতো মাশরাফিরা।
কিন্তু কোনোটাই হলো না, লিটনকে বিতর্কিতভাবে আউট করে দেয়ার কারণে। যদিও লিটনছাড়া বাংলাদেশের আর কোনো ব্যাটসম্যানই দাঁড়াতে পারেনি। বড় কোনো স্কোর করতে পারেননি। লিটনের বিতর্কিত আউটের পর বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরাও এই পরাজয়ের জন্য, তীরে এসে তরি ডোবা কিংবা শেষ মুহূর্তে স্বপ্ন ভঙ্গের জন্য অন্যতম দায়ী।
আইএইচএস/