আফগান প্রিমিয়ার লিগে আইকন গেইল-আফ্রিদি-রাসেল
ফ্রাঞ্চাইজিভিত্তিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের জোয়ার এখন যেন সারা ক্রিকেট বিশ্বে। আইপিএলের দেখানো পথে এখন প্রতিটি দেশই হাঁটছে করপোরেট বাণিজ্যের সংক্ষিপ্ত সংস্করণের এই লিগ আয়োজনের। যার ঢেউ লেগেছে আফগানিস্তানে পর্যন্ত। আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড শুরু করতে যাচ্ছে আফগান প্রিমিয়ার লিগের (এপিএল)। যেখানে অংশ নিচ্ছে ৫টি দল। ৫ অক্টোবর থেকে আরব আমিরাতের অন্যতম ভেন্যু শারজায়।
এপিএলের উদ্বোধনী আসরে অংশ নেয়া ৫টি দলের প্লেয়ার ড্রাফট অনুষ্ঠিত হয়ে গেছে সোমবার দুবাইতে। যেখানে ৪০জন বিদেশী ক্রিকেটারসহ ড্রাফটে তোলা হয়েছে মোট ৩৫০ জন ক্রিকেটারকে। ৫ দলের আইকন ছিলেন ৫জন। মূল বিষয় হলো, ৫ দলে একমাত্র আফগান আইকন ক্রিকেটার ছিলেন রশিদ খান। বাকি ৪জনই বিদেশি।
এর মধ্যে ক্যারিবীয় ২জন এবং বাকি দু’জন হলেন পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ডের। টি-টোয়েন্টির সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন, ক্যারিবীয় ব্যাটিং দানব ক্রিস গেইলের সঙ্গে আরেক ক্যারিবীয় মারদাঙ্গা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটার আন্দ্রে রাসেলের সঙ্গে এপিএলে আইকন হিসেবে পাকিস্তান থেকে নেয়া হয়েছে শহিদ আফ্রিদি এবং নিউজিল্যান্ড থেকে নেয়া হয়েছে ব্রেন্ডন ম্যাককালামকে।
গেইল-রাসেলরা এখনও খেলার মধ্যে থাকলেও আফ্রিদি-ম্যাককালাম অনেক আগেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে গুডবাই জানিয়ে দিয়েছেন। মাঝে-মধ্যে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলে থাকেন তারা। যদিও সেটা খুবই স্বল্প পরিসরে। এক কথায় ক্রিকেটকে চূড়ান্তভাবে বিদায় জানানোর সময় হয়ে গেছে এই দুই ক্রিকেটারের। তবুও এপিএলের কর্মকর্তারা আফ্রিদি এবং ম্যাককালামের ক্রেজকে কাজে লাগাতে তাদেরকে রেখেছে আইকন হিসেবে।
৫ ফ্রাঞ্চাইজির প্রতিটি দলই একজন করে আইকন ক্রিকেটারকে দলে টেনে নিয়েছে। তবে যেহেতু একমাত্র আফগানি আইকন হচ্ছেন রশিদ খান, সে কারণে বাকি চারটি ফ্রাঞ্চাইজির জন্য আরও চারজন আফগানি তারকাকে বাধ্যতামূলক করে দেয়া হয়েছে। যাদের মধ্য থেকে একজন করে দলে নিতে পেরেছে বাকি চারটি ফ্রাঞ্চাইজি।
যে পাঁচটি দল অংশ নিচ্ছে এপিএলে তারা হচ্ছে, পাকতিয়া, কাবুল, বলখ, নাঙ্গরহার এবং কান্দাহার। আফগানি আইকন রশিদ খানকে দলে নিয়েছে কাবুল। আফ্রিদিকে নিয়েছে পাকতিয়া, গেইলকে নিয়েছে বলখ, আন্দ্রে রাসেলকে নাঙ্গরহার এবং কান্দাহার দলে টেনেছে ব্রেন্ডন ম্যাককালামকে। পাকতিয়া আফ্রিদির পাশাপাশি স্থানীয় তারকা ক্রিকেটার মোহাম্মদ শাহজাদকে নিতে পেরেছে দলে। বলখ দলে নিয়েছে মোহাম্মদ নবিকে। নাঙ্গরহার দলে নিয়েছে মুজিব-উর রহমানকে (মুজিব জাদরান)। এছাড়া কান্দাহার দলে টেনেছে আফগানিস্তান জাতীয় দলের খেলোয়াড় আসগর আফগানকে।
প্রতিটি দল ১৭ থেকে ১০জন করে খেলোয়াড় নিতে পেরেছে দলে। যাদের মধ্যে অন্তত ৫জন থাকতে হবে বিদেশি। এটা হচ্ছে বাধ্যতামূলক। বাংলাদেশ থেকে সুযোগ পেয়েছেন মাত্র ২জন ক্রিকেটার। তারা হলেন তামিম ইকআল আর মুশফিকুর রহীম। তাদের দু’জনকেই নিয়েছে নাঙ্গরহার।
পাকতিয়া স্কোয়াড : শহিদ আফ্রিদি (আইকন), থিসারা পেরেরা, মোহাম্মদ শাহজাদ, ক্যামেরন ডেলপোর্ট, শরফুদ্দিন আশরাফ, সামিউল্লাহ সেনওয়ারি, ক্রিস জর্ডান, ফাহিম আশরাফ, লুক রাইট, আমাতুল্লাহ ওমরজাই, রহমানুল্লাহ গারবাজ, জিয়া উরহামান আকবর, কলাম ম্যাকলেয়ড, তাহির আদিল, ইউসুফ জাজাই, ফজল জাজাই।
কাবুল স্কোয়াড : রশিদ খান (আইকন), লুক রনকি, হজরত জাজাই, কলিন ইনগ্রাম, ফরিদ মালিক, জাভেদ আহমাদি, সোহেল তানভির, লরি ইভান্স, ওয়েইন পার্নেল, শহিদুল্লাহ, মুসলিম মুসা, আফসার খান জাজাই, মুহাম্মদ আহসান আলি খান, জহির শিরজাদ, ফিতরাত খাওরি, উসমান আদিল, শওকত জামান, নাসির তোতাখিল এবং জামির খান।
বলখ স্কোয়াড : ক্রিস গেইল (আইকন), কলিন মুনরো, মোহাম্মদ নবি, রবি বোপারা, আফতাব আলম, গুলবাদিন নাইব, মোহাম্মদ ইরফান, বেন লাফলিন, কামরান আকমল, কাইস আহমেদ, উসমান গনি, ইকরাইন আলিখিল, রায়ান টেন ডেসকাট, তারিক স্কানিকাই, আসাদুল্লাহ মাতানি, সামিউল্লাহ সালারজাই, ফারহান জাখিল, মোহাম্মদ নওয়াজ, দরবিশ রাসুলি।
নাঙ্গরহার স্কোয়াড : আন্দ্রে রাসেল (আইকন), তামিম ইকবাল, মুজিব-উর রহমান (মুজিব জাদরান), বেন কাটিং, শফিকুল্লাহ শফিক, নজিবুল্লাহ তারাকি, মিচেল ম্যাকক্লেনঘান, মুশফিকুর রহীম, মোহাম্মদ হাফিজ, রহমত শাহ, নাভিন-উল হক, জহির খান, সন্দীপ লামিচানে, ফজল হক, ইমরান জানাত, নসরতুল্লাহ কোরাইশি, খাইবার ওমর, ইব্রাহিম জাদরান, ফল নাজাই।
কান্দাহার স্কোয়াড : ব্রেন্ডন ম্যাককালাম (আইকন), ওয়াহাব রিয়াজ, আসগর আফগান, পল স্টার্লিং, নজিবুল্লাহ জাদরান, করিম জানাত, টাইমাল মিলস, স্যাম বিলিংস, ইফতিখার আহমেদ, হামজা হোতাক, করিম সাদিক, সাইয়েদ শিরজাদ, মোহাম্মদ নাভিদ, ওয়াকার, আবদুল বাকি, ওয়াহিদ শাফাক, ওয়াকারুল্লাহ ইসহাক এবং নাজির জামাল।
আইএইচএস/এমএস