এশিয়া কাপেও ম্যানেজার সংকট, সুজনই সম্ভাব্য বিকল্প!
প্রথাগত ক্রিকেট বা ট্যুর অপারেশন্স ম্যানেজার বলতে যা বোঝায়, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে তা ছিল না। ক্রিকেট অপারেশন্স ম্যানেজার সাব্বির খান শাফিনের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তিনি যেতে পারেননি। কেন তার যাওয়া হয়নি? তা নিয়ে সংশয় থেকেই গেছে।
বোর্ড থেকে জানানো হয়েছে সাব্বির খানের ভিসা হয়নি। ভিসা বিষয়ক জটিলতার কারণেই নাকি তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ যেতে পারেননি। সাব্বির খান না যাওয়ায় বিসিবির হেড অফ মিডিয়া কমিউনিকেশন্স রাবিদ ইমামই ভারপ্রাপ্ত ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেছেন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর শেষ। এশিয়া কাপ দরজায় কড়া নাড়ছে। আর মাত্র ৯ দিন পর, ১৫ সেপ্টেম্বর আরব আমিরাতে শুরু হচ্ছে এশীয় ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠত্বের আসর। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে জাতীয় দল। ইতোমধ্যেই ১৫ সদস্যের দল চূড়ান্ত। পবিত্র হজব্রত পালন শেষে যুক্তরাষ্ট্রে স্ত্রী ও কন্যার সাথে থাকা সাকিব এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের সিপিএল খেলায় ব্যস্ত থাকা মাহমুদউল্লাহ ছাড়া বাকি ১৩ জন নিয়মিত অনুশীলন করছেন শেরে বাংলায়। সব কিছু ঠিকমত চললেও এশিয়া কাপের জন্য বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার নিয়োগ হয়নি এখনো।
এশিয়াা কাপে জাতীয় দলের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করবেন কে? মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত তা ঠিকই হয়নি। ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান কাল রাত পর্যন্ত তা জানাতে পারেননি। জাগো নিউজের সাথে আলাপে ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির ম্যানেজার বলেন, ‘ম্যানেজার কে হবেন, তা চূড়ান্ত হয়নি। আশা করছি কাল (আজ বুধবার) না হয় বৃহস্পতিবারের মধ্যে ঠিক করা হবে।’
এদিকে বিসিবিতে জোর গুঞ্জন, গত চার বছরে বেশি সময় ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করা খালেদ মাহমুদ সুজনই সম্ভবত ম্যানেজার হয়ে আরব আমিরাত যাচ্ছেন।
বিসিবির সম্ভাব্য ম্যানেজারের শর্টলিস্টে খালেদ মাহমুদ সুজনের নাম আছে। জানা গেছে, আরেকজনও আছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের পছন্দের তালিকায়। তিনি হলেন বিসিবি পরিচালক ও অন্যতম শীর্ষ পরিচালক জালাল ইউনুস।
প্রসঙ্গতঃ সাব্বির রহমান রুম্মনের শাস্তি চূড়ান্ত করতে গত ১ সেপ্টেম্বর বোর্ডে এসেছিলেন বিসিবি প্রধান। সেখানে বোর্ডের প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দীন চৌধুরী সুজন, জালাল ইউনুস, আকরাম খান, লোকমান হোসেন ভূঁইয়া এবং ইসমাইল হায়দার মল্লিকসহ এবং কজন শীর্ষ পরিচালকের সাথে অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে এশিয়া কাপের ম্যানেজার নিয়েও কথা হয়। তাতে ম্যানেজার হিসেবে খালেদ মাহমুদ সুজন আর জালাল ইউনুসের নাম উঠে আসে।
তবে জাগো নিউজের সাথে আলাপে জালাল ইউনুস জানিয়েছেন, তার পক্ষে হয়তো ম্যানেজারের গুরু দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নাও হতে পারে। কারণ ওই সময় তার ব্যক্তিগত ও পারবারিক ব্যস্ততা আছে। ম্যানেজার হয়ে যাওয়া মানে প্রায় তিন সপ্তাহের জন্য জাতীয় দলের সাথে ব্যস্ত হয়ে থাকা। জালাল ইউনুস মুখ ফুটে না বললেও ভিতরের খবর, আগামী দুই মাস পর তার মেয়ের বিয়ে। খুব স্বাভাবিকভাবেই তার পক্ষে সামনের দিনগুলোয় দেশের বাইরে থাকা কঠিন।
এদিকে খালেদ মাহমুদ সুজনও জাতীয় দলের সর্বশেষ বিদেশ সফরর মানে ওয়েস্ট ইন্ডিজ মিশনে দলের সঙ্গে ছিলেন না। প্রসঙ্গতঃ জাগো নিউজের সাথে আলাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের কয়েক দিন আগেই খালেদ মাহমুদ জানিয়েছিলেন, তিনি ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, এশিয়া কাপে তাকে আবার পুরনো পরিচয়ে দেখা যেতে পারে। মানে, আরব আমিরাতে এশীয় ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠত্বের আসরে হয়ত জাতীয় দলের এই সাবেক অধিনায়কই থাকবে ম্যানেজারের দায়িত্বে।
সত্যিই খালেদ মাহমুদ সুজন ম্যানেজার হয়ে যাবেন কি যাবেন না, তা জানা যায়নি। তার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও সফল হওয়া যায়নি। ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। জানা গেছে তিনি এখন একটি বেসরকারি ক্রিকেট কোচিং একাডেমির কাজে ব্যস্ত। সেটা রাজধানী ঢাকা নয়। রাজশাহীতে।
সপ্তাহে কয়েকদিন তার সেখানেই কাটে। এর বাইরে ব্যক্তিগত জীবনেও খানিক সমস্যা আছে তার। যে কারণে বোর্ডেও আগের চেয়ে কম দেখা যায় তাকে। কাজেই শেষ পর্যন্ত সুজন ম্যানেজার হতে রাজি হবেন কি না, তা নিয়েও আছে সংশয়।
এআরবি/আইএইচএস/পিআর