মার্কিন মুলুকে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি
যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেট কতটা জনপ্রিয়? প্রশ্ন করলে উত্তর আসতে বেশ খানিকক্ষণ সময় লাগতে পারে। কারণ, মার্কিন মুলুকে ক্রিকেট জনপ্রিয়ই নয়। আইসিসিরও পৃথিবীর মোড়ল রাষ্ট্রতিতে ক্রিকেটকে জনপ্রিয় করার কোনো চেষ্টা আছে বলে মনে হয় না। কারণ, নানা সমস্যার কারণে যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনকে বহিস্কার করে রেখেছে আইসিসি। যদিও, দেশটির ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনকে সঠিক পথে আনার নানা পদক্ষেপ তারা নিচ্ছে; কিন্তু ক্রিকেট উন্নয়নে যেমন নেয়া দরকার তেমন নিচ্ছে কি না সন্দেহ।
যে কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটি মাত্র ক্রিকেট স্টেডিয়াম। তাও ফ্লোরিডায়। লোডারহিলের সেন্ট্রাল ব্রোওয়ার্ড রিজিওনাল পার্ক। যুক্তরাষ্ট্রের একেবারে এক প্রান্তে, আটলান্টিকের তীরে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছাকাছি। ক্রিকেট আয়োজনের লক্ষ্যেই ৭০ মিলিয়ন ইউএস ডলার ব্যায়ে নির্মাণ করা হয় স্টেডিয়ামটি ২০০৭ সালে। ২০০৮ সালে এসে প্রথম এখানে কোনো ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়।
২০০৮ সালের জানুয়ারিতে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে একটি টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হয়। নাম দেয়া হয় মার্টিন লুথার কিং টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। ভারত, পাকিস্তান এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্থানীয় ক্রিকেটারদের নিয়ে আয়োজন করা হয় এই টুর্নামেন্টটি।
এরপর একই বছর মে মাসে আয়োজন করা হয় আরেকটি টুর্নামেন্ট। মাস্টার্স ক্রিকেট নামে ওই টুর্নামেন্টে খেলেছিলেন জাভেদ মিয়াঁদাদ, রিচি রিচার্ডসন এবং মোহাম্মদ আজহারুদ্দিনরা।
তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট প্রথম আয়োজন করা হয় ২০১০ সালের মে মাসে। মুখোমুখি হয় নিউজিল্যান্ড এবং শ্রীলঙ্কা। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের দুটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় এই মাঠে। সিরিজে ১টি করে ম্যাচ জিতে নেয় নিউজিল্যান্ড এবং শ্রীলঙ্কা দু’দলই। সিরিজ হয় ড্র।
এরপর এই মাঠে আরও চারটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে এই মাঠে। চারটি ম্যাচেরই আয়োজক ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এর মধ্যে ফল হয়েছে তিনটিতে। একটি বৃষ্টিতে ভেসে যায়। ফল হতে পারেনি। তিনটিতেই জয় পেয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড এবং ভারত। দুটিতে নিউজিল্যান্ড এবং দুটিতে ভারত। এরমধ্যে ভারতের বিপক্ষে যে ম্যাচটি ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতেছে, সেটিতে ব্যবধান ছিল মাত্র ১ রান।
২০১৬ সালের আগস্টে অনুষ্ঠিত ওই ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২৪৫ রান করার পরও জিততে কষ্ট হয়েছিল। ভারত ২৪৪ রান তুলে ফেলেছিল। শেষ বলে মহেন্দ্র সিং ধোনি আউট না হলে ভারতই হয়তো জিতে যেতো।
অর্থ্যাৎ, ঘাষের এই মাঠটি ১৬৭ গজ ব্যাসার্ধের অসাধারণ একটি ক্রিকেট ভেন্যু। দর্শক ধারণক্ষমতা মাত্র ৫ হাজার। তবে ১৫ হাজার পর্যন্ত উন্নীত করার সুযোগ রয়েছে। বর্তমান অবস্থায় গ্যালারির যে অবস্থান, তা খুবই চমৎকার। গ্যালারিতে এত সুন্দর করে আর কোনো মাঠেই খেলা উপভোগ করা যায় না।
সেন্ট্রাল রিজিওনাল পার্ক স্টেডিয়ামটিতে অনেক বেশি রান হয়ে থাকে। তিনটি স্কোর রয়েছে ২০০ প্লাস। এর মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সর্বোচ্চ ২৪৫ রান। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভারতের ২৪৪। এছাড়া ২ উইকেট হারিয়ে ২০৯ রানও করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১৭৭ রান রয়েছে একটি ইনিংস। সেঞ্চুরি রয়েছে ২টি। সর্বোচ্চ ১১০ রান করেছিলেন ভারতের লোকেশ রাহুল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের এভিন লুইস করেছিলেন ১০০ রান। ক্রিস গেইলের রয়েছে অপরাজিত ৮৫ রান।
গেইল এবার না থাকলেও এভিন লুইস রয়েছেন। যদিও সেন্ট কিটসে প্রথম ম্যাচে মোস্তাফিজের সামনে মাত্র ২ রান করে আউট হয়েছিলেন লুইচ। আন্দ্রে ফ্লেচার আউট হয়েছিলেন ৭ রান করে। আন্দ্রে রাসেল ৩৫ রান করে বৃষ্টি বিঘ্নিক ম্যাচে জিতিয়ে দেন ক্যারিবীয়দের।
এবার ফ্লোরিডায় মার্কিন মুলুকের একমাত্র স্টেডিয়ামটিতে খেলতে নামবে বাংলাদেশ। এই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে খেলতে নামবে বাংলাদেশ দল। রানপ্রসবিনী স্টেডিয়ামটিতে দ্বিতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্যেই খেলতে নামবে বাংলাদেশ।
আইএইচএস/জেআইএম