কোহলির টেস্টে ভারতকে হারালো ইংল্যান্ড
দুই ইনিংস মিলিয়ে বরাবর ২০০ রান। প্রথম ইনিংসে ১৪৯। পরের ইনিংসে ৫১। এজবাস্টন টেস্টটা ইংল্যান্ডের জন্য হতে পারে এক হাজারতম; কিন্তু টেস্টকে যদি বলা হয় এটা বিরাট কোহলির একার, তাহলে কম বলা হবে না; কিন্তু সমস্যা হলো- এই টেস্টেই হেরে গেলো বিরাট কোহলির ভারত। এজবাস্টনে ৫ ম্যাচের সিরিজের প্রথম ম্যাচটিতে সফরকারী ভারতকে ৩১ রানে হারিয়ে দিয়েছে স্বাগতিক ইংল্যান্ড।
জয়ের জন্য দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের প্রয়োজন ছিল ১৯৪ রান। তবে, বিরাট কোহলির ৫১ রান সত্ত্বেও ১৬২ রানে অলআউট হয়ে গেলো ভারতীয়রা। বেন স্টোকস মাত্র ১৮ রান দিয়ে একাই নেন ৪ উইকেট। ২টি করে উইকেট নেন জেমস এন্ডারসন এবং ক্রিস ব্রড। ১টি করে উইকেট নেন স্যাম কুরান এবং আদিল রশিদ।
টেস্টের চতুর্থ দিনের শুরুতে নাটকীয়তা অপেক্ষা করছিল। ইংল্যান্ড আর জয়ের মাঝে বাধা ছিলেন কেবলমাত্র বিরাট কোহলি। প্রথম ইনিংসে তো তিনি একাই ১৪৯ রান করেছিলেন। বিরাট কোহলি। যদিও কয়েকবার জীবন পেয়েছিলেন তিনি। ইংল্যান্ডের মাটিতে এর আগে কোহলির একটি হাফ সেঞ্চুরিও ছিল না। অথচ, এই এক এজবাস্টন টেস্টে সেঞ্চুরি এবং হাফ সেঞ্চুরি- দুটোই পেয়ে গেলেন তিনি।
আগেরদিন দ্বিতীয় সেশনের শেষ দিকে যখন ইংল্যান্ডকে ১৮০ রানে অলআউট করে দিয়েছিল ভারত তখন সফরকারীরা জয়ের নেশাতেই বলতে গেলে বুঁদ হয়ে গিয়েছিল। তবে জয়ের জন্য ১৯৪ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরু থেকেই বিপর্যয়ের মুখে ছিল ভারতীয়রা। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকার কারণে দিনের শেষ দিকে মাত্র ৩৬ ওভার ব্যাটিং করে ১১০ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারায় ভারত।
৬ রানে মুরালি বিজয়কে ফেরান স্টুয়ার্ট ব্রড। ১৩ রান করে ব্রডের বলে ফিরে যান শিখর ধাওয়ান। লোকেশ রাহুলও করেন ১৩ রান। তিনি আউট হন বেন স্টোকসের বলে। আজিঙ্কা রাহানে ২ রান করে স্যাম কুরানের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন। ১৩ রান করে রবিচন্দ্রন অশ্বিন ফিরে গেলে চতুর্থদিন বিকালেই শঙ্কায় পড়ে যায় ভারত।
তবে ৭৮ রানে ৫ উইকেট পড়ার পর দিনেশ কার্তিককে নিয়ে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন বিরাট কোহলি। ৩২ রানের জুটি গড়ে তৃতীয় দিনের মত খেলা শেষ করেন তারা দু’জন। আজ মাঠে নামার পরই মাত্র ২ রান যোগ করে জেমস অ্যান্ডারসনের বলে সাজঘরে ফিরে যান দিনেশ কার্তিক। এরপর মাঠে নামেন হার্দিক পান্ডিয়া।
কোহলির সঙ্গে ২৯ রানের জুটি গড়েন পান্ডিয়া। এরই মধ্যে বিরাট কোহলি হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করে ফেলেন। তবে ৫১ রান করার পর বেন স্টোকসের বলে এলবিডব্লিউর শিকার হন বিরাট কোহলি। জোরালো আবেদনের মুখে আলিম দার আউটের আঙ্গুল তুললে কোহলি রিভিউর আবেদন করেন। দেখা গেলো, বল ছিল ফুল লেন্থের এবং পায়ে না লাগলে সোজা লেগ স্ট্যাম্পে আঘাত হানতো।
শেষ পর্যন্ত আলিমদারের সিদ্ধান্তই বহাল থাকলো এবং ভারতকে চরম বিপর্যয়ের মধ্যে রেখে বিদায় নেন কোহলি। শেষ দিকে ইশান্ত শর্মাকে নিয়ে কিছুটা চেষ্টা করেছিলেন হার্দিক পান্ডিয়া। ৩১ রান করেন তিনি। ইশান্ত শর্মা করেন ১১ রান। কিন্তু স্টোকস আর আদিল রশিদের সামনে টিকতে পারনেনি ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা। অলআউট হয়ে গেলেন ১৬২ রানে। মোট ৫৪.২ ওভার ব্যাটিং করতে পারলো তারা। অর্থ্যাৎ, চতুর্থ দিন লাঞ্চের আগেই হেরে গেলো ভারত।
প্রথম ইনিংসে ২৮৭ রান করে অলআউট হয় ইংল্যান্ড। জবাবে বিরাট কোহলির ১৪৯ রানের সুবাধে ভারত করে ২৭৪ রান। ১৩ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ১৮০ রানে অলআউট হয় ইংল্যান্ড। একাই ৫ উইকেট নেন ইশান্ত শর্মা। ৩ উইকেট নেন অশ্বিন এবং ২ উইকেট নেন উমেষ যাদব। ১৯৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ১৬২ রানে অলআউট হয়ে গেলো ভারত।
আইএইচএস/আরআইপি/জেআইএম