ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

এবার সেই রুবেলেই বাজিমাত

ক্রীড়া প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১২:৫১ পিএম, ২৯ জুলাই ২০১৮

ম্যাচের বাকি ২ ওভার, প্রতিপক্ষের প্রয়োজন ৩৪ রান। এই সমীকরণ দেখলে বাংলাদেশ ক্রিকেটের পাড় ভক্তের মনে সবার আগে আঘাত করবে 'নিদাহাস ট্রফি'র ফাইনাল ম্যাচের কথা। সেদিন এই সমীকরণের সামনে দাঁড়িয়ে শেষ ওভারের আগেরটি করতে এসেছিলেন রুবেল হোসেন। বিলিয়েছিলেন ২২টি রান, বাংলাদেশ ম্যাচটা হেরে যায় একদম শেষ বলে।

সেই দুঃস্মৃতি টাটকা থাকতেই আবারো এই সমীকরণের সামনে পড়ল বাংলাদেশ। এবারের উপলক্ষটাও ফাইনাল ম্যাচের। তবে এটি দ্বিপক্ষীয় সিরিজের সিরিজ নির্ধারণকারী ফাইনাল। আবারো ২ ওভারে ৩৪ রানের সমীকরণে বল তুলে দেয়া হলো সেই রুবেলের হাতে।

শেষ দিকে এলোমেলো বোলিংয়ের নমুনা গত কয়েক মাসে বেশ কয়েকবার দেখিয়েছেন রুবেল। বেশি দূরে যাওয়ার দরকার নেই। ক্যারিবিয়দের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয়া ম্যাচের ৪৯তম ওভারেই রুবেল খরচ করেছিলেন ২২ রান। বাংলাদেশ ম্যাচ হেরে যায় ৩ রানের ব্যবধানে। তবু তার প্রতিই আস্থা রাখেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা।

'বড় ভাই' প্রতিম অধিনায়কের এই আস্থার প্রতিদান যথাযথই দিয়েছেন রুবেল। গত কয়েক মাসে স্লগ ওভারে বোলিংয়ের যে জড়তা ছিল, সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে ছিল না তার ছিটেফোঁটাও। ডেথ ওভারের জন্য স্পেশালিষ্ট ধরা হয় যে রুবেলকে, সেই রুবেলের দেখাই মিলেছে শেষ ম্যাচটিতে।

৪৯তম ওভারে যখন ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রয়োজন ছিল ৩৪ রান, তখন বোলিংয়ে আসেন রুবেল। উইকেটে তখন ৩৫ বল খেলে ৬৩ রানে অপরাজিত থাকা মারমুখী ব্যাটসম্যান রোভম্যান পাওয়েল। উইকেট ও রুবেলের সাম্প্রতিক ইতিহাস বিবেচনায় বাজির পাল্লা ভারী ছিল পাওয়েলের দিকেই।

কিন্তু সব সমীকরণ ভুল প্রমাণ করে দিয়ে ছয় বলে পাঁচটিই ইয়র্কার ডেলিভারি করেন রুবেল, অন্যটি হয় ফুলটস। তবু কিছুই করতে পারেননি পাওয়েল বা অ্যাশলে নার্স। ছয় বলে ছয়টি সিঙ্গেলে রান আসে মাত্র ৬। জয়ের জন্য শেষ ওভারে দরকার পড়ে ২৮ রান। যা কিনা খুব সহজেই ডিফেন্ড করেন বাঁহাতি পেসার মোস্তাফিজুর রহমান।

Rubel

অথচ এই ম্যাচে খেলারই কথা ছিল না ডানহাতি এই পেসারের। এমনকি ওয়ানডে সিরিজের আগে দেশে ফেরারই উপক্রম হয়েছিল রুবেলের। টেস্ট সিরিজে ছন্নছাড়া বোলিং ও তার চেয়েও বাজে শরীরী ভাষার কারণে ওয়ানডে সিরিজের আগেই দেশে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল টিম ম্যানেজম্যান্ট। কিন্তু শেষ মুহূর্তে শফিউল ইসলামের ইনজুরিতে টিকে যান রুবেল।

এখানেই শেষের রুবেলের দুর্দশার গল্প। ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচেও প্রত্যাশামাফিক বোলিং করতে ব্যর্থ হন রুবেল। দ্বিতীয় ম্যাচে তো আনকোরা শিমরন হেটমায়ারের বিপক্ষে ৪৯তম ওভারে দিয়ে বসেন ২২ রান। তার এমন পারফরম্যান্সে ক্ষুদ্ধ হয় বিসিবির শীর্ষ কর্তারা। সিদ্ধান্ত হয় শেষ ম্যাচে যেনো না খেলানো হয় তাকে।

ম্যাচের ঘণ্টা দুয়েক আগেও জাগো নিউজের সাথে আলাপে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু জানিয়েছিলেন রুবেলের দ্বিতীয় ম্যাচের একাদশে থাকার সম্ভাবনা কম। তার বদলে ওয়ানডে অভিষেক হয়ে যেতে পারে সিলেটের পেসার আবু জায়েদ রাহীর। তবে শেষ পর্যন্ত অনেকটা অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা একার সিদ্ধান্তেই একাদশে টিকে যান রুবেল।

এমনকি সাম্প্রতিক সময়ে ডেথ ওভারে রুবেলের হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পরেও সিরিজ নির্ধারনী ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ ৪৯তম ওভারে রুবেলের হাতে বল তুলে দেন মাশরাফি। রুবেলও ম্যাচ জেতার পথ তৈরি করেই প্রতিদান দেন মাশরাফির আস্থার। মূলত রুবেলের সেই ওভারের পরই নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের জয়। কেননা শেষ ওভারে মোস্তাফিজের বিপক্ষে ২৮ রান নেয়া নিশ্চিতভাবেই মামার হাতের মোয়া নয়।

যেই রুবেলের খেলারই কথা ছিলো না ওয়ানডে সিরিজে, যার একাদশে থাকারই কথা ছিলো না শেষ ম্যাচে, সেই রুবেলের হাত ধরেই নয় বছর পর ঘরের বাইরে ওয়ানডে সিরিজ জয়ের স্বাদ পেল বাংলাদেশ।

এসএএস/এমএস

আরও পড়ুন