স্টিভ রোডসের ফোন পাপনকে, বোর্ডের শীর্ষ কর্তাদের বৈঠক!
‘আচ্ছা, টাইগারদের নতুন কোচ স্টিভ রোডস কি ক্রিকেটারদের অ্যাপ্রোচ, এপ্লিকেশন ও পারফরম্যান্সে চরম অসন্তুষ্ট? এ কারণে মনের হতাশা ও ক্ষোভে তিনি কী কাল রাতে বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপনকে ফোন করেছিলেন? সে কারণেই কি আপনারা আজ দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত বোর্ড সভাপতির অফিসে (ধানমন্ডিস্থ বেক্সিমকো কার্যালয়ে) বৈঠক করলেন?’
সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের মুখে বিসিবি পরিচালক ও মিডিয়া কমিটি প্রধান জালাল ইউনুস কিছুতেই অবশ্য তা স্বীকার করলেন না। বললেন, ‘না না। ওসব কিছু না। বোর্ড সভাপতির সাথে বেশ কিছুদিন দেখা ও কথা হয়নি আমাদের। তাই তিনি আজ তার বেক্সিমকো অফিসে আমাদের সাথে বসেছিলেন। মাহবুব আনাম, আমি, সিইও সুজন আর লোকমান ভূঁইয়া ছিলাম।’
শুধু এটুকু বলেই থামলেন জালাল ইউনুস। নতুন কোচ স্টিভ রোডসের ফোনের কথা বেমালুম চেপেই গেলেন। বার বার বোঝানোর চেষ্টা করলেন, নাহ, বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন নিজেই তাদের নিয়ে বসেছিলেন জাতীয় দলের পারফরম্যান্স নিয়ে নিজেরা কথা বলতে।
তবে ভিতরের খবর, নতুন কোচ স্টিভ রোডস ক্রিকেটারদের অ্যাপ্রোচ, এপ্লিকেশন ও পারফরম্যান্সে বেশ হতাশ। তাই তিনি বোর্ড প্রধানের শরণাপন্ন হয়ে কাল শনিবার রাতে তাকে ফোন দিয়েছেন। তিনি ফোন দিতেই পারেন। ক্রিকেট বোর্ড জাতীয় দলের অভিভাবক। আর বোর্ড সভাপতি প্রধান অভিভাবক। দলের সত্যিকার অবস্থা জানাতে কোচ তার কাছে ফোন করতেই পারেন। আরও গুঞ্জন আছে অধিনায়কসহ কজন সিনিয়র ক্রিকেটারের বিপক্ষেও নাকি অনুযোগ করেছেন স্টিভ রোডস।
বোর্ড সভাপতি যে সে কারণেই বা ওই ফোনের প্রেক্ষিতেই বোর্ডের শীর্ষ কর্তাদের সাথে একান্তে কথা বলেছেন, তার প্রমাণ তাদের আজকে অনানুষ্ঠানিক বৈঠকটি। কারণ বাংলাদেশ হেরেছে গত পরশু রাতে। কালকের সারা দিন ও রাত গেছে। যদি নতুন কোচের ফোনের কারণেই না বসা হতো, তাহলে বিসিবির শীর্ষ কর্তারা কাল শনিবারও বসতে পারতেন।
আর আজকের বসাটাও ছিল একান্তই নীরবে, নিভৃতে ও গোপনে। সাধারণত এমন নীতি নির্ধারণী বৈঠকের পর নাজমুল হাসান পাপন প্রচার মাধ্যমের সাথে কথা বলেন। কিন্তু আজ কোন কথা বলেননি। বরং সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে, যাতে এ অনানুষ্ঠানিক বৈঠকের কথা মিডিয়া না জানে। বোঝাই যাচ্ছে, সিরিজ সবে শুরু, তাই কোচ যে সভাপতির শরণাপন্ন; এই খবরটা বাইরে চাওর হতে দিতে নারাজ বোর্ড কর্তারা। সময়, পরিবেশ- প্রেক্ষপট অনুযায়ী সেটা ঠিকই আছে।
তবে জাগো নিউজের সাথে আলাপে জালাল ইউনুৃস কিছু কথা বলেছেন, তাতে বোঝা যায় বোর্ড সভাপতি এবং বোর্ডও সাকিব বাহিনীর পারফরম্যান্সে রীতিমতো অসন্তুষ্ট। জালাল খানিক ঝাঁঝের সাথে বলেন, ‘এটা কোন পারফরম্যান্স হলো? উইকেট যেমনই থাকুক না কেন, খারাপ খেলার একটা মাত্রা থাকবে না?’
‘একই উইকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজ করেছে ৪০০ প্লাস আর আমাদের প্রথম ইনিংস শেষ হয়েছে ৪৩ রানে। এটা কিছু হলো? যত প্রতিকূল কন্ডিশন আর ফাস্টবোলিং ফ্রেন্ডলি পিচেই খেলা হোক না কেন, এত খারাপ অবস্থা হবে কেন?’ -জালালের কথায় পরিষ্কার, সাকিব-তামিম-মুশফিকদের প্রথম টেস্টের শ্রী-হীন ব্যাটিং নিয়ে বোর্ড প্রধান রীতিমতো ক্ষুব্ধ। তিনি আরও জানিয়েছেন, আজ রাতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজে দলের সাথে কথা বলবেন বোর্ড প্রধান।
এদিকে বোর্ডের কজন শীর্ষ কর্তা বিশ্বকাপ ফুটবলের সেমিফাইনাল ও ফাইনাল দেখতে রাশিয়া যাচ্ছেন। ওই বহরে নাজমুল হাসান পাপনেরও থাকার কথা। জালালের কথা শুনে যতটুকু আন্দাজ করা গেল, রাশিয়া থেকে বোর্ড কর্তাদের একাংশ ওয়েস্ট ইন্ডিজও যেতে পারেন।
এআরবি/এমএমআর/আরআইপি