প্রস্তুতি ম্যাচের হারকে প্রস্তুতিতেই আটকে রাখুক বাংলাদেশ
আরও একটি টি-টোয়েন্টি লড়াই। ভারতের দেরাদুনে মুখোমুখি ভ্রাতৃপ্রতিম দুই দেশ বাংলাদেশ আর আফগানিস্তান। তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচটি আজ মাঠে গড়াবে বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে আটটায়।
এমনিতেই ভারতের মাটিতে খেলা, তার উপর প্রতিপক্ষ চমক জাগানো দল আফগানিস্তান। টাইগার ক্রিকেট ভক্তদের তাই এই সিরিজটি নিয়ে আগ্রহ-উদ্দীপনার কমতি নেই।
তবে দুশ্চিন্তার বিষয় হলো, আফগানিস্তানের বিপক্ষে এই সিরিজ শুরুর আগেই যেন নিজেদের খোলসবন্দী করে ফেলেছে বাংলাদেশ। আফগানরা টি-টোয়েন্টি র্যাংকিংয়ে এগিয়ে, তাদের দলে বেশ কয়েকজন ভালো খেলোয়াড় আছে-এমন নানা নেতিবাচক চিন্তায় যেন বুঁদ হয়ে আছে টাইগার দল।
একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে সেই নেতিবাচকতার প্রভাবটা ভালোভাবেই দেখা গেল। মাত্র কদিন আগে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়া দলটির কাছে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে নাস্তানাবুদ হলো সাকিব-মুশফিক-মাহমুদউল্লাহর মতো অভিজ্ঞদের নিয়ে গড়া বাংলাদেশ।
টি-টোয়েন্টি র্যাংকিংয়ে আফগানিস্তান আট নাম্বারে। বাংলাদেশের অবস্থান দশম। সত্য অস্বীকার করার উপায় নেই। কিন্তু অভিজ্ঞতার বিচারে কি আফগানদের থেকে পিছিয়ে আছে টাইগাররা? টেস্ট আঙিনায় প্রায় ১৮ বছর কাটিয়ে ফেলা একটি দল নবীশ আফগানিস্তানকে যখন ভাবনার চেয়ে বেশি সমীহ করে ফেলে, তখন সাকিব আল হাসানদের এই অভিজ্ঞতার ঝুলিটা শূন্যই মনে হয়।
পরিসংখ্যানই তো বাংলাদেশকে সাহস দেয়ার জন্য যথেষ্ট। আফগানিস্তানের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে মাত্র একবারই মুখোমুখি হয়েছে টাইগাররা। ম্যাচটি ছিল ঢাকায় ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডে। সেখানে আফগানদের ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়েছিল মুশফিকুর রহীমের নেতৃত্বাধীন দলটি।
সেই ম্যাচের কথা মনে করলে নিশ্চয়ই এখনও লজ্জাই হয় আফগানদের। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে সাকিব আল হাসান (৩/৮) আর আবদুর রাজ্জাকের (২/২০) বোলিং তোপে মাত্র ৭২ রানেই গুটিয়ে গিয়েছিল মোহাম্মদ নবীর দল। জবাবে এনামুল হক বিজয়ের অপরাজিত ৪৪ আর তামিম ইকবালের ২১ রানে ৮ ওভার হাতে রেখেই জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ।
এমন একটি ম্যাচকে প্রেরণা না ধরে আফগানিস্তানের র্যাংকিং নিয়ে দুর্ভাবনায় পড়লে বিপদ তো ঘটতেই পারে। প্রস্তুতি ম্যাচে ৮ উইকেটের হারের পর সেই শঙ্কা আরও বড় করে ঘিরে ধরেছে টাইগার ক্রিকেট ভক্তদের।
তবে প্রস্তুতি ম্যাচের হারে কি আসে যায়! ২০১৫ বিশ্বকাপটা হতে পারে সবচেয়ে বড় উদাহরণ। সব কটি প্রস্তুতি ম্যাচ হেরে মূল আসরে খেলতে নামা বাংলাদেশ সেবারই প্রথমবারের মতো জায়গা করে নিয়েছিল বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে।
প্রস্তুতি ম্যাচকে তাই প্রস্তুতির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতার সামনে আফগানরা কুলিয়ে উঠতে পারবে না, এই আত্মবিশ্বাস নিয়েই মাঠে নামা উচিত সাকিব-তামিম-মুশফিকদের।
এমএমআর/জেআইএম