তুষার-নাফীসসহ ‘এ’ দলে ৬ থেকে ৮ জন ডাক পাচ্ছেন
জাতীয় দলের প্রাথমিক অনুশীলনে ৩১ জন আর এইচপি ইউনিটে আরও ২৪ জন, মোট ৫৫ ক্রিকেটার ডাক পেলেন গত ২৪ ঘন্টায়। যেখানে দেশের ক্রিকেটের পাঁচ শীর্ষ তারকা-মাশরাফি, সাকিব, তামিম, মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহসহ গত এক বছরের বেশি সময় ধরে জাতীয় দলের হয়ে টেস্ট, ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি তিন ফরম্যাটেই খেলেছেন; তারা প্রায় সবাই আছেন।
সময়ের বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠিত ক্রিকেটারের পাশাপাশি দীর্ঘ দিন জাতীয় দলের বাইরে থাকা ক্রিকেটারদের মধ্যে অভিজ্ঞ স্পিনার আব্দুর রাজ্জাকও বিবেচনায় এসেছেন। এ বাঁহাতি স্পিনারকে জাতীয় দলের প্রাথমিক অনুশীলন ক্যাম্পে রাখা হয়েছে। তাদের সাথে এক ঝাঁক সম্ভাবনাময় তরুণও ডাক পেয়েছেন।
ঘরের ক্রিকেটে ভালো খেলা নাজমুল হোসেন শান্ত থেকে শুরু করে পেসার কাজী অনিক, ইয়াসিন আরাফাতসহ যুব বিশ্বকাপ খেলা কজন উদ্যমী যুবাও বিবেচনায় এসেছেন।
কিন্তু ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলেও কোনো দলেই জায়গা হয়নি তুষার ইমরান, শাহরিয়ার নাফীস ও নাইম ইসলামের। এইচপি ইউনিটের খেলোয়াড় তালিকা প্রকাশের পর থেকেই শেরে বাংলায় প্রশ্ন, এই তিন সিনিয়র পারফরমারকে কোথায় রাখা হবে? তারা কি কোথাও থাকবেন না? এ প্রশ্নর জবাব নিয়েও আছে সংশয়।
প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু জাগো নিউজের সাথে আলাপে আগেই জানিয়ে রেখেছেন, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে দেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান, সর্বাধিক সেঞ্চুরি ও হাফ সেঞ্চুরির মালিক তুষার ইমরান, ঘরোয়া ক্রিকেটের আর দুই সফল পারফরমার শাহরিয়ার নাফীস ও নাইম ইসলামকে ‘এ’ দলে ডাকা হবে।
এখন ক্রিকেট পাড়ায় প্রশ্ন, আসলেই কি তাদের ‘এ’ দলে ডাকা হবে? মিনহাজুল আবেদীন নান্নু আজ রাতে জাগো নিউজের সাথে আলাপে নতুন করে সে পুরনো কথাই বলেছেন। তার সোজাসাপটা কথা, ‘অপেক্ষা করুন। আগামী দুই তিন দিনের মধ্যেই (শনিবার) 'এ' দলের জন্য আর ছয় থেকে আট জনকে ডাকা হবে। সেখানে প্রতিষ্ঠিত পারফরমারদের কাউকে কাউকে আমরা রাখবো।’
প্রধান নির্বাচক যোগ করেন, ‘যারা ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো খেলছে, তাদের প্রতি যে আমাদের নজর নেই, আমরা যে ওই নজর কাড়া পারফরম্যান্সগুলোকে এতদমই আমলে আনছিনা- এমন নয়। আসলে আমরা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সবাইকে ট্রাই করবো। একবারে তো আর সবাইকে একসঙ্গে দলে ঢোকানো যাবে না। একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই অাসতে হবে সবাইকে।’
প্রধান নির্বাচকের কথায় পরিষ্কার ইঙ্গিত- ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো খেলা তুষার ইমরান, শাহরিয়ার নাফীস ও নাইম ইসলামকে তারা শ্রীলঙ্কার ‘এ’ দলের বিপক্ষে সুযোগ দিয়ে দেখতে চান।
প্রসঙ্গতঃ আগামী ২৪ জুন তিনটি চার দিনের ম্যাচসহ আরও কিছু সীমিত ওভারের খেলায় অংশ নিতে বাংলাদেশে আসবে লঙ্কান ‘এ’ দল। সেখানে মূলতঃ এইচপি ইউনিটের ক্রিকেটাররাই অগ্রাধিকার পাবেন। সাথে কিছু সিনিয়রকেও পরখ করা হবে। প্রধান নির্বাচকের কথায় পরিষ্কার, ওই তিন সিনিয়র পারফরমারকে তারা ‘এ’ দলে সুযোগ দিয়ে তাদের আন্তর্জাতিক ম্যাচের টেম্পারমেন্ট ও সামর্থ্য পরখ করে দেখতে চান।
নির্বাচকদের মনোভাব এরকম, ঘরোয়া ক্রিকেটে ব্যাটিং ফ্রেন্ডলি উইকেটে ভালো খেলছে। দেখছি। ঠিক আছে। কিন্তু সেটাই আবার দলে ফেরার মানদন্ড নয়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাদের পারফরম্যান্স কেমন হবে, তা নিয়ে আছে সংশয়। লঙ্কান ‘এ’ দলের সাথে ঘরের মাঠে ভালো খেলতে পারলে বোঝা যাবে, কার প্রকৃত অবস্থা কেমন।
কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন তুষার যদি একের পর এক সেঞ্চুরি করেও ডাক না পান, তাহলে রাজ্জাককে দলে নেয়া কেন? কারণ হলো, রাজ্জাক টেস্ট ম্যাচে সুযোগ পেয়ে সামর্থ্যর প্রমাণ দিয়েছে। চার বছর দলের বাইরে ছিলেন। সাকিব দলে না থাকায় দীর্ঘ দিন পর আবার সুযোগ পেয়ে শ্রীলঙ্কার সাথে টেস্ট ম্যাচে ভালো ও সমীহ জাগানো বল করে রাজ্জাক দেখিয়েছেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তথা টেস্টে সমীহ জাগানো বোলিং করার সামর্থ্য তার আছে। সে কারণেই তার জায়গা হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের প্রাথমিক ক্যাম্পে।
তুষার, শাহরিয়ার, নাইমরাও কি তেমন পারবেন? তা খুঁটিয়ে দেখতেই তাদের লঙ্কান ‘এ’ দলের বিপক্ষে খেলানোর চিন্তা।
এআরবি/এমএমআর/এমএস