ভারতের হলে সহজেই আইপিএল খেলতেন জুবায়ের!
উইকেটের সন্ধানে থেকে প্রায়ই অতিরিক্ত রান খরচ করে ফেলেন লেগ স্পিনাররা। ফলে ক্রিকেটের সাদা হাতি বলা হয়ে থাকে কব্জির মোচড়ে জাদু দেখানো বোলারদের; কিন্তু সারাবিশ্বে লেগ স্পিনারদের বিশেষ মূল্যায়ন করা হলেও বাংলাদেশের ক্রিকেটে খুব একটা কদর নেই এই প্রজাতির বোলারদের। ফলে খুব বেশি লেগ স্পিনার দেখা যায় না এদেশের ক্রিকেটে।
বর্তমানে দেশের ক্রিকেটে অল্পসংখ্যক লেগ স্পিনারদের মধ্যে সবচেয়ে সেরা কিংবা সম্ভাবনাময় হলেন জুবায়ের হোসেন লিখন; কিন্তু অতিরিক্ত রান খরচের ভয়ে দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটেও কোন দলে সুযোগ পান না তিনি। সাদা হাতি পোষার সাহস দেখায় না ডিপিএল বা বিসিএলের কোন ফ্র্যাঞ্চাইজি। দেশের ক্রিকেটে লেগ স্পিনারদের এমন অবহেলার কথা শুনে যারপরনাই অবাক হন এদেশে খেলতে আসা বিদেশি ক্রিকেটাররাও।
ডিপিএল বা বিপিএল খেলতে আসা ক্রিকেটারদের অধিকাংশেরই মতামত, লিখনের মতো প্রতিভাধর লেগ স্পিনার সহজেই সুযোগ পাওয়ার কথা যে কোন দলের একাদশে। রোববার নিজের ব্যাপারে বিদেশি ক্রিকেটারদের বলা এমন গল্পই শোনান লিখন।
মিরপুরের জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘এবার বিপিএলে (ব্রেন্ডন) ম্যাককালাম আমাকে দেখে বলেছে- তুমি এবার কত উইকেট পেয়েছো? যখন বললাম, আমি কোন দলে নাই, তখন সে অবাক হলো। রংপুরের কোচ টম মুডিও অনেক কিছু জিজ্ঞেস করল। এরপরে আমাদের মোহামেডানে বিপুল শর্মা (ভারতীয় অলরাউন্ডার) বলছিল- তুমি যদি ইন্ডিয়ার খেলোয়াড় হতে আরামে আইপিএলে খেলতে পারতে। তোমার অনেক চাহিদা থাকত। ও নিজ থেকেই, শাহীন (হুমায়ুন কবির) ভাইকে বলেছে, আমাকেও বলেছে। এসব কথা আসলে আমাকে আত্মবিশ্বাস দেয় আসলে।’
তবু ঘরোয়া ক্রিকেটে কোন দলে সুযোগ না পাওয়ায় ফ্র্যাঞ্চাইজিদের প্রতি কোন অভিযোগ নেই লিখনের। নিজের পারফরম্যান্সের ঘাটতির কারণেই হয়তো কোন দল তার প্রতি আগ্রহ দেখায় না বলে জানান তিনি। লিখনের ভাষ্যে, ‘এখানে (দল না পাওয়ার বিষয়ে) তো আমার হাত নেই। হয়ত আমার কোন ভুল আছে যে কারণে আমাকে ঘরোয়া লিগে খেলাচ্ছে না। হয়ত টিম কম্বিনেশনের কারণে হোক বা যে কোনো কারণেই হোক তারা আমার উপর ভরসা করতে পারছে না। আমি কাউকে দোষ দেব না। হয়ত ভুল আমারই।’
ঘরোয়া ক্রিকেটের ফ্র্যাঞ্চাইজিরা দেশের এই অমূল্য সম্পদের পাশে না দাঁড়ালেও, জাতীয় দলের সিনিয়র ক্রিকেটাররা ঠিকই পাশে আছেন লিখনের। জাতীয় দলের বাইরে থাকলেও মাশরাফি-রিয়াদরা তাকে যথাযথ পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করে যাচ্ছেন বলে জানান লিখন। তিনি বলেন, ‘সিনিয়র ক্রিকেটারদের জন্য আমি খুব কৃতজ্ঞ। তারা সব সময় আমাকে সাপোর্ট করছেন। মাশরাফি ভাই, রিয়াদ ভাই, সাকিব ভাই, তামিম ভাই- কখনো আমাকে নেতিবাচক কিছু বলেননি। সব সময় ভালো কথা বলছে। হয়ত আমারই কোথাও ভুল ছিল। তারা বরাবর সাপোর্ট করে আমাকে। আশা করি ভবিষ্যতেও এমনটা করে যাবে।’
শিগগির জাতীয় দলে ফেরার ব্যাপারে আশাবাদী ২২ বছর বয়সী এই তরুণ। ২০১৪-১৫ সালে লাল-সবুজের জার্সি গায়ে ৬টি টেস্ট, ৩টি ওয়ানডে এবং ১টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন জুবায়ের। তিনি বলেন, ‘(ফেরার ব্যাপারে) আমি আত্মবিশ্বাসী। অনুশীলন খুবই ভালো হচ্ছে। যদি দু-তিনটা ম্যাচ খেলি, আমার আত্মবিশ্বাস আবার ফিরে আসবে। যেখানে পারি (খেপ) ম্যাচ খেলছি এবং ভালো করছি। আমার বোলিং যারা দেখছে, যারা ব্যাট করছে সবাই বলছে গতি, এক্যুরেসি ভালো হচ্ছে।’
এসএএস/আইএইচএস/জেআইএম