এক ম্যাচে জোড়া সেঞ্চুরি তুষার ইমরানের
আর কত সেঞ্চুরি করলে নির্বাচকদের নজরে আসবেন? তুষার ইমরান এই প্রশ্নটা তুলতেই পারেন। জাতীয় দলে ফেরার আশা বলতে গেলে শেষ। তবু ৩৪ বসন্ত পেরিয়েও ব্যাটে রানের ফলগুধারা বইছে তুষার ইমরানের। এবার তো প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এক ম্যাচেই জোড়া সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ঈর্ষণীয় সাফল্য। তুষার ইমরান কি তরুণ বয়সটায় জাতীয় দলে সেভাবে সুযোগ পেয়েছেন? প্রশ্নটা অবান্তর নয়। বাংলাদেশের হয়ে মাত্র ৫টি টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছেন। সেখানে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি সত্যি। মাত্র ৮.৯ গড়ে করেছেন ৮৯ রান। তবে তুষার যখন এই সুযোগটা পেয়েছিলেন, তখন পুরো বাংলাদেশ দলের অবস্থাও কিন্তু ভালো ছিল না। টেস্টে লড়াই তো দূরের কথা। তখন চার-পাঁচদিন পর্যন্ত টেস্ট টেনে নেয়াটাই ছিল বড় সাফল্য।
২০০২ সালে টেস্ট অভিষেক হয় তুষার ইমরানের। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কলম্বোতে। সেখানে এক ইনিংসে ৮ রান করলেও পরের ইনিংসে ২৮ রান করেছিলেন তিনি। এমনিতেই বাংলাদেশ দল তখন বেশ খারাপ অবস্থায় ছিল। পরিসংখ্যান বলছে, সেই কঠিন সময়টায় তুষারকে সবগুলো ম্যাচই খেলতে হয়েছে দেশের বাইরে। তিনটি শ্রীলঙ্কার মাটিতে, দুইটি দক্ষিণ আফ্রিকায়। টেস্টের নবীন বাংলাদেশের জন্য তখন এই দুই প্রতিপক্ষই সবচেয়ে বড় আতঙ্কের নাম।
২০০২ সালে অভিষেকের পর ৩ টেস্ট সুযোগ পেয়ে বাদ পড়েছিলেন, এরপর প্রায় ৩ বছর দলে ছিলেন না তুষার ইমরান। ২০০৫ সালে তাকে আরেকটি সুযোগ দেয়া হয়, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই কলম্বোতে। সেখানে ব্যর্থ হওয়ার পর আবারও দুই বছর বাদ। শেষ টেস্ট খেলেছেন ২০০৭ সালের জুলাইয়ে, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ক্যান্ডিতে। এরপরই জাতীয় দলের ক্যারিয়ার শেষ তুষারের।
ঘরোয়া ক্রিকেটে এরপর বারবার নিজেকে প্রমাণ করেছেন, কিন্তু নির্বাচকরা মুখ ফিরিয়ে তাকাননি। ৩৪ বছর পেরিয়েও তুষারের ব্যাট আগের মতোই ধার। রানের পর রান করে চলেছেন। এখন হয়তো বয়সের কারণে আর বিবেচ্য হবেন না, হতভাগা আর কাকে বলে!
সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের (বিসিএল) চতুর্থ রাউন্ডের ম্যাচে আরও একবার দলের আস্থার প্রতীক হয়ে দাঁড়ালেন তুষার ইমরান। ইস্ট জোনের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে করেছিলেন ১৩০ রান, পরের ইনিংসে ১০৩। দ্বিতীয় ইনিংসে আবার আউটও হননি, রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছেড়েছেন বর্ষীয়ান এই ব্যাটসম্যান।
প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারের ২৮তম সেঞ্চুরি তোলার পরও তুষারের মনে হয়তো একটা আফসোস রয়েই গেছে, এতো রান দিয়ে কি হবে, আর হয়তো কখনই জাতীয় দলে খেলা হবে না!
এমএমআর/পিআর