আজীবন নিষিদ্ধ হতে পারেন স্মিথ-ওয়ার্নার
অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটে কলঙ্কের ছাপ ফেলে দিলেন স্টিভেন স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নাররা। বল টেম্পারিংয়ের মতো ঘৃণ্য এক কাজ করে পরে সংবাদ সম্মেলনে এসে যে তথ্য জানালেন স্মিথ, তা অজিদের এতদিনের অর্জিত সম্মান ভূলন্ঠিত করার জন্য যথেষ্ট। টেম্পারিং জুচ্চোরি ধরা পড়ার পর অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক নির্লিপ্ত কন্ঠেই বললেন, এটা তারা দলীয়ভাবে পরিকল্পনা করেই করেছেন।
পুরো ক্রিকেট বিশ্ব অস্ট্রেলিয়ার এমন কান্ড দেখে হতবাক। নিন্দা জানানোর ভাষা পাচ্ছেন না দেশটির সাবেকরা। আইসিসির পক্ষ থেকে অবশ্য বড় কোনো শাস্তির ঘোষণা আসেনি, স্মিথকে এক টেস্টের জন্য নিষিদ্ধ করেই ক্ষান্তি দিয়েছে ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। আসল দায়িত্বটা তারা ছেড়ে দিয়েছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) হাতে।
সেই আসল দায়িত্বটা পালন করতে গিয়ে কিন্তু বেশ কঠোরই হতে যাচ্ছে সিএ। খবরটা দেশের প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত গিয়েছে। যার নির্দেশে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে স্মিথ আর ওয়ার্নারকে। তবে এখানেই সব শেষ হচ্ছে না। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটের কোড অব কন্ডাক্ট ভঙ্গে সর্বোচ্চ শাস্তি আজীবন নিষেধাজ্ঞায়ও পড়তে হতে পারে স্মিথ-ওয়ার্নারকে।
প্রসঙ্গতঃ সদ্য সমাপ্ত কেপটাউন টেস্টের তৃতীয় দিনে দ্বিতীয় সেশনের সময় বিতর্কিত ঘটনাটি ঘটায় অস্ট্রেলিয়া। টিভিতে ধরা পড়ে, হলুদ কাপড়ের মত কিছু একটা পকেট থেকে বের করেছিলেন ব্যানক্রফট। পরে সেটি লুকানোর চেষ্টা করেন তার ট্রাউজারের ভেতরে। বিষয়টি টিভি আম্পারের দৃষ্টিতে পড়লে তিনি মাঠে থাকা আম্পায়ারদের খোঁজ নেয়ার নির্দেশ দেন। তবে এখানেও চালাকি করেন বেনক্রফট। পকেট থেকে একটা কালো কাপড় বের করে দেখান, সানগ্লাস মোছার জন্য তিনি এটাকেই বের করেছিলেন।
এমন একটি জুচ্চোরির ঘটনা ফাঁস হবার পর ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া স্বভাবতই কঠোর হতে যাচ্ছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে স্মিথ, ওয়ার্নার, বেনক্রফট এবং দলের কোচ ড্যারেন লেহম্যানের সঙ্গে কথা বলবে সিএ। এরপর সিদ্ধান্ত হবে দলের কতজন খেলোয়াড় শাস্তির আওতায় আসবেন। পুরো প্রক্রিয়াটি চলবে স্বাধীন তদন্ত কমিশনের অধীনে। তদন্ত কমিশনার ঠিক করবেন সব কিছু।
ক্রিকেটের ৪২ নাম্বার আইনের অধীনে খেলার চেতনার বাইরের কোনো কিছু ঘটানোর জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি হতে পারে আজীবন নিষেধাজ্ঞা। মূলত আইন ভঙ্গের মাত্রা এবং ক্রিকেটের উপর এই ঘটনা কতটা প্রভাব ফেলেছে বা ক্ষতি করেছে, তার উপর নির্ভর করেই এই শাস্তির বিষয়টি নির্ধারণ করা হয়।
অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটের প্রধান জেমস সাদারল্যান্ড ইতোমধ্যেই সকল সমর্থকের কাছে এই ঘটনার জন্য আন্তরিকভাবে ক্ষমা চেয়েছেন। দেশের ক্রিকেটের সম্মান ফেরাতে এবং সমর্থকদের রোষানল থেকে বাঁচতে ঘটনার হোতাদের বড় শাস্তির আওতায় আনা হবে, সেটা না বললেও আন্দাজ করা যাচ্ছে।
এমএমআর/জেআইএম