পাকিস্তানে আসতে অনিচ্ছুকদের পরিত্যাগের দাবি
কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্সের আর দুঃখের সীমা নেই। পাকিস্তান সুপার লিগে এই দলটিকে খুব দুর্ভাগা বললেও কম বলা হবে। কারণ, বারবার বিদেশী ক্রিকেটারদের অনিচ্ছার কারণেই পিএসএলের নকআউটে পাকিস্তানে খেলতে এসে তরি ডুবছে কোয়েটার। গত বছর পিএসএলে যেমন ঝড়ের গতিতে ফাইনালে উঠেছিল কোয়েটা; কিন্তু যে সাত বিদেশি ক্রিকেটার তাদেরকে ফাইনালে তুলেছিল, তারাই আর খেলতে আসেনি লাহোরে। দলের মূল খেলোয়াড়দের হারিয়েই শক্তিহীন হয়ে পড়ে তার। যে কারণে লাহোরের ফাইনালে পেশোয়ার জালমির সামনে অলআউট হয়ে যায় মাত্র ৯০ রানে। হার মানতে বাধ্য হয় ৫৮ রানে।
ঠিক একই অবস্থা এবারও। চতুর্থ দল হিসেবে শেষ চারে ওঠে এবারের পিএসএলে। এবার শুধু ফাইনাল নয়, পিএসএলের কোয়ালিফায়ার এবং ইলিমিনেটর রাউন্ডের ম্যাচগুলোও অনুষ্ঠিত হচ্ছে লাহোরে। এই পর্বে এসে কোয়েটাকে খেলতে হয়েছে ইলিমিনেটর রাউন্ডের প্রথম ম্যাচ; কিন্তু দুঃখের বিষয় এবারও কোয়েটাকে লাহোরে খেলতে আসতে হয়েছে দলের সেরা দুই তারকা শেন ওয়াটসন এবং কেভিন পিটারসেনকে ছাড়াই।
এই দুই বিদেশির ওপর ভর করেই মূলতঃ ইলিমিনেটর রাউন্ড নিশ্চিত করেছিল কোয়েটা; কিন্তু তাদের পাকিস্তানে খেলতে না আসার কারণে সেই পেশোয়ার জালমির কাছেই শেষ মুহূর্তে মাত্র ১ রানে হেরে বিদায় নিতে হয়। কোয়েটার সবচেয়ে বড় দুঃখের বিষয় হচ্ছে, যেখানে শেষ বলে প্রয়োজন তিন রান, সেখানে হলো ১ রান। হেরে গেলো ১ রানে।
যে দলটি শিরোপার অন্যতম দাবিদার, তারাই কি না সেরা কম্বিনেশন ঠিক করতে না পারার কারণে মঙ্গলবার রাতে পেশোয়ারের কাছে হেরে বিদায় নিয়েছে। এ কারণেই সবচেয়ে বেশি দুঃখ দলটির প্রধান কোচ মঈন খানের। পাকিস্তানের সাবেক এই অধিনায়ক এখন দায়িত্ব পালন করছেন পিএসএলে কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্সের হয়ে। তিনি পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) কাছে দাবি জানিয়েছেন, যে সব বিদেশি ক্রিকেটার পাকিস্তানে এসে খেলতে রাজি হবে না, তাদেরকে যেন ভবিষ্যতে আর কোনো প্লেয়ার ড্রাফটেই না রাখা হয়।
মঈন খান একই সঙ্গে পিএসএলে ব্যাক্তিগত গুরুত্বের বিষয়টি উড়িয়ে দেন। তার কাছে পিএসএলে ব্র্যান্ড মূল্যই এখন সবচেয়ে বড়। তিনি মনে করেন, বিদেশি ক্রিকেটাররা একের পর এক নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে নেয়ার পরও পিএসএলের গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে।
পেশোয়ার জালমির কাছে হারের পর মঈন খান বলেন, ‘আগামী বছর পিএসএলের প্লেয়ার ড্রাফটের সময় আমাদের উচিৎ, যে সব ক্রিকেটার পাকিস্তানে এসে খেলতে রাজি হবে, তাদেরকেই কেবল ড্রাফট তালিকায় রাখা। ব্যাক্তিগতভাবে গুরুত্ব দিয়ে কাউকে অনুরোধ-উপরোধ করার কোনো প্রয়োজন নেই। আমাদের লিগের এখন অনেক বেশি ব্র্যান্ড ভ্যালু তৈরি হয়েছে। এখন আমাদের এগিয়ে যাওয়ার পালা এবং শুধুমাত্র দল নিয়ে চিন্তা করা উচিৎ। সুতরাং, ভবিষ্যতে আমাদের এই নীতিতে যাওয়া উচিৎ, যারা পাকিস্তানে আসতে চায় না, তাদের বাদ দিয়েই পিএসএল আয়োজন করতে হবে। এটা তো পাকিস্তান সম্পর্কে ভালো বার্তা দেয় না। খেলোয়াড়দের এভাবে সরে দাঁড়ানোতে পাকিস্তানেরই ইমেজের ক্ষতি হচ্ছে।’
আইএইচএস/আরআইপি