ফাইনালে উইনিং কম্বিনেশন না ভাঙার কথাই ভাবছে বাংলাদেশ
ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে কেমন হবে বাংলাদেশের একাদশ? সোনার হরিণ হয়ে থাকা ট্রফি বিজয়ের মিশনে আজ প্রেমাদাসায় সাকিবের নেতৃত্বে মাঠে নামবে কোন এগারো জন? শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৪৮ ঘণ্টা আগে খেলা দলটিই মাঠে নামবে আবার, নাকি পরিবর্তন ঘটবে? তা নিয়ে রাজ্যের জল্পনা-কল্পনা ও গুঞ্জন।
সাকিব দলের আসার পর বাঁ-হাতি স্পিনারের কোটায় দু’জন (নাজমুল অপু সহ) বোলার হয়ে গেছে। ভাবা হচ্ছিল সাকিব খেললে নাজমুল অপু বাদ পড়বেন। কিন্তু শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ১৬ জুলাই ঠিকই দলে ছিলেন অপু। কিন্তু অব্যবহৃত হয়ে থাকেন এ বাঁ-হাতি স্পিনার। তিনি এক ওভারও বোলিং করার সুযোগ পাননি।
অন্যদিকে সাকিব নিজেও বল করেছেন মাত্র দুই ওভার। তাই সবার দৃষ্টি ছিল নাজমুল অপুর দিকে। যেহেতু তাকে বল দেয়া হয়নি, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ পুরো চার ওভার বল করেছেন- তাই মনে হচ্ছিল ফাইনাল খেলা হবে না অপুর। কিন্তু শেষ খবর দলে থাকছেন অপুও।
সাব্বিরকে নিয়ে সংশয় আগে থেকেই। ক্যারিয়ারের সবচেয়ে খারাপ সময় কাটাচ্ছেন এ মারকুটে ব্যাটসম্যান। শ্রীলঙ্কার সঙ্গেই তার বাদ পড়ার কথা ছিল। টিম ম্যানেজমেন্ট নিশ্চিত করেছে, সাকিবই সাব্বিরকে দলে রাখতে চেয়েছেন। তাই নিজে ওয়ান ডাউনে না খেলে সাব্বিরকে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে পাঠান। কিন্তু সেখানেও সুবিধা করতে পারেননি সাব্বির। ফিরে গেছেন ৮ বলে ১৩ রানে।
আজকের (রোববার) ফাইনালের আগেও ঘুরে ফিরে যত প্রশ্ন সাব্বিরকে নিয়ে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জোর গুঞ্জন ভারতের বিপক্ষে নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে খেলানো হবে না অফ ফর্মের সাব্বিরকে। কিন্তু প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু ও ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজন জাগো নিউজকে জানিয়েছেন, ‘দলে পরিবর্তনের সম্ভাবনা খুব কম। নাই বললেই চলে।’
প্রধান নির্বাচক নান্নু ঘরের মাঠের তিন জাতি টুর্নামেন্টের ফাইনালের উদাহরণ টেনে বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ফাইনালে আমরা মোহাম্মদ মিঠুনসহ আরও কয়েজনকে সুযোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা নিজেদের মেলে ধরতে পারেনি। একটা টুর্নামেন্টের বড় সময় মাঠের বাইরে থেকে ফাইনাল খেলাটা সহজ কাজ নয়। নতুন কেউ আগের ম্যাচ না খেলে ফাইনালে গিয়ে বাড়তি চাপে পড়ে যায়। আমরা মিঠুনকে দেখেছি চাপের মুখে কিছুই করতে পারেনি। তাই নীতিগতভাবে দলে পরিবর্তনের চিন্তা নেই।’
কলম্বোয় অবস্থানরত ম্যানেজার সুজন আজ সকালে জাগো নিউজের সঙ্গে মুঠোফোন আলাপে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আগের ম্যাচের একাদশই বহাল আছে। আমরা পরিবর্তনের কথা ভাবছি না। তারপরও মাঠে গিয়ে উইকেট দেখে ও বুঝে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। যতটুকু জেনেছি আজ খেলা হবে ফ্রেশ উইকেটে। কাজেই উইকেট না দেখে এখনই বলতে পারছি না কোন এগারো জন খেলবে। তবে আমরা ফাইনালে নতুন করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতে চাই না। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আগের ম্যাচ খেলা দলটি সম্ভাবত সন্ধ্যায় ফাইনালে মাঠে নামবে।’
দর্শক সমর্থকরা যাই ভাবুন না কেন, ভেতরের খবর- শুধু সাব্বির নয় সৌম্য সরকারের পারফরমেন্সও মোটেই সন্তোষজনক নয়। দ্বিতীয় ম্যাচে ১৯ বলে ৪৩ করা লিটনও পরের ম্যাচ গুলোয় নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। লিটন-সৌম্যর শেষ দুই ইনিংসে রান যথাক্রমে (লিটন- ০, ৭ সৌম্য- ১০, ১)। কাজেই শুধু সাব্বিরের দিকেই দৃষ্টি নেই টিম ম্যানেজমেন্টের। এ সম্পর্কে প্রধান নির্বাচক নান্নুর কথা, ‘সাব্বির তো তাও আগের দুই ম্যাচে যথাক্রমে (১৩,২৭) করেছে। সৌম্যর অবস্থা তো আরও খারাপ। কাজেই একা সাব্বিরকে বদলালেই কী আর ব্যাটিং লাইন আপের চেহেরা পাল্টে যাবে।’
প্রধান নির্বাচকের উপরের মন্তব্যেই পরিষ্কার, শুধু সাব্বিরকে বদলের চিন্তা আসলে নেই। ধরে নেয়া যায় শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ১৬ মার্চের সাত ব্যাটসম্যান, তিন স্পিনার ও দুই পেসারের দলটিই আজ লাল সবুজ জার্সি গাঁয়ে মাঠে নামবেন।
সম্ভাব্য একাদশ: তামিম ইকবাল, লিটন দাস, সাব্বির রহমান, মুশফিকুর রহীম, সৌম্য সরকার, মাহমুদউল্লাদ রিয়াদ, সাকিব আল হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজ, মোস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেন, নাজমুল অপু।
এআরবি/এমআর/এমএস