শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ফাইনালের পথে ভারত
বাংলাদেশের বিপক্ষে অখেলোয়াড়সুলভ আচরণের জন্য দুই ম্যাচ নিষেধাজ্ঞার জন্য ছিলেন না নিয়মিত অধিনায়ক দিনেশ চান্দিমাল। তার পরিবর্তে অধিনায়কের আর্মব্যান্ড পরেন সুরাঙ্গা লাকমাল। তাতেও হারের বৃত্ত থেকে বের হতে পারলো না শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের কাছের হারের পর এবার ভারতের কাছেও হারলো তারা। নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে হারলেও দ্বিতীয় ম্যাচেই স্বাগতিক দলকে ৬ উইকেটে হারিয়ে নিদাহাস ট্রফির ফাইনালের পথে এক পা দিয়ে রাখলো ভারত।
বৃষ্টির জন্য নির্ধারিত সময়ের প্রায় দেড় ঘণ্টা পর খেলা শুরু হয়। এতে ম্যাচ কমিয়ে আনা হয় ১৯ ওভারে। টস জিতেই ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা ব্যাটিংয়ে পাঠায় শ্রীলঙ্কাকে। শ্রীলঙ্কার শুরুটা ছিল দারুণ। প্রথম দুই ওভারেই ২৪ রান তুলে আবারো বড় সংগ্রহের ইঙ্গিত দেয় লঙ্কানরা। কিন্তু তৃতীয় এবং চতুর্থ ওভারে দুই ওপেনারকে হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় হাতুরুসিংহের দল। শার্দল ঠাকুরের বলে দলীয় ২৫ রানেই মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন গুনাতিলাকা। ওয়াশিংটন সুন্দরকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে নিজের বিপদ ডেকে আনেন ওয়ান ডাউনে নামা কুশল পেরেরা।
৩৪ রানেই দুই উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা শ্রীলঙ্কাকে বিপদ থেকে উদ্ধার করেন কুশল মেন্ডিস এবং অভিজ্ঞ উপুল থারাঙ্গা। এই দুইজনের ৬২ রানের জুটিতে আবার বড় সংগ্রহের স্বপ্ন দেখতে থাকে লঙ্কানরা। ১১তম ওভারে দলীয় ৯৬ রানে ব্যক্তিগত ২২ রানে করে আউট হন উপুল থারাঙ্গা। কিন্তু আরেক প্রান্ত আগলে রেখে নিজের চতুর্থ হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন কুশল মেন্ডিস।
ব্যক্তিগত ৫৫ রান করে ওয়াশিংটন সুন্দরের বলে আউট হলে আবারো বিপর্যয়ে পড়ে শ্রীলঙ্কা। শেষ ৮ ওভারে ভারতীয় বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে মাত্র ৪৫ রান তুলতে সক্ষম হয় সুরাঙ্গা লাকমালের দল। শেষের দিকে দাশুন সানাকা ১৯ রান করলে ৯ উইকেটে ১৫২ রানের লড়াকু পুঁজি পায় দলটি। ভারতের হয়ে সার্দুল ঠাকুর নেন ৪টি উইকেট। এছাড়া ওয়াশিংটন নেন ২টি উইকেট।
১৫৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারে অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে হারিয়ে কিছুটা ব্যাকফুটে যায় ভারত। আকিলা ধনঞ্জয়ের বলে মিড উইকেট দিয়ে ছয় মারতে গিয়ে মেন্ডিসের হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন এই ওপেনার। দলীয় চতুর্থ ওভারের প্রথম বলেই আরেক ওপেনার শেখর ধাওয়ানকেও নিজের শিকারে পরিণত করেন ধনঞ্জয়। ২২ রানে দুই উইকেট হারিয়ে লঙ্কানদের মতো তারাও বিপর্যয়ে পড়ে।
৪০ রানের ক্ষুদ্র জুটি গড়ে প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দেন লোকেশ রাহুল এবং সুরেশ রায়না। এর ভেতর রায়না ছিলেন বেশিই বিধ্বংসী। ১৫ বলে ২৭ রান করে ফার্নান্দোর বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন এই বা হাতি ব্যাটসম্যান। উইকেটে দীর্ঘক্ষণ থাকলেও বেশি সুবিধা করতে পারেননি লোকেশ রাহুল। ১৭ বলে ১৮ রান করে মেন্ডিসের বলে হিট উইকেটের শিকার হন তিনি।
১০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ৮৫ রান করে লঙ্কানদের থেকে কিছুটা পিছিয়ে ছিল তারা। এটাই বোধহয় লঙ্কানদের শেষ সান্ত্বনা। এরপরের গল্পটা কেবল মানিশ পান্ডে এবং দিনেশ কার্তিকের। পঞ্চম উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ৬৮ রানের জুটি গড়ে দলকে ৯ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে নিয়ে যান এই দুই ব্যাটসম্যান।
৪২ রান করে মান্ডে এবং ৩৯ রান করে দিনেশ কার্তিক অপরাজিত থাকেন। লঙ্কানদের পক্ষে ধনঞ্জয় নেন দুই উইকেট। ম্যাচ সেরা হন ভারতের সার্দুল ঠাকুর। এই জয়ের ফলে তিন ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে সবার উপরে ভারত। অন্যদিকে হেরেও রান রেটের হিসেবে বাংলাদেশের সমান পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে শ্রীলঙ্কা।
আরআর /বিএ