ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

আরও হিসেবি ও দূরদর্শী ব্যাটিংয়ের তাগিদ রিয়াদের

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশিত: ১০:০৫ পিএম, ০৯ মার্চ ২০১৮

ঘরের মাঠে লঙ্কানদের সাথে কুলিয়ে উঠতে পারেনি টাইগাররা। প্রথমে একদিনের ক্রিকেটে। তারপর টেস্টে আর সবশেষে দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে রীতিমত নাকাল ও তুলোধুনো তামিম, সৌম্য, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ ও মোস্তাফিজরা।

এবার শ্রীলঙ্কার মাটিতে গিয়ে চান্দিমাল বাহিনীর সাথে কি করবে মাহমুদউল্লাহর দল? পারফরম্যান্সে উন্নতি ঘটবে নাকি ভারতীয়দের সাথে যে নড়বড়ে, ছন্নছাড়া আর অনুজ্জ্বল ও জবুথবু বাংলাদেশের দেখা মিলেছিল, কাল শনিবার স্বাগতিক লঙ্কানদের বিপক্ষে সেই একই বাংলাদেশের দেখা মিলবে? লক্ষ্য ও পরিকল্পনাহীন ব্যাটিং প্রদর্শনীই ঘটবে আবার?

সমর্থকরা বিষম চিন্তায়। অন্ধ ভক্তও চুপ মেরে গেছেন। প্রত্যাশার বেলুন গেছে ফুটো হয়ে। স্বপ্নের জাল ছিড়ে গেছে। তার বদলে হতাশা বাসা বেঁধেছে। চারিদিকে হতাশা। প্রিয় দল এ অন্ধকার থেকে আলোয় ফিরবে কবে? তামিম, সৌম্য, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ ও সাব্বিরের ব্যাট আবার কবে কথা বলবে? চার ছক্কার ফুলঝুরি ফুটবে, আবার মাঠ গরম হবে- তা দেখতে উন্মুখ সমর্থকরা। রুবেল, তাসকিন , মোস্তাফিজরা আবার কবে ম্যাচ জেতানো বোলিং করবেন?

এমন প্রশ্ন শুধু ভক্ত ও সমর্থকদের নয়। বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট এবং ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহও বুঝে গেছেন, এমন শ্রীহীন ও ছন্নছাড়া ব্যাটিং দিয়ে চলবে না। আরও হিসেবি ও গাণিতিক ব্যাটিং ছাড়া উত্তরনের কোনো পথ নেই। তাই তো প্রথম দিনের অনুজ্জ্বলতা কাটিয়ে ওঠার জোর তাগিদ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের কন্ঠে।

বৃহস্পতিবার ভারতের সাথে হারের পর সংবাদ সম্মেলনে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচ নিয়ে টাইগার ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক অনেক কথাই বলেছেন। সব কথার সারমর্ম ছিল, ব্যাটিংয়ে উন্নতি ঘটাতে হবে। ব্যাটসম্যানদের আরও হিসেব কষে খেলতে হবে। ১২০ বলের মধ্যে ৫৫ টি ডট ডেলিভারি দিলে চলবে না। স্কোরিং ডেলিভারির সংখ্যা বাড়াতে হবে। আর ব্যাটিং অ্যাপ্রোচে আরও হিসেবি এবং দূরদর্শীতার ছাপ রাখতে হবে।

পাশাপাশি লঙ্কানদের লক্ষ্য ও কৌশল সম্পর্কে পূর্ব ধারণা পোষণের জোর চিন্তাও মাহমুউল্লাহর মাথায়। প্রথম দিনের খেলা শেষে অফিসিয়াল প্রেস মিটে সে কথা জানিয়ে টাইগার ক্যাপ্টেন বলে ওঠেন, ‘লঙ্কানদের গেম প্ল্যান কি হবে, সে সম্পর্কে ধারণা নিতেই আগে আমরা সবাই মিলে বসবো। সেখানেই লঙ্কানদের সম্ভাব্য গেম প্ল্যান নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। আমরা আগে নির্ধারণের চেষ্টা করবো , তারা (লঙ্কানরা) কোন কৌশল অবলম্বন করতে পারে, আমাদের দেশে যে গেম প্ল্যান ছিল , সেটাই অব্যাহত থাকতে পারে, না ঘরের মাঠে নতুন কোনো ছকে মাঠে নামবে; এসব নিয়ে আমরা নিজেরা বসে কথা বলবো।’

তবে নিজ দলকে ভয়-ডরহীন দেখতে চান মাহমুদউল্লাহ। তাই তো মুখে এমন কথা , ‘আমাদের একদম নির্ভীক থাকতে হবে। সেই সাথে নিজেদের শক্তি ও সামর্থ্য সম্পর্কে কোনোরকম সংশয়-সন্দেহ থাকলেও চলবে না।’

নিজেদের ব্যাটিং অ্যাপ্রোচে চরম অসন্তুষ্ট মাহমুদউল্লাহ অকপটে স্বীকার করেছেন, ‘এটা বলার অপেক্ষা রাখে না, আমাদের যেমন গতি ও ছন্দে রান তোলার উচিত ছিল, ভারতীয়দের সাথে আমরা তা পারিনি। ’

সেই না পারার সম্ভাব্য কারণ চিহ্নিত করে রিয়াদ বলেন, ‘আসলে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে হিসেব কষেই কিছু ঝুঁকি নিতে হয়। সেই সাথে বাউন্ডারি হাঁকানোর দিকেও দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন।’

ইনিংসের মাঝামাঝি অংশকে ব্যাটিংয়ের সবচেয়ে দুর্বল জায়গা চিহ্নিত করে বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, ‘আমরা মাঝামাঝি ওভার গুলোতে ঠিক হিসেব কষে খেলতে পারছি না। ওই সময় অনেক বেশি ‘ডট বল’ দিয়ে ফেলছি। সেই সাথে উইকেটও খুইয়ে আসছি।’

বাংলাদেশ অধিনায়ক আগামীকালের ম্যাচে যে করেই হোক আরও হিসেবি ও গাণিতিক ব্যাটিংয়ের প্রত্যাশায়, ‘আমাদের যে করেই হোক আরও কম ডট বল দিতে হবে। স্কোরিং ডেলিভারি বাড়াতেই হবে। আমরা যদি রান গতি সচল রাখতে পারি, তাহলে আপনা আপনি ব্যাটসম্যানদের ওপর থেকে চাপ কমতে থাকবে।’

প্রসঙ্গতঃ প্রথম দিন বাংলাদেশ ইনিংসে ছিল ৫৫ টি ডট বল। তার মানে ১২০ বলের ৪৫ ভাগ ডেলিভারি ছিল রানশুন্য। বাকি ৬৫ বল থেকেই ১৩৯ রান উঠেছে।

টাইগার অধিনায়কের আরও একটি উপলব্ধি আছে। তিনি চান, ব্যাটিং হোক আরও হিসেবি ও গাণিতিক। যেখানে তার অনুভব, ‘ শুধু ডট বল কমালেই চলবে না। পাশাপাশি আমাদের আরও একটি কাজ করতে হবে। যে ওভারে একটি বা দুটি বাউন্ডারি হবে, সেই ওভারের বাকি বলগুলোয় কি অ্যাপ্রোচ থাকবে; সেটাও ঠিক করা খুব জরুরি।’

একদম খাটি কথা। দেখা যায়, এক ওভারে প্রথম দুই বা তিন বলে দুই বাউন্ডারি আসার পরও পরের ডেলিভারি গুলোয় তেড়ে ফুড়ে মারতে গিয়ে অকাতরে উইকেট দিয়ে আসছেন ব্যাটসম্যানরা।

সেই বলগুলো থেকে গোটা দুয়েক সিঙ্গেলস কিংবা একটি ডাবলস নিতে পারলেই কিন্তু ওভারে ১০ এর উপর রান হয়ে যায়। কিন্তু একজোড়া বাউন্ডারির পর ঠান্ডা মাথায় সিঙ্গেলস- ডাবলসে না এগিয়ে আরও আক্রমনাত্মক হবার চেষ্টা থাকে। সেটাও একটা বড় নেতিবাচক দিক।

আত্মবিশ্বাসী লঙ্কানদের বিপক্ষে কি এসব ভুল-ত্রুটি শুধরে আবার আলোয় ফিরতে পারবে টাইগাররা?

এআরবি/এমএমআর/পিআর

আরও পড়ুন