ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

এখনও জয়ের স্বপ্ন দেখেন মিরাজ!

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশিত: ০৯:১৪ পিএম, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

রোশান সিলভা মনে করেন, তার দল শ্রীলঙ্কা চালকের আসনে। দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে লঙ্কান মিডল অর্ডারের কথা শুনে মনে হচ্ছে, তারা ধরেই নিয়েছেন স্বাগতিক বাংলাদেশ আর পারবে না। তারাই জিততে যাচ্ছেন।

দ্বিতীয় দিন শেষে শ্রীলঙ্কার প্রতিনিধি হয়ে আসা রোশান সিলভা বলেছেন, 'আমার মনে হয় এর মধ্যে যে লিডটা হয়েছে, তাই যথেষ্ট। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরাও জানেন, এ উইকেটে ব্যাট করা সহজ কাজ হবে না। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো, আমাদের স্পিন আক্রমণটা অনেক বেশি সমৃদ্ধ, অভিজ্ঞ ও ধারালো।'

বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণকে খাটো করেননি রোশান। তবে হেরাথ-লাকমালদের নিয়ে তাদের আক্রমণ আরও শক্তিশালী দাবি তার, 'হ্যাঁ বাংলাদেশের বোলিংটাও ভাল। তারপরও রঙ্গনা হেরাথ আর দিলরুয়ান পেরেরা অনেক বেশি অভিজ্ঞ। হেরাথের সাফল্যের ঝুলি অনেক ভারি। টেস্টে ৪০০ উইকেট আছে তার। দিলরুয়ান পেরেরা ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটে ৭০০ উইকেট শিকারি। সুরাঙ্গা লাকমাল আর আকিলা ধনাঞ্জয়াও বেশ ভাল বল করেছে। আমার মনে হয়, আমরা খুব ভাল অবস্থায় আছি। যেখানে দাঁড়িয়ে জয়ের কথা ভাবাই যায়।'

এই তো গেল লঙ্কানদের কথা। স্বাগতিক বাংলাদেশ কি ভাবছে? অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সিনিয়র ক্রিকেটার তামিম ইকবাল আর মুশফিকুর রহিম এবং টেকনিক্যাল ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজনের কেউ খেলা শেষে মিডিয়া সেশনে আসলে হয়ত বলতে পারতেন- আসলে ড্রেসিং রুমের কি অবস্থা। টাইগারদের মানসিক অবস্থাই বা কি।

মেহেদি হাসান মিরাজের কথা শুনে মনে হচ্ছে, বাংলাদেশ শিবির এখনও রণে ভঙ্গ দিতে নারাজ। শুক্রবার খেলা শেষে মিডিয়ার সাথে কথা বলতে এসে মিরাজ ম্যাচে নিজ দলের অবস্থান নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বলে উঠলেন, 'ম্যাচে সব কিছুই হতে পারে। আমাদের লক্ষ্য আগামীকাল যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শ্রীলঙ্কার দুটি উইকেট নেওয়া। আমাদের আত্মবিশ্বাস আছে, সকালে দ্রুত উইকেট তুলে নেওয়ার পর ওরা যাই রান করুক না কেন, সেটা চেজ করতে পারব।'

এখনই ৩১২ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ। যেহেতু শ্রীলঙ্কার আরও দুই উইকেট আছে, তার মানে টার্গেট সাড়ে তিনশো‘র আশপাশে থাকতে পারে। তারপরও জয়ের আশা! এটা কি আকাশ কুসুম কল্পনা হয়ে গেল না?

পিচের যে অবস্থা আর প্রথম ইনিংসে যেমন যাচ্ছেতাই ব্যাটিং হয়েছে, শেষ দিকে ৩ রানে পাঁচজন আউট হবার মত ঘটনাও ঘটেছে। সেই ভগ্নস্তুপের মাঝে দাঁড়িয়ে জয়ের চিন্তা যে সত্যিই বাড়াবাড়ি!

মিরাজ বোঝাতে চাইলেন, উইকেট আসলে তত খারাপ না। তিনশোর বেশি রানের টার্গেটও ছোঁয়া সম্ভব। তার ভাষায়, 'উইকেট এখনো খেলার অনুপযুক্ত হয়নি। এখনো কোন বল অনেক নিচু হয়নি। তবে উইকেটে টার্ন আছে। ব্যাটসম্যানদের জন্য তাই বলে কঠিন হয়নি। স্বাভাবিক খেলা খেলতে পারলেই ব্যাটসম্যানরা সফল হবে।'

২০ বছর বয়সী মিরাজের হয়ত জানাই নেই বাংলাদেশ টেস্টে আগে কখনো ২০০ রান তাড়া করেও জেতেনি। টাইগারদের সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জেতার রেকর্ডটা এই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই। সেটা গত বছর কলম্বোর পি সারা স্টেডিয়ামে শততম টেস্টে।

যে ম্যাচে টাইগারদের সামনে জয়ের লক্ষ্য ছিল ১৯১। ওপেনার তামিম ইকবালের দায়িত্ব সচেতন ৮২ আর সাব্বির রহমানের লড়িয়ে ৪১ রানের দুটি কার্যকর ইনিংসের ওপর ভর করে শেষ পর্যন্ত ৪ উইকেটের ঐতিহাসিক জয় পায় বাংলাদেশ।

সেখানে এ ম্যাচে টার্গেট এরই মধ্যে তিনশো ছাড়িয়ে গেছে। তারপরও জেতা সম্ভব? মিরাজ শততম টেস্টের রান তাড়া করে জয়ের উপমা টেনে বলেন, 'শ্রীলঙ্কার মাটিতে গিয়ে আমরা একটা টেস্ট জিতেছিলাম। আমার কাছে মনে হয়, শ্রীলঙ্কার মাটিতে দু‘শো রান (১৯০) চেজ করে জিততে পারলে নিজেদের মাটিতে আমরা ৩০০ রান করে জিততে পারব। সেটাই আমাদের আত্মবিশ্বাস যোগাচ্ছে। অবশ্যই আমাদের সিনিয়র খেলোয়াড় যারা আছে, তারা ভালো খেলবে দায়িত্ব নেবে। তারা ভালো খেললে টিম রেজাল্ট পাবে।'

মিরাজ প্রথম ইনিংসের ভুল থেকে শিক্ষা নেবার কথা ভাবছেন। তার ধারণা প্রথম ইনিংসে ১১০ রানে অলআউট ও শেষ দিকে ৩ রানে ৫ উইকেট হারানো দুর্ঘটনা। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এটা আসলে দূর্ঘটনা। ক্রিকেট খেলায় সব কিছুই সম্ভব। জিরো রানেও আউট হতে পারে। অনেক সময় এক দুই রানেও আউট হওয়ার চান্স থাকে। প্রথম ইনিংসের ভুল থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। প্রথমবার আমরা মাত্র ১১০ রানে অলআউট হয়েছি। প্রথম ইনিংসের ব্যর্থতা আমরা ভুলে যেতে চাই। এখন আমাদের লক্ষ্য ওরা যত রান টার্গেট দেবে, সেটা টপকানো।'

কি করলে অত বড় ও কঠিন লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব? মিরাজের ধারণা, এ উইকেটে স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশি মনোযোগ ও মনোসংযোগ দরকার। তাই মুখে এমন কথা, 'এ উইকেটে একটু বেশি মনোযোগ দরকার। একটু এদিক সেদিক হলে বাঁচার কোন চান্স থাকে না। কিন্তু নরমাল উইকেটে অনেক সময় ভুল করেও বেঁচে যাওয়া যায়। আমাদের ব্যাটসম্যানরা পূর্ণ মনোযোগ ধরে রেখে খেলতে পারলে ভালো কিছু আশা করা সম্ভব।'

মিরাজের শেষ সংলাপের পরতে পরতে আত্মবিশ্বাস আর আস্থা, ‘আমাদের ব্যাটসম্যানদের আত্মবিশ্বাস আছে। ব্যাটসম্যানরা সবাই খুব আত্মবিশ্বাসী। মুমিনুল ভাই, তামিম ভাই, মুশফিক ভাইয়ের মধ্যে আত্মবিশ্বাস আছে।'

এআরবি/এমএমআর/আইআই

আরও পড়ুন