কেন দলে বিজয়-মিঠুন, কেন নেই সৌম্য-লিটন?
দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের পাঁচ ক্রিকেটার সৌম্য সরকার, তাসকিন আহমেদ, লিটন দাস, শফিউল ইমলাম ও মুমিনুল হক নেই দেশের মাটিতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া তিন জাতি ক্রিকেটে। তাদের বাইরে রেখেই জিম্বাবুয়ে ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে প্রথম দুই ম্যাচের জন্য ১৬ সদস্যের দল সাজানো হয়েছে। সেই দলে নেই কোনো নতুন মুখও।
তবে ওপেনার এনামুল হক বিজয়, প্রতিষ্ঠিত টপ অর্ডার মোহাম্মদ মিঠুন ও পেস বোলার কাম লেট অর্ডার আবুল হাসান রাজু আবার নতুন করে ফিরেছেন। দল ঘোষণার সংবাদ সম্মেলনে ওই পাঁচজনের বাদ পড়া এবং এনামুল হক বিজয়, মোহাম্মদ মিঠুন আর আবুল হাসান রাজুর ফেরা নিয়েই প্রশ্ন উঠলো।
প্রথমেই প্রশ্ন উঠলো সৌম্য কেন নেই? প্রধান নির্বাচকের জবাব, সৌম্য সব ফরম্যাটেই কিছুদিন ধরে খেলে যাচ্ছে। ওর ট্যালেন্ট নিয়ে কোনো রকম কোন প্রশ্ন নেই। যেহেতু ধারাবাহিকতার মধ্যে নেই, এ জন্য আমরা একটু ব্রেক দিয়েছি। সৌম্য আমাদের পরিকল্পনার মধ্যেই আছে। যেহেতু আমাদের পুলভুক্ত খেলোয়াড় সে।
মানসিকভাবে নিজেকে ফিরে পাওয়ার জন্যই সৌম্যকে ব্রেক দেয়া হয়েছে বলে মনে করেন প্রধান নির্বাচক। তিনি বলেন, ‘সবকিছু মিলিয়েই তাকে একটা ব্রেক দেওয়া চিন্তা-ভাবনা করেছি। মানসিকভাবে নিজেকে ফিরে পাওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক ম্যাচে সৌম্য কিছুটা ব্রেক প্রয়োজন। ধারাবাহিকতা রক্ষা করা খুব কঠিন জিনিস। একবার যদি ব্রেক-ডাউন হয় তাহলে এটা ফিরে পাওয়া খুব কঠিন। ও যথেষ্ট ট্যালেন্ট খেলোয়াড়। বেশ কিছু ভালো ইনিংস দেশের জন্য খেলেছে। আমি আশা করি খুব দ্রুত সে ক্যামব্যাক করতে পারবে। আবার ফর্মে ফিরে আসবে।’
আভাসটা আগেই মিলেছিল যে সৌম্যকে ব্রেক দেয়া হতে পারে। আগে থেকেই বোঝা যাচ্ছিল ঘরের মাঠে তিন জাতি ক্রিকেট খেলা হচ্ছে না সৌম্য সরকারের- টিম ম্যানেজমেন্ট আর নির্বাচকদের কেউ সরাসরি মুখ ফুটে এমন কথা না বললেও কথোপকোথনে আকার ইঙ্গিতে বার-বার বুঝিয়ে দিয়েছেন সৌম্যকে বাইরে রেখেই দল সাজানোর চিন্তা চলছে।
এছাড়া অফ ফর্মের লিটন দাসের দিকেও নির্বাচকদের দৃষ্টি কম ছিল- সেটাও বোঝা যাচ্ছিল। মোট কথা, সৌম্য আর লিটন দাসের বদলে এনামুল হক বিজয় ঢুকে যেতে পারেন, এমন ধারণাও জন্মেছিল। সেটাই হয়েছে। কেন লিটনকে বিবেচনায় আনা হলো না?
তা নিয়ে প্রধান নির্বাচকের ব্যাখ্যায় পরিষ্কার, ওয়ানডেতে লিটনকে খেলানোর চিন্তা তাদের মাথায় নেই। তারা লিটনকে টেস্টে খেলানোর কথা ভাবছেন। তাই তো লিটন প্রসঙ্গে মিনহাজুল আবেদিন নান্নুর ব্যাখ্যা, ‘লিটন দাসকে সব সময় আমরা টেস্ট ম্যাচের জন্য বিবেচনা করেছিলাম। দক্ষিণ আফ্রিকায় টেস্ট সিরিজ ভালো খেলার কারণে আমরা ওকে রেখে দিয়েছিলাম। কারণ এখানে আসা-যাওয়ার ঝামেলা ছিল। সে সঙ্গে কন্ডিশনের সঙ্গে থেকে আরও কিছু শেখার ব্যাপার ছিল- এ জন্য রেখে দিয়েছিলাম। সে সবসময় আমাদের লংগার ভার্সনের চিন্তায় আছে। এই কারণে ওকে ব্রেক দেওয়া হয়েছে।’
সৌম্য-লিটনের বদলে এনামুল হক বিজয়কে নেয়ার একটাই কারণ, ভালো ফর্ম। তার ব্যাটে রান আছে। এ কথা জানিয়ে মিনহাজুল বলেন, এনামুল হক বিজয়ের কথা বলতে পারি। সে যথেষ্ট ভালো খেলেই সুযোগ করে নিয়েছে। দুই বছর ধরেই পারফরম্যান্স করছে। আশা করি সে এখানে ভালো করতে পারবে।’
একই ভাবে মিঠুনের দলভুক্তির মূল কারণও ঘরোয়া ক্রিকেটে ভাল খেলা । তা জানিয়ে প্রধান নির্বাচক বলেন, ‘মিঠুন ঘরোয়া ক্রিকেট খুব ভালো খেলেছে এবার। টিম ম্যানেজম্যান্ট ওর ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। আমাদের ধারণা সুযোগ পেলে ও ভালো খেলবে দেশের জন্য।’
মাঝে হঠাৎ তার গায়ে টেস্ট স্পেশালিস্টের তকমা লেগেছে; কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে হঠাৎ করেই মুমিনুলকে ওয়ানডে দলে নেয়া হয়েছিল। এবার আবার বাদ দেয়া হল। কেনই বা তখন তাকে নেয়া আর এবার আবার কি কারণে বাদ দেয়া? এ নিয়েও প্রশ্ন উঠলো। মিনহাজুল আবেদিনের ব্যাখ্যা, ‘বেশ কিছুদিন ধরেই মুমিনুল আমাদের ওয়ানডে-টি-টোয়েন্টি দলে নেই। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে তামিমের ইনজুরির কারণে মুমিনুলকে আমরা তখন রেখে দিয়েছিলাম। উদ্দেশ্য ছিল হঠাৎ দরকার পড়লে যাতে তাকে ব্যবহার করা যায়।’
এআরবি/আইএইচএস/জেআইএম