সাকিব বুদ্ধিমান, মাশরাফি তো মাশরাফিই : সুজন
দীর্ঘদিনের লালায়িত স্বপ্ন যেন অবশেষে কিছুটা হলেও পূরণ হয়েছে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক এবং লম্বা সময় ধরে ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করা খালেদ মাহমুদ সুজনের। জাতীয় দলের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর হয়েছেন তিনি। নামটা ‘কোচ’ না হলেও আদতে তিনিই এখন দলের সর্বেসর্বা। কোচদেরও প্রধান। তার দেখানো পথেই এগিয়ে যাবে এখন দল। ম্যানেজার হিসেবে কোচিংয়ের পার্টে এতদিন যুক্ত হতে না পারলেও এবার সরাসরি কোচের দায়িত্ব পালন করবেন তিনি।
আসন্ন ত্রিদেশীয় সিরিজ এবং শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হোম সিরিজে দলের কোচিংয়ের মূল দায়িত্বটাই পালন করবেন তিনি। সেই খালেদ মাহমুদ সুজন জাতীয় দলের দায়িত্ব পাওয়ার পর মুখোমুখি হয়েছেন জাগো নিউজের। বিশেষ সংবাদদাতা আরিফুর রহমান বাবুর সঙ্গে দীর্ঘ এই সাক্ষাৎকারের আজ প্রকাশিত হলো দ্বিতীয় পর্ব। এখানে তিনি কথা বলেছেন, সদ্য নেতৃত্বছাড়া মুশফিক, নতুন অধিনাক সাকিব এবং ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফিকে নিয়ে। প্রথম পর্ব পড়ুন এই লিংকে।
জাগো নিউজ : মুশফিকুর রহীম অনেকদিন পর অধিনায়কত্ব ছাড়া খেলবেন, আপনি তা নিয়ে কি ভাবছেন ?
সুজন : আমি মনে করি ‘হি ইজ ভেরি প্রফেশনাল’। সে জানে অধিনায়কত্ব চলে যাওয়া মানে এখন আমিও আর দশটা ক্রিকেটারের মত। কাজেই এখন আমার পারফরমেন্সটা আগের চেয়েও অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়ে বিচার বিবেচনা করা হবে। আমি তাকে চিনি। সে খুবই স্মার্ট। বুদ্ধিমান ছেলে। ভেরি গুড ক্রিকেটার। যে নিজের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন। টিমম্যান হিসেবে সে অবশ্যই সাপোর্ট করবে বলে আমার বিশ্বাস।
এটা বলার অপেক্ষা রাখে না মুশফিক আমাদের দলের অন্যতম সম্পদ। অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান। বিশেষ করে টেস্টে মূল ব্যাটিং স্তম্ভ। আমার বিশেষ নজর তার দিকে থাকবে অবশ্যই। আমি চাইবো তাকে যতটা সম্ভব স্বাভাবিক রেখে তার সেরাটা বের করে আনতে।
ওকে বোঝাবো, তুমি এখন চাপমুক্ত। মাথার ওপরে আর নেতৃত্বের পাহাড় সমান বোঝা নেই। এখন তুমি একদম ফ্রি হয়ে খেলে তোমার সেরাটা উপহার দেয়ার চেষ্টা করো। আর তার নিজেরও নিশ্চয়ই ভাল খেলার, রান করার তাগিদ থাকবে। আমি আশা করি ফ্রি মুশফিক আরও ভাল করবে।
জাগো নিউজ : মাশরাফি, তামিম, সাকিব, মাহমুদউল্লাহ-এদের সাথে বন্ধনটা কেমন? এর মধ্যে সাকিব এখন দুই ফরম্যাটের অধিনায়ক। তার সাথে বন্ধনটা কেমন?
সুজন : মাশরাফির কথা কি বলবো! মাশরাফির তুলনা মাশরাফিই। অনেক ভাল মনের মানুষ। খুবই বড় ক্রিকেটার আর দারুণ অধিনায়ক। নেতৃত্বগুণ প্রচুর। অনেকদিনের পরিচয়। ওঠা বসা। তার সাথে আমার বোঝাপড়াও চমৎকার।
আর সাকিবকে গত দুই বিপিএলে খুব কাছ থেকে দেখেছি। ২০১৬ ও ২০১৭‘র বিপিএলে আমি আর সাকিব এক দলে, একসাথে কাজ করেছি। একসাথে বসে অনেক আলাপ করেছি। লক্ষ্য-পরিকল্পনা এঁটেছি। গেম প্ল্যান তৈরি করেছি। বেশিরভাগ সময়ই দেখা গেছে আমাদের ভাবনা মিলে গেছে। আমরা দুজন এক রকম চিন্তাই করেছি। অনেক ধারনাই মিলে যায় দু’জনের। আবার যখন চিন্তা দু’রকম হয়, তখনো খুব সমস্যা হয় না।
সাকিব খুবই বুদ্ধিমান। সার্ট। নলেজেবল ক্রিকেটার। তার মেধা, যোগ্য এবং বুদ্ধি প্রচুর। পরিবেশ-পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতাও যথেষ্ঠ। আমাকে বেশ সম্মান করে। কখনো কোচের সাথে যদি মতের অমিল হয়, সে মানিয়ে নিতে পারে। সে অনেক হেল্পফুল।
জাগো নিউজ : প্রথম এ্যাসাইনমেন্টে আপনার লক্ষ্য-পরিকল্পনা আর প্রত্যাশা কি?
সুজন : প্রথমত : তিন জাতি টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হতে চাই। আমার বিশ্বাস, আমরা এর জন্য যোগ্য। ওই আসর জেতার পর্যাপ্ত সামর্থ্য আছে আমাদের দলের। তবে জায়গামত সামর্থ্যরে প্রয়োগটা খুব গুরুত্বপর্ণ। চেষ্টা থাকবে যেন ছেলেরা সঠিক সময়ে সঠিক কাজটি করতে পারে। ভাল ও যোগ্য দল হিসেবেই আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে পারি।
আর যদি কোন কারণে সামর্থ্যরে একদম সেরাটা, মানে খুব ভাল ক্রিকেট নাও খেলতে পারি- তাহলেও চাই ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হতে। মানে খারাপ খেলেও যদি চ্যাম্পিয়ন হওয়া যায়, তাহলে খারাপ খেলেও চ্যাম্পিয়ন হতে চাই।
একই সঙ্গে শ্রীলঙ্কার সাথে টেস্ট সিরিজে লক্ষ্য অবশ্যই জয়। আমরা ম্যাচ জেতার জন্যই খেলবো। টার্গেট থাকবে পজিটিভ ও অ্যাগ্রেসিভ ক্রিকেট খেলার। পাঁচদিনের ম্যাচের সব কটা সেশনে যাতে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়, সে চেষ্টাও করবো।
এআরবি/আইএইচএস/এমএস