ট্রিপল সেঞ্চুরিয়ান ক্লাবে রকিবুলের পাশে নাসিরও?
এক সময় জাতীয় দলের অপরিহার্য সদস্য হয়ে উঠেছিলেন। ২০০৮ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত টানা তিন বছর জাতীয় ওয়ানডে দলের প্রায় নিয়মিত সদস্য ছিলেন। কিন্তু ২০১১ সালের ১১ এপ্রিল রাজধানী ঢাকার শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে শেষবার লাল সবুজ জার্সি গায়ে মাঠে নামা। একই বছর নভেম্বরে ঢাকায় ওয়েষ্ট ইন্ডিজের সঙ্গে টেস্ট খেলার পর থেকে আর জাতীয় দলে নেই রকিবুল হাসান।
তবে ঘরের ক্রিকেট খেলছেন নিয়মিত। গত লিগে মোহামেডানের হয়ে বিকেএসপি মাঠে আবাহনীর বিপক্ষে ১৯০ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলা রকিবুলকে এবার বিপিএলে দেখা গেছে। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে দুুটি ম্যাচ খেলেছেন। আর বদলি ফিল্ডার হিসেবে প্রায় দিনই এর ওর জায়গায় ফিল্ডিংও করেছেন।
কাল (শুক্রবার) বিকেল থেকে রকিবুল আবার আলোচনায়। ভাবছেন এ কি কথা? জাতীয় লিগের শেষ রাউন্ডে ট্রিপল সেঞ্চুরির দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে নাসির। এনামুল হক বিজয় করেছেন ডাবল সেঞ্চুরি। তরুণ মিজানুর রহমানের ব্যাট থেকেও এসেছে ডাবল সেঞ্চুরি। সম্ভাবনার সূর্য হয়ে দেখা দেয়া মেধাবী তরুণ নাজমুল হোসেন শান্ত আর এবার বিপিএলে খুলনা টাইটন্সের হয়ে নজর কাড়া আরিফুলও শতরান করেছেন।
কিন্তু রকিবুল তো কিছু করেননি। তাহলে তার প্রসঙ্গ আসছে কেন? প্রশ্ন জাগছে, মেলানো যাচ্ছে না, গোলমেলে ঠেকছে। তাই না? তা একটু ঠেকতেই পারে। কারণ রকিবুল তো খালি চোখে দৃশ্যপটেই নেই। তারপরও তার কথা আসছে, কারণ তিনি হচ্ছেন বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে একমাত্র ট্রিপল সেঞ্চুুরিয়ান।
এদেশের কোন ব্যাটসম্যান যা করতে পারেননি কখনো, রকিবুল তাই করে দেখিয়েছেন। ফার্ষ্ট ক্লাস ক্রিকেটে বাংলাদেশের প্রথম ৩০০+ রানের (৩১৩) ইনিংসটি তার। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে ট্রিপল সেঞ্চুরিয়ান বলতে এতকাল তাকেই বোঝাতো। ২০০৬-২০০৭ মৌসুমে ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে সিলেটের বিপক্ষে বরিশালের হয়ে ট্রিপল সেঞ্চুরিসহ ৩১৩ রানের হার না মানা ইনিংস খেলে এখনো রেকর্ড বুকে নিজের নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখে রেখেছেন রকিবুল হাসান।
কিন্তু তার ঐ একক কৃতিত্বের অবসান ঘটতে পারে এবার। রংপুরের নাসির হোসেন ঐ দূর্লভ প্রায় কৃতিত্বে ভাগ বসানোর সম্ভাবনা জাগিয়েছেন। ট্রিপল সেঞ্চুরিয়ান হয়ে যেতে পারেন নাসিরও। মাঝে অরেক মেধাবি তরুণ মার্শাল আইয়ুবও সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন। খুব বেশি দিন আগের কথা নয়। এই তো ২০১২-২০১৩ মৌসুমে বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ন্যাশনাল লিগ বিসিএলে মধ্যাঞ্চলের হয়ে পূর্বাঞ্চলের বিপক্ষে ট্রিপল সেঞ্চুরির খুব কাছাকাছি গিয়েও পারেননি মার্শাল আইয়ুব। ১১ রানের আক্ষেপে পোরেন পুরনো ঢাকার মার্শাল। ২৮৯ রানে ফিরে গেছেন।
এছাড়া আরেক মেধাবি তরুণ মোসাদ্দেকের সামনেও এসেছিল ট্রিপল সেঞ্চুরির কৃতিত্ব। কিন্তু জাতীয় দলের এ তরুণ মিডল অর্ডারও পারেননি। ২০১৪-২০১৫ মৌসুমে বিকেএসপির মাঠে বরিশালের হয়ে চট্টগ্রামের বিপক্ষে ২৮২ রানে আউট হয়েছেন মোসাদ্দেক। আর এবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বরিশালের বিপক্ষে রংপুরের নাসির অপরাজিত ২৭০ রানে।
এছাড়া ২০১৩-২০১৪ তে বিসিএলে মধ্যাঞ্চলের শামসুর রহমান শুভ বিকেএসপি মাঠে পূর্বাঞ্চলের বিপক্ষে ২৬৭ রানের আরও একটি বড় ইনিংস খেলেছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কেউই কাঙ্খিত ট্রিপল সেঞ্চুরির দেখা পাননি। এমনিতে জাতীয় লিগ তেমন সাড়া ফেলে না। তবে এবারের জাতীয় লিগে রান বন্যা। বর্তমান প্রজন্মের ব্যাটসম্যানদের কয়েকজন খুব ভালো সময় কাটাচ্ছেন। তরুণ মিজানুর রহমান তিনটি সেঞ্চুরি করেছেন পরপর।
তবে সবার চোখ এখন চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে; যে মাঠে ট্রিপল সেঞ্চুরির দোরগোড়ায় দাঁড়ানো নাসির। দেখা যাক রকিবুলের পর দ্বিতীয় ট্রিপল সেঞ্চুরিয়ান হতে পারেন কি না নাসির?
এআরবি/এমআর/এমএস