পর্দা নামল বিপিএল পঞ্চম আসরের
একটিমাত্র শিরোপা। প্রায় ৪০দিন ধরে এই একটি শিরোপার জন্য ৭টি দল খেললো মোট ৪৬টি ম্যাচ। অবশেষে যোগ্য দলের হাতেই উঠলো বিপিএলের পঞ্চম শিরোপা। যদিও শিরোপা হাতে দেখা গেলো সেই পুরনো মুখই। আগের দিন কুমিল্লাকে হারিয়ে যখন রংপুর রাইডার্স ফাইনাল নিশ্চিত করলো, তখনই সবাই জেনে গেলো, নতুন কোনো অধিনায়কের হাতে বিপিএল ট্রফি ওঠার সম্ভাবনা শেষ। কারণ, আগের চারবারের মধ্যে তিনবারই শিরোপা জিতেছেন মাশরাফি। সর্বশেষ জিতেছিলেন সাকিব আল হাসান। শেষ পর্যন্ত ঢাকাকে ৫৭ রানে হারিয়ে চতুর্থবারের মতো মাশরাফি বিন মর্তুজার হাতেই উঠলো বিপিএল পঞ্চম আসরের শিরোপা।
ফাইনালে ঝড় তুললেন ক্রিস গেইল। ৬৯ বলে খেললেন ১৪৬ রানের বিধ্বংসী ইনিংস। রংপুর রাইডার্স করলো ২০৬ রান। ২০১ রানের জুটি গড়েন গেইল-ম্যাককালাম। জবাব দিতে নেমে ১৪৯ রানে শেষ হলো ঢাকার ইনিংস।
তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও উত্তেজনা হলো এবারের বিপিএলে। সিলেট থেকে শুরু হয়ে ঢাকা, এরপর চট্টগ্রাম। সর্বশেষ ঢাকায় ফিরে শেষ হলো বিপিএলের জমজমাট এই আসর। ফাইনাল খেললো টুর্নামেন্টের সেরা দুই দল- ঢাকা ডায়নামাইটস এবং রংপুর রাইডার্স। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে কাগজে-কলমে এই দুই দলকেই সেরা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন সবাই। বলা হয়েছিল, তাদেরই ফাইনাল খেলার সম্ভাবনা বেশি।
কিন্তু টুর্নামেন্ট শুরু হওয়ার পর বোঝা গেলো, রংপুর শুধুই কাগুজে বাঘ। মাঠের লড়াইয়ে তারা অনেক পিছিয়ে। তবুও শেষ পর্যন্ত কোনোমতে শেষ চার নিশ্চিত করে মাশরাফি বিন মর্তুজার দল। শেষ চারে ফাইনালে ওঠার প্লে-অফে এসেই কাগুজে বাঘ পরিণত হলো বনের আসল বাঘে। গেইল, ম্যাককালাম এবং জনসন চার্লস জ্বলে উঠলেন সময়মতো। সুতরাং, টুর্নামেন্ট শুরুর আগের হিসাব-নিকাশকে সত্যি প্রমাণ করেই ফাইনাল খেলল ঢাকা এবং রংপুর।
সিলেট পর্বের শুরুতেই চমক দেখিয়েছিল নাসির হোসেনের সিলেট সিক্সার্স। টানা তিন ম্যাচ জিতে নাসির হোসেনরা জানান দিয়েছিলেন, এবারের টুর্নামেন্টটা হতে যাচ্ছে তাদের। কিন্তু সিলেট যেন হ্যালির ধূমকেতু। একবার আলো দেখিয়ে সেই যে হারালো আর খুঁজেই পাওয়া গেল না। এরই মধ্যে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল তাদের।
ঢাকা ডায়নামাইটসও ঢাকার প্রথম পর্বের শেষ দিকে এবং চিটাগাং গিয়ে কিছুটা খেই হারিয়ে ফেলেছিল। তবে আবার চিটাগাংয়েই ছন্দে ফেরে তারা। ঢাকার সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল তারকার আধিক্য। এত বেশি তারকা যে, টিম ম্যানেজমেন্টকে মধুর সমস্যায় পড়তে হয়েছিল কাকে রেখে কাকে খেলাবে এই সিদ্ধান্ত নিতে। সাঙ্গাকারা, মোহাম্মদ আমিরের মত ক্রিকেটারকে বসিয়ে রাখতে হয় তাদের। কখনও কখনও বসিয়ে রাখতে হয় আফ্রিদিকেও।
সেই ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষেই ফাইনাল খেললো রংপুর রাইডার্স। তার আগে টুর্নামেন্টজুড়ে চার-ছক্কার ফুলঝুড়ি ছোটালেন বিদেশি ব্যাটসম্যানরা। আফ্রিদি, নারিন, জো ড্যানলি, গেইল, ম্যাককালাম কিংবা জনসন চার্লসরা। গেইল তো এক ম্যাচেই ছক্কা হাঁকালেন ১৮টি। সব মিলিয়ে উন্মাদনায় ভরপুর ছিল এবারের বিপিএল।
আইএইচএস/এমএস/এআরএস