টেস্টে বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব
চন্ডিকা হাথুরুসিংহে অধ্যায় শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের ক্রিকেটেও দারুণ পরিবর্তন এসে গেলো। আগেরদিনই শেষ রিপোর্ট বিসিবির হাতে জমা দিয়ে গিয়েছেন হাথুরু। যাওয়ার আগে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের কাছে নিজের পদত্যাগের জন্য বাংলাদেশ দলের সিনিয়র ক্রিকেটারদের ওপর সব দায়ভার চাপিয়ে দিলেন তিনি।
পরদিনই, অথ্যাৎ আজ বিসিবির কার্যনির্বাহী কমিটির প্রথম সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হলো বাংলাদেশ টেস্ট ক্রিকেট দলের অধিনায়ক আর মুশফিকুর রহীম নন। নতুন অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন সাকিব আল হাসান। তার সঙ্গে সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। অথ্যাৎ মুশফিকুর রহীমের সঙ্গে সহকারী অধিনায়কের পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হলো তামিম ইকবালকেও।
কার্যনির্বাহী কমিটির সভা শেষে এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। এ সময় মুশফিককে সরিয়ে দিয়ে সাকিবকে অধিনায়ক করার কারণ জানতে চাইলে, পাপন বলেন- ‘সব সময় তো কারণ বলা যায় না।’ তবে তিনি জানিয়েছেন, সবার সঙ্গে আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। মুশফিকের সঙ্গেও নাকি আলোচনা হয়েছে এ ব্যাপারে।
গত মার্চে শ্রীলঙ্কা সফরেই টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের দায়িত্ব ছেড়েছিলেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। এরপরই সাকিবকে সংক্ষিপ্ততম ভার্সনের জন্য অধিনায়ক নির্বাচন করা হয়। এবার তাকে দেয়া হলো টেস্ট ফরম্যাটের দায়িত্বও। তিন অধিনায়কের অবস্থান থেকে দুই অধিনায়কে নেমে এলো বাংলাদেশ।
দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে টেস্ট সিরিজের সময়ই মুশফিকের অধিনায়কত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। দুই টেস্টেই টস জিতে ফিল্ডিং নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে দারুণ সমালোচিত হন অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম। এর আগেও গত ফেব্রুয়ারিতে ভারত সফরে একমাত্র টেস্টের সময়ও মুশফিকের অধিনায়কত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। একই সঙ্গে তখন কথা উঠেছে মুশফিকের তিন দায়িত্ব নিয়েও। একাধারে অধিনায়ক, উইকেটরক্ষক এবং ব্যাটসম্যান। তিন দায়িত্ব তার ওপর চাপ সৃষ্টি করছে বলে উইকেটকিপিংয়ের দায়িত্ব থেকে তাকে সরিয়ে দেয়ারও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল।
কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে মুশফিকের নেতৃত্ব নিয়েই সবচেয়ে বেশি প্রশ্ন উঠেছে। টস ছাড়াও বেশ কিছু বিতর্কিত মন্তব্য করে তিনি অনেকের রোশানলে পড়ে যান। তখনই আলোচনায় এসেছিল, টেস্ট নেতৃত্ব থেকে তাকে সরিয়ে দেয়া হতে পারে। যদিও সিরিজ চলার মাঝপথে সেই আলোচনা বিসিবি থেকেই থামিয়ে দেয়া হয়েছিল।
শেষ পর্যন্ত মুশফিককে সরিয়েই দেয়া হলো। ২০১১ সালে সাকিব আল হাসানকে সরিয়ে দিয়েই মুশফিকুর রহীমকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। এরপর বাংলাদেশকে মোট ৩৪ টেস্টে নেতৃত্ব দেন মুশফিক। তার আমলেই বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি টেস্ট জয় পায়। বাংলাদেশের জেতা ১০ টেস্টের মধ্যে ৭টিতেই জয় আসে মুশফিকের নেতৃত্বে। যার মধ্যে রয়েছে ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার মত দেশের বিপক্ষে দুটি গুরুত্বপূর্ণ জয়। এছাড়া শ্রীলঙ্কার মাটিতে ঐতিহাসিক শততম টেস্টেও তার নেতৃত্বে জিতেছিল বাংলাদেশ।
আইএইচএস/আরআইপি