আগে থেকেই সব ঠিক করা থাকে : পিয়া
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) জমকালো আয়োজনকে আরও রঙিন করে তোলেন এর সুন্দরী উপস্থাপিকারা। যারা দর্শক-খেলোয়াড়দের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দাপিয়ে বেড়ান মাঠ থেকে গ্যালারি। গ্যালারি থেকে মাঠ। তাদের নামই হয়ে গেছে, ‘বিপিএল সুন্দরী।’ আইপিএল, সিপিএল, বিগ ব্যাশ থেকে শুরু করে প্রতিটি ফ্রাঞ্চাইজি লিগেই এ ‘সুন্দরী’দের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।
ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটে একসময় হয়তো চিয়ারলিডারদের আকর্ষণ থাকতো সবচেয়ে বেশি। তবে বিপিএলে চিয়ারলিডারের ধারণা বাতিল করার কারণে, উপস্থাপিকারাই হয়ে উঠেছেন আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু। সম্প্রচার কর্তৃপক্ষই তাদের নিয়োগ দেয়। এবারের বিপিএলেও প্রথম থেকেই ছিলেন দেশি-বিদেশি উপস্থাপিকারা।
প্রতিবারের ধারাবাহিকতায় এবারও বিপিএলের উপস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছেন বাংলাদেশি মডেল জান্নাতুল ফেরদৌস পিয়া (পিয়া জান্নাতুল)। তার সঙ্গে বিপিএলের শুরু থেকে বেশ কিছুদিন ছিলেন রাশিয়ান সুন্দরী কাজান। তবে কোনো এক অজ্ঞাত কারণে কাজান চলে গেছেন নিজ দেশে। এখন পিয়াই উপস্থাপনার দিকটা সামলাচ্ছেন। যদিও বেশ কিছুদিন ধরে পিয়ার উপস্থাপনার কিছু অংশ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে তুমুল সমালোচনার ঝড়।
বিশেষ করে, এক ক্রিকেটারকে তার করা দুটি প্রশ্ন ব্যাপক সমালোচিত হয়েছে। এমনকি সংবাদ মাধ্যমের বিদ্রূপেরও শিকার হয়েছেন তিনি। তবে জাগো নিউজের সঙ্গে একান্ত আলাপে পিয়া জান্নাতুল জানিয়েছেন, তাকে যেভাবে বলা হয়েছিল, সেভাবেই তিনি প্রশ্ন দুটি করেছিলেন সেই ক্রিকেটারকে।
সেই প্রশ্ন দুটি সম্পর্কে বলতে গিয়ে পিয়া জাগো নিউজকে বলেন, ‘এখন হয়তো আমি নিজে থেকে কিছু প্রশ্ন করছি। কারণ এখন প্রশ্নগুলো খেলার স্কোর কিংবা পয়েন্ট টেবিল সম্পর্কিত হয়ে গেছে। আগে এটা ছিল না। তাই আমাকে প্রথম দিকে বলে দেয়া হতো, কাকে কি প্রশ্ন করতে হবে। বলে দেয়া সেই প্রশ্নগুলোই আমি করতাম।’
শুধু প্রশ্নই নয়, পিয়া কোন দিন কী পোশাক পরবেন বা কী কী করবেন তাও একজন পেশাদার উপস্থাপিকা হিসেবে নির্দেশ মেনেই তাকে চলতে হয়। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমার হাতে কিন্তু কিছুই থাকে না। আমাকে বলে দেয়া হয় কাকে কি প্রশ্ন করবো। এমনকি আমি কী পোশাক পরবো তাও ঠিক করে দেয়া হয়।’
বিপিএলের সিলেট পর্বে স্বাভাবিকভাবেই সাতরঙ্গা চা নিয়ে প্রশ্ন করার বিষয়টি চলে আসে। পিয়ার করা সেই প্রশ্ন নিয়ে তুমুল হাসি-তামাশা হলো সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেই প্রশ্নের ব্যাখ্যা তিনি দিয়েছেন জাগো নিউজকে। পিয়া বলেন, ‘আপনি যদি সিলেটে আসেন, তাহলে আপনাকেও শুনতে হবে সাতরঙা চা খেয়েছেন কি না? খুবই কমন একটা প্রশ্ন। আমি যদি কোন বিদেশি ক্রিকেটারকে প্রশ্ন করতে যেতাম, তাহলে কিন্তু জিজ্ঞাসা করতাম, বাংলাদেশের কোন খাবারটা তোমার ভালো লেগেছে? এটাই তো স্বাভাবিক।’
এবারের আসরে পিয়ার সবচেয়ে আলোচিত ছিল খুলনা টাইটান্সের মুক্তার আলীর বিয়ে নিয়ে করা প্রশ্ন। অথচ সেই প্রশ্নটি করার আগে মুক্তার আলীর নাকি অনুমতিও নিয়ে নিয়েছিলেন তিনি। সেই প্রশ্নটি সম্পর্কে পিয়া বলেন, ‘আমাকে বলা হয়েছিল যে, মুক্তার আলীকে প্রশ্ন করতে, সে বিয়ে করেছে কি না? তারপর আমি মুক্তার আলীকে গিয়ে আগে জিজ্ঞাসা করে নিয়েছিলাম, এ প্রশ্ন করতে বলা হয়েছে, আপনার কি আপত্তি আছে এ নিয়ে? মুক্তার আলী জানান, তার কোন আপত্তি নেই। তখনই আমি প্রশ্নটা করেছি।’
আলোচনা-সমালোচনা যাই হোক না কেন পিয়া মনে করেন প্রশ্নগুলো করা যৌক্তিক ছিল। সে ব্যাখ্যাও দিলেন তিনি। পিয়া বলেন, ‘আমি মনে করি, আমাকে যে প্রশ্নগুলো করতে বলা হয়েছে সবগুলোই যুক্তিযুক্ত ছিল। কারণ ক্রিকেট নিয়ে কথা বলার জন্য ধারাভাষ্যকাররা আছেন। অনেক ক্রিকেট বিশ্লেষক, সাবেক ক্রিকেটাররাও আছেন। তো কর্তৃপক্ষ চাচ্ছিল, ক্রিকেটের পাশাপাশি যেন বাইরের কিছু বিষয় থাকে। একটু মজার প্রশ্নও যেন করি।’
সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচকদের বিদ্রূপ বেশ উপভোগ করছেন বিপিএল সুন্দরী পিয়া। তার কথাতেই বোঝা গেল বিষয়টা। তিনি বলেন, ‘আই এম এ গুড লিসেনার। আমি বেশি শুনতে পছন্দ করি। যতখানি বলি তার চেয়েও বেশি। আমি যে জায়গায় আছি, সে জায়গায় আমি কিন্তু একা। ১৬ কোটি মানুষের আমি বাদে বাকি সবাই ঠিক আমার বিপক্ষে, যদি এভাবেও ধরে কথাটা বলি। এই ১৬ কোটি মানুষের কিন্তু আলাদা আলাদা মত থাকবে। ১৬ কোটি মানুষ যখন আমাকে নিয়ে কথা বলবে, তখন এটা আসলেই কিন্তু ভালো একটা ব্যাপার!’
হাসতে হাসতে এ কথার সঙ্গে পিয়া যোগ করলেন, ‘পৃথিবীর কোটি কোটি বিষয় বাদ দিয়ে মানুষ যখন আমাকে নিয়ে কথা বলে, তখন সত্যিই ভীষণ ভালো লাগে।’
তবে এসব কিছু মাথায় নিচ্ছে না পিয়া। তিনি পুরো মনোযোগটা ঢেলে দিচ্ছেন বিপিএলে। উপভোগও করছেন। একই সঙ্গে বিপিএলে ভালো লাগার দিকটাও বললেন। ভালো লাগার কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘যখন চার-ছক্কা মারে ব্যাটসম্যানরা কিংবা বোলাররা উইকেট পায় আর তখন দর্শকরা চিৎকার করে ওঠে- তখন খুব ভালো লাগে। এটা আমি সবচেয়ে বেশি উপভোগ করি।’
এমএএন/আইএইচএস/আরআইপি