গেইল ফ্লপ, ফ্লপ রংপুর
আগের দুই ম্যাচেই হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন ক্রিস গেইল। সেই গেইলের মারমুখি ব্যাটিং দেখার জন্যই চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের গ্যালারি আজ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ঢাকার দর্শকরা গেইল শো দেখলেও চট্টগ্রামের দর্শকরা হলেন বঞ্চিত। প্রথম ম্যাচেই স্থানীয় দর্শকদের হতাশ করলেন তিনি। ৯ বলে ২ বাউন্ডারি আর ১ ছক্কায় ১৬ রান করলেন। এরপরই দর্শকদের অতৃপ্ত রেখে আবু জায়েদ রাহীর বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেলেন তিনি।
১৫৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামার পর গেইল-ম্যাককালাম জুটির ওপরই ভরসা ছিল রংপুর রাইডার্স সমর্থকদের। দু’জনের ব্যাট থেকে এলো মাত্র ১৮ রান (গেইল ১৬, ম্যাককালাম ২)। তবুও রবি বোপারা, আর নাহিদুল ইসলাম মিলে রীতিমত ঝড় তুলেছিলেন। দু’জন মিলে গড়েন ১০০ রানের জুটি। তবুও সফল হলো না মাশরাফির রংপুর রাইডার্স। হারতে হলো ৯ রানের ব্যবধানে।
১৫৯ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে নাহিদ-বোপারার বিশাল জুটিতে জয়ের পথে থাকলেও শেষ পর্যন্ত রংপুর ২০ ওভার শেষে সংগ্রহ করতে পেরেছে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৪৯ রান। ৪৪ বলে ৫৯ রান করেছিলেন রবি বোপারা এবং ৪৩ বলে ৫৮ রান করেছিলেন নাহিদুল ইসলাম।
মূলতঃ চট্টগ্রামের দর্শক মুখিয়ে ছিলো গেইল আর ম্যাককালামের ব্যাটিং তান্ডব দেখার জন্য। দু’জনেই হতাশ করলেন স্থানীয় দর্শকদের। শুরুতেই ঘূর্ণি জাদু দেখান গত বিপিএলের আবিস্কার আফিফ হোসেন ধ্রুব। ব্রেন্ডন ম্যাককালামকে শুরুতেই ফিরিয়ে দিয়ে রংপুরকে ধাক্কা দেন এই অফ স্পিনার। আফিফকে ছক্কা মারতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ দেন ম্যাককালাম।
গেইল দুটি বাউন্ডারি এবং ১টি ছক্কা মেরে মারমুখি ভুমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন। কিন্তু আবু জায়েদ রাহির একটি আউটসুইং গেইলের ব্যাটে চুমু দিয়ে গিয়ে জমা পড়ে উইকেটরক্ষকের গ্লাভসে। এ দু’জনের পর দ্রুতই ফিরে যান মোহাম্মদ মিথুন। যদিও তিনি হয়েছিলেন রানআউট। এরপর আবারও আফিফ হোসেন ধ্রুবর আঘাত। ফজলে মাহমুদকে তিনি সাজঘরে ফেরান ৬ রানে।
৪৫ রানে ৪ উইকেট চলে যাওয়ার পরই অসাধারণ একটি জুটি গড়েন নাহিদুল ইসলাম আর রবি বোপারা। ৪৫ থেকে এ দু’জন দলের রান নিয়ে যান ১৪৫-এ। যদিও বল ব্যায় হয়েছিল বেশ। নাহিদুল যখন আউট হন, তখন চলছিল শেষ ওভারের খেলা। আর চারটি মাত্র বল ছিল হাতে। জয়ের দারুণ আশা সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত আর তার দেখা মাশরাফির দল। জয়ের পথে দলকে নিয়ে আসলেও উল্টো শেষ ওভারে আউটই হয়ে যান নাহিদুল ইসলাম ও রবি বোপারা।
আউট হওয়া আগে অবশ্য নাহিদুল ইসলাম ৪৩ বলে খেলেন ৫৮ রানের ইনিংস। যাতে ছিল ৭টি বাউন্ডারির মার। শেষ বলে আউট হওয়া রবি বোপারা করেন ৪৪ বলে ৫৯ রান। ইনিংসটি সাজান তিনি একটি ছক্কা ও ৪টি বাউন্ডারির সাহায্যে।
খুলনার হয়ে আফিফ হোসেন ধ্রুব সর্বোচ্চ ২টি উইকেট নিয়েছেন। আবু জায়েদ রাহি ও জুনায়েদ খান একটি করে উইকেট নেন। এর আগে খুলনা টাইটান্সের অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহর ৩৬ বলে ৫৯ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংসে ভর করে চট্টগ্রামে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ৮ উইকেটে ১৫৮ রানের পুঁজি পায় খুলনা টাইটান্স।
রংপুরের বোলিংয়ের সামনে খুলনার আর কোনো ব্যাটসম্যান সেভাবে স্বাচ্ছন্দ্যে খেলতে পারেননি। ২৪ রানে ২ উইকেট হারানো দলকে বলতে গেলে একাই টেনে নিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। বাকিরা টুকটাক অবদান রেখেছেন, কিন্তু কেউই ২০ রানের বেশি করতে পারেননি। নাজমুল হোসেন শান্ত খেলেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২০ রানের ইনিংস। ১৬ করে রান করেন নিকোলাস পুরান এবং আরিফুল হক। রিলে রুশো এবং কার্লোস ব্র্যাথওয়েট করেন ১১টি করে রান।
এমএএন/এমএমআর/আইএইচএস/এমএস